গত বছরের তুলনায় ২০২৬ সালের নতুন বই প্রস্তুতে বেশি সময় পেলেও মাধ্যমিকের বই এখনো প্রস্তুত করতে পারেনি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। গতকাল বুধবার পর্যন্ত পাওয়া হিসেব মতে অষ্টম শ্রেণীর চার কোটি দুই লাখ বইয়ের মধ্যে এখনো দশ শতাংশ বইও প্রস্তুত করতে পারেনি তারা। সূত্র মতে এখন পর্যন্ত মাত্র ৯.৮৬ শতাংশ বই সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান শুধু অষ্টম শ্রেণী নয় এ বছর মাধ্যমিকের অন্যান্য শ্রেণীর বই প্রস্তুতেও ধীরগতি রয়েছে। ২০২৬ সালের নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরুর আর পাঁচ দিন বাকি থাকলেও মাধ্যমিক স্তরের প্রায় ৬৭ শতাংশ পাঠ্যবই এখনো সরবরাহ করতে পারেনি এনসিটিবি। এতে নতুন বছরের শুরুতে মাধ্যমিকের সব শিক্ষার্থীর হাতে সব পাঠ্যবই পৌঁছাবে কি না সে নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে প্রাথমিকের শতভাগ বই সরবরাহ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বুধবার পর্যন্ত এনসিটিবির বিতরণ নিয়ন্ত্রক শাখা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, আগামী বছর বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রাথমিক স্তরে মোট আট কোটি ৫৯ লাখের বেশি এবং মাধ্যমিক স্তরে ২১ কোটি ৪৩ লাখের বেশি কপি পাঠ্যবই ছাপানো হচ্ছে। বিদায়ী বছরের তুলনায় এবার পাঠ্যবইয়ের সংখ্যা কিছুটা কম। ফলে নতুন বছরের শুরুতেই প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে সব বই পৌঁছানো নিশ্চিত হয়েছে। তবে মাধ্যমিকের বই নিয়ে এখনো রয়েছে চরম অনিশ্চয়তা।
সূত্র আরো জানায়, মাধ্যমিক স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যবই সরবরাহের ক্ষেত্রে শ্রেণীভেদে চিত্রটা ভিন্ন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নবম শ্রেণীর বই সরবরাহে অগ্রগতি তুলনামূলকভাবে ভালো থাকলেও সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণীতে গতি বেশ ধীর। এনসিটিবির বিতরণ শাখা সূত্র জানায়, নবম শ্রেণীতে মোট পাঁচ কোটি ৭০ লাখ ৬৮ হাজার ২৮টি বইয়ের মধ্যে এ পর্যন্ত সরবরাহ করা হয়েছে ৬৮.১৪ শতাংশ। ষষ্ঠ শ্রেণীতে বরাদ্দকৃত চার কোটি ৪৩ লাখ ১৭ হাজার ৫০৯টি বইয়ের মধ্যে ৬৬.৩৫ শতাংশ বই পৌঁছালেও সপ্তম শ্রেণীতে সরবরাহের হার মাত্র ৩১.০৩ শতাংশ। সবচেয়ে পিছিয়ে আছে অষ্টম শ্রেণী; এখানে চার কোটি দুই লাখের বেশি বইয়ের বিপরীতে এখন পর্যন্ত মাত্র ৯.৮৬ শতাংশ বই সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে।
ইবতেদায়ি ও কারিগরি অংশের সরবরাহেও ব্যবধান রয়েছে। ইবতেদায়ি স্তরের জন্য বরাদ্দকৃত তিন কোটি ১১ লাখ ১৯ হাজার ৩৪৭টি বইয়ের মধ্যে সরবরাহ হয়েছে ৯৩.২৭ শতাংশ। তবে মুদ্রণ ও বাঁধাইয়ের কাজ প্রায় ৯৪.৬৯ শতাংশের কাছাকাছি শেষ হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিতরণ নিয়ন্ত্রণ শাখার কর্মকর্তা মোহাম্মদ মতিউর রহমান পাঠান নয়া দিগন্তকে জানান, মাধ্যমিকের শতভাগ বই পয়লা জানুয়ারির আগে স্কুলে স্কুলে পৌঁছানো সম্ভব না হলেও সব শ্রেণীর জন্য জরুরি কিছু বই (বাংলা ইংরেজি গণিত) অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আর সব বই জানুয়ারির মধ্যেই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেয়ার জন্য প্রেস মালিকদের তাগিদ দেয়া হচ্ছে। সবার সহযোগিতা পেলে এ কাজটি সহজ হবে।


