ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ডধারীদের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রির জন্য দুই কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল এবং এক কোটি ১০ লাখ লিটার রাইস ব্রান তেল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রতি লিটার রাইস ব্রান তেলের মূল্য ধরা হয়েছে ১৬১ টাকা। আর প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ধরা হয়েছে ১৬৫ টাকা ৮৫ পয়সা; অর্থাৎ সয়াবিন তেলের তুলনায় লিটারে ৪ টাকা ৮৫ পয়সা কমে রাইস ব্রান তেল কিনতে পারছে সরকার।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এ তেল কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। সয়াবিন তেল কিনতে মোট ৩৬৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা এবং রাইস ব্রান তেল কিনতে মোট ১৭৭ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয় হয়।
এগুলোসহ দুই কার্গো এলএনজি, সার ও চাল আমদানিসহ আটটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে দুই হাজার ৩৭৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।
বৈঠক শেষে জানানো হয়, বৈঠকে আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেট থেকে দুই (চলতি বছরের ১৯ ও ২১তম) কার্গো এলএনজি আমদানির দু’টি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৯তম কার্গোটি সরবরাহ করবে যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স টোটাল এনার্জিস গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড’। বাংলাদেশী মুদ্রায় এতে ব্যয় হবে ৫৬৭ কোটি ৮৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
দ্বিতীয় ২১তম কার্গোটি সরবরাহ করবে সিঙ্গাপুরভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স গানভর সিঙ্গাপুর পিটিই লিমিটেড’। এতে ব্যয় হবে ৫৬৯ কোটি ২৯ লাখ ২৮ হাজার টাকা।
বৈঠকে কৃষি খাতে ব্যবহারের জন্য রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় দু’টি পৃথক প্রস্তাবে দুই ক্যাটাগরির ৭০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন এ সার আমদানি করবে। এর মধ্যে প্রতি মেট্রিক টন ৬২২.৫০ ডলার দরে মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রপস থেকে ৫ম লটের আওতায় ৪০ হাজার মেট্রিকটন ডিএপি সার আমদানিতে বাংলাদেশী মুদ্রায় ব্যয় হবে ৩০৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।
অপর প্রস্তাবে একই প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি মেট্রিকটন ৪৪৫ ডলার দরে ৫ম লটের আওতায় ৩০ হাজার মেট্রিকটন টিএসপি সার আমদানিতে বাংলাদেশী মুদ্রায় ব্যয় হবে ১৬২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।
বৈঠকে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে প্যাকেজ-১২ এর আওতায় ৫০ হাজার মেট্রিকটন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। খাদ্য অধিদফতর এ চাল আমদানি করবে। প্রতি মেট্রিকটন ৩৯৪.৭৭ ডলার দরে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ‘পট্টভি এগ্রো ফুডস প্রাইভেট লিমিটেড বিও’ থেকে এ চাল আমদানিতে ব্যয় হবে ২৪০ কোটি ৮০ লাখ ৯৭ হাজার টাকা।
এ ছাড়া বৈঠকে ‘যশোর রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল প্রকল্প’-এর ভূমি উন্নয়ন কাজের একটি প্যাকেজের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে এ কাজটি করবে ‘ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড’। এতে ব্যয় হবে ১৫৪ কোটি তিন লাখ টাকা।
বৈঠক শেষে জানানো হয়, ক্রয় কমিটির বৈঠকের আগে অনুষ্ঠিত ‘অর্থনেতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি’র বৈঠকে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে বিটিসিএলের জমিতে একটি সবুজ ডেটা সেন্টার স্থাপনের প্রস্তাবটি পিপিপির আওতায় বাস্তবায়নের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।