বৈষম্যহীন দেশ গড়ার প্রত্যয়

জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদন

এবার এমন এক সময়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন হচ্ছে, যখন চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানের পথ ধরে তরুণ প্রজন্ম বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখছে।

আমান উল্লাহ পাটওয়ারী, সাভার (ঢাকা)
Printed Edition
স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল
স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল |নয়া দিগন্ত

স্বাধীনতার ৫৪তম বার্ষিকীতে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে গতকাল বুধবার সর্বস্তরের মানুষ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন ও সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়া স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা এবং সব স্তরের মানুষ ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।

এবার এমন এক সময়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন হচ্ছে, যখন চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানের পথ ধরে তরুণ প্রজন্ম বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখছে।

প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন এর পরেই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সকাল ৬টা ১১ মিনিটে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে জাতির বীর সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কয়েক মিনিট নীরবতা পালন করেন।

পরে প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে রাখা প্রদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। এ সময় বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়। সে সময় প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাগণ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, মুক্তিযোদ্ধা, বিদেশী কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তিন বাহিনীর প্রধান এবং বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হয় স্মৃতিসৌধের ফটক।

পতাকা আর ফুল হাতে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ সৌধ প্রাঙ্গণে জমায়েত হতে থাকেন। ব্যানারসহ ফুল দিতে আসেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা।

এ সময় ঢাকা জেলা বিএনপি, রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হলগুলো, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, কর্মচারী ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম কাউন্সিল, সাভার এনজিও সমন্বয় পরিষদ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ রেলওয়ে, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, গণফোরাম, গণ অধিকার পরিষদ (জিওপি), বাংলা একাডেমি, জনতা ব্যাংক পিএলসি, অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, গণ বিশ্ববিদ্যালয়, বাসদ, জাতীয় পার্টি, নাগরিক ঐক্য, প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, কর্মসংস্থান ব্যাংক, গণসংহতি আন্দোলন, গণগ্রন্থাগার অধিদফতর, বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় শাহবাগ ঢাকা, ভিসি-জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক পিএলসি, জনতার দল, বাংলাদেশের উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়-ঢাকাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক দলের ব্যানারে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমরা সবাই এক হয়ে যাবো : মির্জা আব্বাস

মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবসে সকাল সোয়া ৮টার দিকে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, তিনি এ সময় বলেন অনৈক্য বলে কিছু নেই। স্বার্থের সঙ্ঘাত আছে, প্রতিটি দলের নিজস্ব আদর্শিক জায়গা আছে, যার যার একটা মতাদর্শ আছে। যার যার মতাদর্শ থেকে কথা বলে। এটা আমি অনৈক্য বলব না। এমন সময় যদি কখনো আসে, জাতীয় বৃহত্তর ঐক্যের প্রয়োজন পড়বে, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যের প্রয়োজন পড়বে, তখন কিন্তু আমরা সবাই এক হয়ে যাবো। এখানে কোনো ভুল নেই। সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথাগুলো বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। মির্জা আব্বাস বলেন, এখন দলীয় আদর্শের ভিত্তিতে হয়তো আলাদা কথা বলছি, হতে পারে। কিন্তু যখন প্রয়োজন হবে, তখন বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এক হয়ে যাবে। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও আমরা প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ মাঝে হারিয়ে ফেলেছিলাম। ৫ আগস্টের পরে আবার নতুন করে পেয়েছি। বাংলাদেশে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে কিছু নেই মন্তব্য করে মির্জা আব্বাস বলেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে নতুন করে স্বৈরাচারকে তাড়িয়ে স্বাধীনতার নতুন স্বাদ পেয়েছি। অনেকে বলেন দ্বিতীয় স্বাধীনতা। আসলে আজকের স্বাধীনতা দিবস প্রমাণ করে, দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে বাংলাদেশে কিছু নেই। যারা বলেন, তারা আজকের স্বাধীনতা দিবসকে খাটো করতে চান, একাত্তরের স্বাধীনতায় তাদের কোনো ভূমিকা ছিল না। সুতরাং এই দিনটাকে তারা খাটো করতে চান। আমি বলব, তারা যেন এখানেই বিরত থাকেন। এই স্বাধীনতা দিবসকে যেন সম্মান জানান এবং সম্মান করেন। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো সংশয় আছে কি না এমন এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা আব্বাস বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। আমরা সেখানেই বিশ্বাস রাখতে চাই। এখানে আমরা বিশ্বাসের পরিবর্তন করতে চাই না। নির্বাচন নিয়ে কোনো চ্যালেঞ্জ আছে কি না, এমন এক প্রশ্নে মির্জা আব্বাস বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলই প্রতিপক্ষ। নির্বাচন হবে না- এমনটা বিশ্বাস করতে চাই না। ডিসেম্বরে নির্বাচন না হলে বিএনপির পদক্ষেপ কী হবে- এমন প্রশ্নে মির্জা আব্বাস বলেন, নির্বাচন হবে না-এমনটা আমরা বিশ্বাস করি না। তেমন কিছু হলে সময় এলে দেখা যাবে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আমানউল্লাহ আমান, ডাক্তার দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিনসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও সাভার আশুলিয়ার বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে জাতীয় ম্মৃতিসৌধে ফুলের শুভেচ্ছা জানান এনসিপি নেতৃবৃন্দ। এ সময় দলের সদস্যসচিব আক্তার হোসেন, দলীয় নেত্রী শারমিন শামান্তাসহ দলীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

একাত্তরের স্বাধীনতাকে রক্ষা করেছে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান : আসিফ মাহমুদ

অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, একাত্তর দেশকে জন্ম দিয়েছে, আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি; রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা। আমরা মনে করি, চব্বিশ সেই স্বাধীনতাকে রক্ষা করেছে। গতকাল বুধবার সকালে মহান স্বাধীনতা দিবসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর গণমাধ্যমে এসব কথা বলেন আসিফ মাহমুদ। আসিফ মাহমুদ আরো বলেন- বিগত ১৬ বছরে স্বাধীনতার যে কনসেপ্ট, সেটাকে নষ্ট করে দিয়ে গেছে। আমরা মনে করি, দেশের প্রত্যেক নাগরিক যতক্ষণ না মনে করবে সে স্বাধীন, তার বাকস্বাধীনতা আছে, তার ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন আছে, ততক্ষণ পর্যন্ত ভূখণ্ড স্বাধীন হয়ে কোনো লাভ নেই। আমরা মনে করি, চব্বিশ সেই স্বাধীনতাকে রক্ষা করেছে। আসিফ মাহমুদ আরো বলেন, চব্বিশে আবারো একটি রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একাত্তরে অর্জিত স্বাধীনতাকে আমরা রক্ষা করার যে লড়াই করেছি, তার অন্যতম ধাপ হচ্ছে চব্বিশ। এই স্বাধীনতা সামনের দিনগুলোতেও বাংলাদেশে থাকবে। আর কখনোই একটি স্বাধীন ভূখণ্ডে এ দেশের মানুষ পরাধীন বোধ করবে না।

বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু করেছি-জাবি ভিসি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন- বৈষম্যহীন একটা বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু করেছি। যুদ্ধ করে আমাদের যে লক্ষ্যে পৌঁছানোর কথা আমরা কিন্তু সেখানে পৌঁছাতে পারিনি। ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আমাদের যেন আর নিজেদের সংশোধন করতে না হয়। অভিভাবকের এই ব্যর্থতার জায়গাটি অনুভব করতে হবে। ‘আমরা নিজেদের মধ্যে আবার বিভাজন তৈরি করছি। এটা ছাত্র-জনতার রক্তের অঙ্গীকার রক্ষা করার ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে চ্যালেঞ্জের চেয়ে ‘সুযোগ’ বেশি দেখছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ। শ্রদ্ধা জানাতে এসে তিনি বলেন, আমরা একটা নতুন সুযোগ দেখছি। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময়ের আশা আকাক্সক্ষা পূরণের সময় এসেছে। বহুদিন পর নতুন একটা সময় এসেছে, আমাদের এটা দরকার ছিল।

ইউজিসির শ্রদ্ধা : মহান স্বাধীনতা দিবসে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। গতকাল জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এ সময় ইউজিসি সচিব ড. মো: ফখরুল ইসলাম, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের পরিচালক ও ইউজিসি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো: ওমর ফারুখ, রিসার্চ গ্র্যান্টস অ্যান্ড অ্যাওয়ার্ড ডিভিশনের অতিরিক্ত পরিচালক শাহীন সিরাজ, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক ও ইউজিসি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ড. মো: মহিব্বুল আহসান, অর্থ, হিসাব ও বাজেট বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো: মোস্তাফিজার রহমান, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো: সুলতান মাহমুদ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক সুরাইয়া ফারহানা, ইউজিসি কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো: আনোয়ার হোসেনসহ ইউজিসি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন ও কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ এবং ইউজিসির কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রামে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন

চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৫ উদযাপিত হয়েছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে। এ উপলক্ষে গতকাল ভোরে পাহাড়তলীর উত্তর কাট্টলীর ডিসি পার্কের দক্ষিণ পাশে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে জাতির বীর সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা: শাহাদাত হোসেন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ ও এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে বর্ণাঢ্য কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় কাট্টলীর স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মো: জিয়াউদ্দীন, সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ, রেঞ্জ ডিআইজি আহসান হাবীব পলাশ, জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সানতুসহ সরকারি-বেসরকারি দফতরের কর্মকর্তারা, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

এ দিকে গতকাল সকাল ৯টায় নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে জাতীয়সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন ও কপোত উড়িয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের উদ্বোধন শেষে প্যারেড পরিদর্শন করেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মো: জিয়াউদ্দীন। এ সময় সিএমপি ও জেলা পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, কারারক্ষী, ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স, বিএনসিসি, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যুব রেড ক্রিসেন্ট ও সরকারি শিশু পরিবার কর্তৃক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। কুচকাওয়াজের সালাম গ্রহণ করেন বিভাগীয় কমিশনার।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ, রেঞ্জ ডিআইজি আহসান হাবীব পলাশ, জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সানতু।

কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে জামায়াত নেতৃবৃন্দ : এ দিকে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন আয়োজিত দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরী নেতৃবৃন্দ। গতকাল সকালে নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমির সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নগর জামায়াতের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ।

খুলনায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন

খুলনা ব্যুরো জানায়, খুলনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। গতকাল প্রত্যুষে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনে ৩১বার তোপধ্বনির মধ্যদিয়ে দিবসের সূচনা করা হয়। এর আগে নগরীর গল্লামারী শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি জেলা ইউনিট, বিভাগীয় কমিশনার মো: ফিরোজ সরকার, পুলিশের রেঞ্জ ডিআইজি মো: রেজাউল হক, কেএমপির পুলিশ কমিশনার মো: জুলফিকার আলী হায়দার, কেসিসির প্রশাসক, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, জেলা পুলিশ সুপার, জেলা পরিষদের প্রশাসক কেডিএ, খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি, খুলনা প্রেস ক্লাব, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়ন বিভিন্ন সরকারি দফতর এবং বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শ্রদ্ধা জানায়।

খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে দুপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার মো: ফিরোজ সরকার।

রংপুরে বর্নাঢ্য আয়োজন

রংপুর ব্যুরো জানায়, মহান স্বাধীনতা দিবসের প্রত্যুষে ভোর ৬টায় ৩১ বার তোপধ্বনীর পর শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান রংপুর বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম, রেঞ্জ ডিআইজি মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, মহানগর পুলিশ কমিশনার মো: মজিদ আলী, ডিসি মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল, এসপি আবু সাইমসহ জেলা ও বিভাগীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ। ফুলেল শ্রদ্ধা জানান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। এ ছাড়াও রংপুর প্রেস ক্লাবের পক্ষে প্রশাসক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ময়নুল হকসহ সংবাদিকরা এবং বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক এবং পেশাজীবী সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা জানায় রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক কমিটি, জাসদ, বাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন।