লো জিয়ান পরিচালিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘আন্ডার দ্য ওয়েভ অফ লিটল ড্রাগন’ সম্প্রতি ৬৯তম বিএফআই লন্ডন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ‘ডিসকভারিং হোম’ সঙ্কলনে প্রদর্শিত হয়েছে। ১৪ মিনিটের এই সিনেমাটি ম্যান্ডারিন, ইংরেজি এবং ওয়েলশ এই তিন ভাষায় নির্মিত এবং এটি অভিবাসী মা ও তার ওয়েলশে বেড়ে ওঠা মেয়ের মধ্যকার সাংস্কৃতিক ও ভাষার সঙ্ঘাত তুলে ধরেছে।
চলচ্চিত্রটির কেন্দ্রে রয়েছে তরুণী ফেইফেই (অভিনয় : কেক্সিন ওয়াং)। ওয়েলশ-এর একটি মাছ ধরার গ্রামে বেড়ে ওঠা ফেইফেই হলো দ্বিতীয় প্রজন্মের অভিবাসী। সে বাড়িতে চীনা ভাষা বললেও তার প্রথম ভাষা ইংরেজি এবং সে সম্পূর্ণভাবে ওয়েলশ সমাজে মিশে গেছে। অন্যদিকে, তার মা হলেন প্রথম প্রজন্মের অভিবাসী, যিনি একটি চীনা রেস্তোরাঁ চালান।
চলচ্চিত্রের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে ‘ফেইফেই তার মায়ের বলা লোককাহিনী প্রত্যাখ্যান করে, যতক্ষণ না সে একটি জাদুকরী অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়।’ ফেইফেই-এর এই অবিশ্বাস জন্ম নেয় দুই সংস্কৃতির ফারাক থেকে। সে এমন এক সংস্কৃতিতে বড় হচ্ছে, যা তার মায়ের প্রথম হাতের সংস্কৃতি নয়। পরিচালক লো জিয়ান ইউকেতে স্থানান্তরের পর নিজের একাকিত্ব এবং ওয়েলশের সবুজে চীনা সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি দেখেই এই চলচ্চিত্র তৈরির প্রেরণা পান। তিনি ওয়েলশের দেওয়ালে থাকা লাল ড্রাগনের মূর্তি দেখে ঠাট্টা করে তার প্রেমিককে বলতেন যে এটি চীনা ড্রাগন, দুই সংস্কৃতির এই মিল ও অমিলই গল্পের জন্ম দিয়েছে। সিনেমাতে মাছ এবং ড্রাগনের একটি প্রতীকী ভূমিকা রয়েছে। চীনা লোককাহিনী অনুযায়ী, যে মাছ যথেষ্ট দ্রুত সাঁতার কাটে ও উঁচুতে লাফায়, সে-ই ড্রাগনে পরিণত হয়। এটি হলো আরো ভালো জীবনের জন্য সংগ্রাম করার একটি উপদেশমূলক কাহিনী। ফেইফেই-এর মা এই গল্পগুলো মেয়েকে বললেও, পরিচালক জিয়ান ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, মা নিজেও এসব কাহিনীতে বিশ্বাসী নন; বরং এটি সংস্কৃতিকে জিইয়ে রাখার একটি চেষ্টা মাত্র। পরিচালক কাস্টিং প্রক্রিয়ার পরই স্ক্রিপ্টে বড় পরিবর্তন আনেন। ফেইফেই-এর চরিত্রে এমন একজনকে কাস্ট করা হয়, যে বাস্তবেও রেস্তোরাঁ চালানো একটি চীনা পরিবারের সদস্য, যার মাতৃভাষা ইংরেজি। পরিচালক জানান, ‘কাস্টিং আমাকে অনেক আইডিয়া দিয়েছে। ফেইফেই-এর মতো দ্বিতীয় প্রজন্মের অভিবাসীকে কাস্ট করার পর আমি স্ক্রিপ্ট পরিবর্তন করে মা-মেয়ের নতুন গতিশীলতা ম্যাপ করি।’
‘আন্ডার দ্য ওয়েভ অফ লিটল ড্রাগন’ ছবিটি ফিউচার টেকস উদ্যোগের অর্থায়নে তৈরি হয়েছে এবং এর নির্মাণে বিএফআই ও ফিল্ম-৪ সহায়তা করেছে। এটি এখন বিভিন্ন চ্যানেল ও প্ল্যাটফর্মে স্ট্রিমিংয়ের জন্য উপলব্ধ হবে।