গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সুন্দর পিচাই জানিয়েছেন, গুগলে এখন পর্যন্ত পাঁচজন নোবেলজয়ী রয়েছেন। মাত্র দুই বছরে গুগলের গবেষকেরা তিনটি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পাওয়া মিশেল এইচ ডেভোরেট ও জন এম মার্টিনিস। মিশেল ডেভোরে বর্তমানে গুগলের কোয়ান্টাম এআই ল্যাবের হার্ডওয়্যার বিভাগের প্রধান বিজ্ঞানী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আর জন মার্টিনিস বহু বছর ধরে ওই ল্যাবের হার্ডওয়্যার টিমের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৮০ এর দশকে তাদের গবেষণার ফলাফলই আজকের কোয়ান্টাম প্রযুক্তির ভিত্তি স্থাপন করেছে। সেই গবেষণার ফলেই ভবিষ্যতের ক্রুটিমুক্ত (এরর-কারেকটেড) কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরির পথ সৃষ্টি হয়েছে।
২০২৫ সালে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কারের জন্য যৌথভাবে মনোনীত হয়েছেন ব্রিটেনের জন ক্লার্ক, ফ্রান্সের মিশেল এইচ ডেভোরেট এবং আমেরিকার জন এম মার্টিনিস। বৈদ্যুতিক সার্কিটে ম্যাক্রোস্কোপিক কোয়ান্টাম মেকানিক্যাল টানেলিং এবং শক্তির পরিমাণ নির্ধারণের আবিষ্কারের জন্য তিন বিজ্ঞানীকে এ বারের পদার্থবিদ্যায় নোবেলের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। তাদের আবিষ্কার কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যার এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।
কোয়ান্টাম মেকানিক্সের অদ্ভুত এবং সাধারণত ক্ষুদ্রাতীত কণার আচরণগুলো কীভাবে আমাদের পরিচিত বড় আকারের মানব-সৃষ্ট বস্তু বা অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যেতে পারে সেটি এ বছরের পদার্থে নোবেল পুরস্কারের বিষয় ছিল।
পুরস্কারপ্রাপ্ত এ তিন বিজ্ঞানী তাদের ধারাবাহিক পরীক্ষার মাধ্যমে দেখিয়েছেন, যে এই ঘটনাটি সম্ভব। তারা এমন একটি অতিপরিবাহী বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা তৈরি করেন, যা একটি অবস্থা থেকে সরাসরি অন্য অবস্থায় ‘টানেল’ করে যেতে পারে। বিষয়টি দেখে মনে হয় যেন একটি জিনিস দেওয়ালের মধ্যে দিয়ে ভেদ করে চলে গেছে। তারা আরও দেখিয়েছেন যে এই ব্যবস্থাটি নির্দিষ্ট মাত্রার বা সুনির্দিষ্ট ‘ডোজ’-এ শক্তি শোষণ করে এবং বিকিরণ করে। যা কোয়ান্টাম মেকানিক্সের ভবিষ্যদ্বাণীর সাথে পুরোপুরি মিলে যায়।
গত দুই বছরে গুগলের সাথে যুক্ত পাঁচজন বিজ্ঞানী নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। গুগল ডিপমাইন্ডের প্রধান নির্বাহী ডেমিস হাসাবিস এবং জন জাম্পার ২০২৪ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার পান প্রোটিনের গঠন পূর্বাভাস প্রযুক্তি (প্রোটিন স্ট্রাকচার প্রেডিকশন) উদ্ভাবনের জন্য। এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পান মিশেল এইচ ডেভোরেট ও জন এম মার্টিনিস। অন্যদিকে জিওফ্রে হিন্টন ২০২৪ সালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান। তবে এআই প্রযুক্তির অন্যতম পথিকৃৎ জিওফ্রে হিন্টন ২০২৩ সালে স্বেচ্ছায় গুগলের চাকরি ছেড়ে দেন।



