টিটিসিতে আরবি ভাষার প্রশিক্ষণ কোর্স চালু হচ্ছে

রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে নিয়মিত মনিটরিংয়ের নির্দেশ বিএমইটি ডিজির

মনির হোসেন
Printed Edition

বিদেশগামী কর্মীদের রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে প্রতারণা ও হয়রানির শিকার হওয়ার ঘটনা বাড়ছে। এসব অনিয়ম রোধে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর কার্যক্রম নিয়মিত মনিটরিং করার নির্দেশ দিয়েছেন জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক সালেহ আহমদ মোজাফফর।

গত জুন মাসের মাসিক সমন্বয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ নির্দেশ দেন। সভাটি অনুষ্ঠিত হয় বিএমইটির সম্মেলন কক্ষে, যেখানে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভা সূত্রে জানা গেছে, বিএমইটির কর্মসংস্থান শাখায় ইতোমধ্যে শত শত প্রতারিত বিদেশগামী কর্মীর লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতিদিন শুনানি চলছে। কিছু অভিযোগের নিষ্পত্তি হলেও অনেক মামলাই এখনো অনিষ্পন্ন রয়েছে। অনিষ্পন্ন অভিযোগগুলো যাচাই-বাছাই করে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে।

সভায় অভিযোগ সেলকে নির্দেশ দেয়া হয়, প্রাপ্ত অভিযোগগুলো যাচাই করে বৈধ অভিযোগের তালিকা প্রস্তুত করতে হবে এবং ক্যাটাগরি অনুযায়ী বিভাজন করে তা দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নিতে হবে।

আরবি ও জাপানি ভাষার প্রশিক্ষণ চালু হচ্ছে

সভায় প্রশিক্ষণসংক্রান্ত বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো- সব টিটিসিতে আরবি ভাষার প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করা। এ লক্ষ্যে একটি আরবি ভাষা ম্যানুয়েল তৈরি করে প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। একই সাথে জাপানি ভাষার এন-৪ লেভেলে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বিএমইটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ), পরিচালক ও উপপরিচালক মেহবুব আলমকে এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

প্রতারণার নতুন ধরন : রাশিয়া ও ফেসবুক চক্র

সম্প্রতি রাশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর নামে ফেসবুককেন্দ্রিক একটি ভয়াবহ প্রতারক চক্র গড়ে উঠেছে। তারা রাশিয়ায় বাংলাদেশের শ্রম কাউন্সেলরের নাম ব্যবহার করে ভিসার ফটোকপি তৈরি করে, তা বিক্রির চেষ্টা করছে। তবে বাংলাদেশ দূতাবাস বিষয়টি জেনে এসব ভিসাকে জাল ঘোষণা করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠিয়েছে।

প্রবাসীদের দুর্দশা : প্রতিদিন ফিরছেন খালি হাতে

সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে প্রবাসী শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত প্রতারণা ও শোষণের শিকার হচ্ছেন। পুলিশের ভয়ে অনেকে পালিয়ে কাজ করছেন, আবার অনেকে ধরা পড়ে কারাগারে বন্দী। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা জানান, প্রতিদিনই কোনো না কোনো ফ্লাইটে সৌদি কারাগার থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে অবৈধ শ্রমিকদের।

এদের অধিকাংশই রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশে গিয়েছিলেন এবং তারা দেশে ফিরে এজেন্সির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলেছেন। শুধু সৌদি নয়, মালয়েশিয়া, কাতার, কুয়েতসহ অন্যান্য শ্রমবান্ধব দেশেও একই ধরনের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

বিএমইটির মহাপরিচালক এর প্রেক্ষিতে প্রতিটি মাসিক সমন্বয় সভায় কর্মকর্তাদের উদ্দেশে নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন যে, রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর কার্যক্রম নিয়মিতভাবে মনিটরিং করতে হবে এবং প্রয়োজন হলে আলাদা মনিটরিং টিম গঠন করে কাজের অগ্রগতি সভায় উপস্থাপন করতে হবে।