নর্থসাউথ শিক্ষার্থীর কুরআন অবমাননার প্রতিবাদ বিভিন্ন সংগঠনের

Printed Edition

নিজস্ব প্রতিবেদক

নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অপূর্ব পালের কুরআন অবমাননার ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অবিলম্বে তার দৃষ্টান্তমূূলক বিচারের দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন ইসলামী সংগঠন।

হেফাজতে ইসলাম : হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা সাজেদুর রহমান এক বিবৃতিতে ওই শিক্ষার্থীর কুরআন অবমাননার দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত না করলে লংমার্চের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তারা বলেন, নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অপূর্ব পালের কুরআন অবমাননার জঘন্য দৃশ্য দেশের কোটি কোটি ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনতার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটিয়েছে। ওই শিক্ষার্থী নিজেই তার ফেসবুক প্রোফাইলে কুরআন অবমাননার ভিডিওচিত্র প্রচার করে আরো বড় অপরাধ করেছে। এতে বোঝা যায়, এ কাজ সে সজ্ঞানে করেছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিতের দাবি করছি। এর আগে ক্লাসে হাদিস উল্লেখ করায় নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয় এক শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করেছিল। অপূর্ব পালের কুরআন অবমাননার ঘটনায় এই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বক্তব্যও আসতে হবে।

খেলাফত আন্দোলন : সংগঠনের আমির মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী কুরআনকে লাথি মেরে অবমাননা করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার ষড়যন্ত্র চলছে। এ ঘটনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে পারে না। অবিলম্বে তাকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন এর পিছনে কোনো গোষ্ঠীর ইন্ধন রয়েছে কি না তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম : সভাপতি শাইখুল হাদিস মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক ও মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বিবৃতিতে বলেন, পবিত্র কুরআনের অবমাননা করে অপূর্ব পাল যে ন্যক্কারজনক, ঘৃণিত ও স্পর্শকাতর অপরাধ করেছে, তা শুধু মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত নয়, বরং এটি দেশব্যাপী শান্তি ও সম্প্রীতি বিনষ্ট করার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এ ধরনের কর্মকাণ্ড দেশের সামাজিক স্থিতিশীলতা ও ধর্মীয় সহনশীলতাকে চরমভাবে ব্যাহত করবে।

ইসলামী ঐক্যজোট : তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল কাদির ও মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী এক বিবৃতিতে বলেন, অপূর্ব পালের ধৃষ্টতা স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে- এ ধরনের ন্যক্কারজনক অপকর্মরোধে এখনই কঠোর আইন প্রণয়ন জরুরি। কেননা, পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের উদ্দেশ্যে উসকানি দেয়া হচ্ছে এবং একটি মহল এই ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। তারা বলেন, এ ধরনের উসকানি ও ষড়যন্ত্র রোধ করতে হলে শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর থাকাই যথেষ্ট নয়, ষড়যন্ত্রকারী ও উসকানিদাতাদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। এ জন্য দরকার কঠোর আইন।

তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত : আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়ত বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পবিত্র কুরআন অবমাননার ঘটনায় গভীর দুঃখ ও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, এই ভয়াবহ ঘটনাটি শুধু মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতই করেনি, বরং বাংলাদেশের সাংবিধানিক মূল্যবোধ, সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় বিশ্বাস, সামাজিক সম্প্রীতি ও নৈতিক ভিত্তির ওপরও সরাসরি আঘাত হেনেছে।

ছাত্রশিবির : পবিত্র কুরআন শরিফ অবমাননার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, পবিত্র কুরআন মহান আল্লাহ তায়ালা মানবজাতির হেদায়াতের জন্য নাজিল করেছেন। মুসলমান এ পবিত্র গ্রন্থের অবমাননা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারে না। এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা মুসলিম উম্মাহর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের পাশাপাশি মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। আমরা এমন ধৃষ্টতাপূর্ণ কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে দ্রুততম সময়ে আইনানুগ প্রক্রিয়ায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাই।