বাজিতপুরে বিএনপির দু’গ্রুপের পাল্টাপাল্টি মামলা

মনোনয়ন ঘিরে উত্তাপ

আলি জামশেদ, নিকলী (কিশোরগঞ্জ)
Printed Edition

কিশোরগঞ্জ-৫ (নিকলী-বাজিতপুর) আসনে বিএনপির মনোনয়নকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে এলাকায় চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। পাল্টাপাল্টি মামলায় জ্ঞাত ও অজ্ঞাতনামা মিলিয়ে ৩০৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এসব মামলায় কেউ গ্রেফতার হয়নি। যদিও ২২ নভেম্বর যৌথ অভিযানে অস্ত্রসহ ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এলাকায় গ্রেফতার আতঙ্কে সাধারণ মানুষের মধ্যেও উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।

ঘটনার কেন্দ্রবিন্দু বাজিতপুর ডাকবাংলো মাঠ। গত ২২ নভেম্বর বিকেলে যুবদল নেতাদের একটি পূর্বনির্ধারিত সভাকে ঘিরে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। তবে সৈয়দ এহসানুল হুদার দাবি তার সমর্থকদের ওপর পূর্বপরিকল্পিত হামলা করা হয়েছে। বাজিতপুর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেনের দায়ের করা মামলায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ মুজিবুর রহমান ইকবালের ছেলে, উপজেলা যুববিষয়ক সম্পাদক শেখ রাফিদ রহমানসহ ৪৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ মামলায় অজ্ঞাতনামা রাখা হয়েছে আরো ১৫০ জনকে। অভিযোগে দাবি করা হয়, সভা বাধাগ্রস্ত করতে পরিকল্পিত হামলা চালিয়ে তাকে মারধর ও গুলিবিদ্ধ করা হয়।

এর পাল্টা জবাবে ২৯ নভেম্বর বিএনপি সমর্থক মাখন মিয়া আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এতে জোট সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা সমর্থিত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মারধর ও নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগ আনা হয়। এ মামলায় জেলা যুবদলের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট শাহ আলমসহ ৭৪ জনকে আসামি করা হয়েছে, অজ্ঞাতনামা রয়েছেন আরো ৩৫ জন। সাবেক জেলা বিএনপি নেতা বদরুল আলম শিপুকেও দুই মামলায় আসামি করা হয়েছে। এ সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ চারজনসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ভাঙচুর, বাড়িতে তল্লাশি ও হুমকির ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পরিস্থিতি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এ আসনে ধানের শীষের মনোনয়ন নিয়ে মূল দ্বন্দ্ব দুই প্রভাবশালী প্রার্থীর মধ্যে সীমাবদ্ধ। একজন ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা। অন্যজন উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নেতা শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল। দলীয় কোন্দল বাড়তে থাকায় নির্বাচনী মাঠ ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। স্থানীয়দের মতে, মনোনয়ন বিলম্বের কারণেই পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাচ্ছে। বিএনপির সাধারণ সমর্থকরাও সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে শান্তিপূর্ণ সমাধানের দাবি জানিয়েছেন। বাজিতপুর থানার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তৃপ্তি মণ্ডল জানান, মামলাগুলো নিয়মিত তদন্তের আওতায় রয়েছে। এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। তবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।