সাক্ষাৎকার : আ ন ম শামসুল ইসলাম

অভিন্ন প্ল্যাটফর্মে এলে ইসলামী দলগুলোর সামনে অপার সম্ভাবনা

ডাকসু নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের বিপুল বিজয়কে তরুণ প্রজন্মের নতুন ভাবনার বহিঃপ্রকাশ বলেও মনে করছেন একসময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা আ ন ম শামসুল ইসলাম।

আরফাত বিপ্লব, চট্টগ্রাম ব‍্যুরো

Location :

Chattogram City
Printed Edition
আ ন ম শামসুল ইসলাম
আ ন ম শামসুল ইসলাম

জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, ছেটোখাটো মতপার্থক্য এড়িয়ে ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্মে আসতে পারলে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় ইসলামী দলগুলোর সামনে অপার সম্ভাবনা অপেক্ষা করছে। দীর্ঘ ৫৪ বছরের গতানুগতিক শাসন, দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচার, নৈরাজ্য, স্বৈরশাসন ইত্যাদি নানা অপকর্মে দেশের মানুষ ত্যক্তবিরক্ত। জনগণ নতুনত্ব চায়। নীতিবান নেতা চায়। সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে ইনসাফভিত্তিক শাসন চায় মানুষ। এসব ক্ষেত্রে সাবলীল সমাধান রয়েছে ইসলামে। ইসলামী অনুশাসন পরীক্ষিত ও প্রমাণিত শাসনব্যবস্থা। একটি কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করা সম্ভব।

তিনি নয়া দিগন্তের সাথে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন। সম্প্রতি ডাকসু নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের বিপুল বিজয়কে তরুণ প্রজন্মের নতুন ভাবনার বহিঃপ্রকাশ বলেও মনে করছেন একসময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা আ ন ম শামসুল ইসলাম। জামায়াতের নায়েবে আমিরের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি তিনি। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার বারদোনা গ্রামে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে (লোহাগাড়া-সাতকানিয়া) আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক এ কেন্দ্রীয় সভাপতি। স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ে এ আসনে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে রেকর্ড গড়েন তিনি। আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ^বিদ্যালয় চট্টগ্রামের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বেও রয়েছেন তিনি। তার কার্যালয়ে বসে একান্তে কথা হয় নয়া দিগন্তের সাথে।

নয়া দিগন্ত : মাওলানা, আমাদেরকে সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন এবং ১৯৮৯ সালে শিবির প্যানেলের ভিপিপ্রার্থী ছিলেন। সম্প্রতি ডাকসু নির্বাচনে শিবির সমর্থিত প্যানেল বিপুল বিজয় লাভ করেছে। বিষয়টি আপনি কিভাবে দেখছেন?

শামসুল ইসলাম : ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের বিজয়ে আমি অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত। এই ফলাফল প্রমাণ করে যে, দেশের ছাত্রসমাজ সত্যিকারের নৈতিকতাসম্পন্ন নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রেখেছে। এটি একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক, যা শিবিরের দীর্ঘদিনের ত্যাগ, আদর্শিক সংগ্রাম ও শৃঙ্খলাবদ্ধ কর্মকাণ্ডের ফসল। এই বিজয় প্রমাণ করে, অভ্যুত্থানপরবর্তী ছাত্রসমাজ বিভ্রান্তির রাজনীতি নয়, নীতিনিষ্ঠ ও আদর্শিক নেতৃত্ব চায়। আমি নবনির্বাচিতদের অভিনন্দন জানাই এবং আশা করি তারা ছাত্রসমাজের ন্যায্য দাবি ও অধিকার আদায়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন। একই সাথে আমি আহ্বান জানাই সব পক্ষের প্রতি, যেন তারা এই গণরায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকেন এবং একটি সুস্থ, গঠনমূলক ছাত্ররাজনীতির পথে চলার পরিবেশ সৃষ্টি করেন।

নয়া দিগন্ত : আমরা নির্বাচন ও ইসলামী দলগুলোর ঐক্যপ্রক্রিয়া প্রসঙ্গে যেতে চাই। আপনি জানেন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ইসলামী দলগুলোর ঐক্য নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী?

শামসুল ইসলাম : ইসলামী দলগুলোর মধ্যে ঐক্য এখন সময়ের দাবি। আমরা যদি কুরআন-সুন্নাহর আলোকে চিন্তা করি, তাহলে দেখতে পাই, উম্মাহর বিভক্তি কোনোভাবেই কাম্য নয়। বিশেষ করে একটি ইসলামী সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের মধ্যে পারস্পরিক সহমর্মিতা, সহযোগিতা ও কৌশলগত ঐক্য থাকা অত্যন্ত জরুরি। নির্বাচনের প্রাক্কালে এই ঐক্য আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, কারণ এটি একটি আদর্শিক লড়াই।

নয়া দিগন্ত : এ ঐক্য কি শুধু নির্বাচনী সমঝোতার মধ্যে সীমাবদ্ধ, নাকি এটি দীর্ঘমেয়াদি কোনো পরিকল্পনার অংশ?

শামসুল ইসলাম : আমার দৃষ্টিতে ইসলামী দলগুলোর ঐক্য শুধু নির্বাচনী জোট নয়, এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি আদর্শিক ও সাংগঠনিক ঐক্যের প্রক্রিয়া হওয়া উচিত। যদি আমরা কেবল নির্বাচনমুখী ঐক্যের কথা বলি, তাহলে তা সাময়িক ও অস্থায়ী হয়ে দাঁড়ায়। আমরা চাই, ইসলামী শক্তিগুলো এমন একটি প্ল্যাটফর্মে ঐক্যবদ্ধ হোক যেখানে পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, আস্থা ও শূন্য সহ্যশক্তির বাইরে গঠনমূলক সমালোচনা থাকবে।

নয়া দিগন্ত : কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, ইসলামী দলগুলোর মধ্যে বিভক্তি এবং একে অপরকে অবজ্ঞার প্রবণতা রয়েছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব কিভাবে?

শামসুল ইসলাম : প্রথমত, আমাদের নিজেদের আত্মসমালোচনার সাহস থাকতে হবে। দলে দলে বিভক্ত হয়ে আমরা উম্মাহর প্রকৃত শক্তি ক্ষয় করছি। দ্বিতীয়ত, নেতৃত্বের মধ্যে বড়ত্ববোধ পরিহার করে খোদাভীরুতা ও উম্মাহর বৃহত্তর স্বার্থে এগিয়ে আসতে হবে। তৃতীয়ত, ইতোমধ্যে দেশের ইসলামী দলগুলোর মধ্যে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। আরো পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যেখানে সব দলের প্রতিনিধি অংশ নেবে এবং সম্মানজনক সমঝোতায় পৌঁছাতে পারবে।

নয়া দিগন্ত : আগামী নির্বাচনে ইসলামী দলগুলোর ভূমিকা আপনি কিভাবে প্রত্যাশা করেন?

শামসুল ইসলাম : আমরা চাই, ইসলামী দলগুলো জনগণের কাছে একটি বিকল্প ধারার রাজনীতি উপস্থাপন করুক। যেখানে আদর্শ থাকবে, নৈতিকতা থাকবে, আর থাকবে জনসেবার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি। ইসলামী দলগুলো যদি সত্যিকার অর্থে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামে এবং নীতিভিত্তিক রাজনীতি করে, তাহলে জনগণের আস্থা অর্জন সম্ভব। আমাদের সময় এসেছে ভ্রাতৃঘাতী প্রতিযোগিতা পরিহার করে উম্মাহর বৃহত্তর স্বার্থে এক কাতারে দাঁড়ানোর।

নয়া দিগন্ত : আপনি কি কোনো নির্দিষ্ট ঐক্যপ্রচেষ্টার সাথে যুক্ত আছেন বা এমন কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন?

শামসুল ইসলাম : আমি ব্যক্তিগতভাবে এবং আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন ইসলামী দল ও ব্যক্তিত্বদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। আমরা চাই, একটি ন্যূনতম ঐকমত্য গড়ে উঠুক, যেটি ইসলামী রাজনীতির সম্মান পুনরুদ্ধার করবে। এই প্রক্রিয়াটি সহজ নয়, তবে সম্ভব। আন্তরিকতা ও আল্লাহর ওপর ভরসা থাকলে আমরা এগিয়ে যেতে পারব ইনশা আল্লাহ। আমরা যদি সত্যিই ইসলামী আদর্শ বাস্তবায়ন করতে চাই, তবে নিজেদের ভেতরের দেয়াল ভেঙে ঐক্যের পথে হাঁটতেই হবে। এটি শুধু রাজনৈতিক প্রয়োজন নয়, এটি ঈমানের দাবি।

নয়া দিগন্ত : মাওলানা, এবার আমরা একটু রোহিঙ্গা ইস্যুতে যেতে চাই। আপনি জানেন রোহিঙ্গা সঙ্কট এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলমান। এই সঙ্কটের বর্তমান অবস্থা আপনি কিভাবে দেখছেন?

শামসুল ইসলাম : রোহিঙ্গা সঙ্কট আজ শুধু একটি মানবিক বিপর্যয় নয়, বরং এটি আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য-সবকিছুর সঙ্কট রয়েছে। আমরা মনে করি, এ সঙ্কটের একটি স্থায়ী ও মর্যাদাপূর্ণ সমাধান এখন সময়ের দাবি।

নয়া দিগন্ত : বাংলাদেশের ভেতরে রোহিঙ্গাদের অবস্থান এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে আপনারা কী চিন্তা করেন?

শামসুল ইসলাম : আমরা মনে করি, রোহিঙ্গারা আমাদের দেশে অতিথি হিসেবে আশ্রয় নিয়েছিল মানবিক কারণে। তবে এ আশ্রয় চিরস্থায়ী হতে পারে না। আমাদের জাতীয় স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে হবে। এটা শুধু বাংলাদেশের দায়িত্ব নয়, বিশ্ববাসীর দায়িত্বও বটে।

নয়া দিগন্ত : সরকার রোহিঙ্গা ইস্যুতে কেমনভাবে কাজ করছে বলে আপনি মনে করেন?

শামসুল ইসলাম : ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। গত সপ্তাহে ‘স্টেকহোল্ডারস ডায়ালগ : টেকঅ্যাওয়ে টু দ্য হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য রোহিঙ্গা সিচুয়েশন’ শীর্ষক সংলাপে আমাদের দলের প্রতিনিধি হিসেবে সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার অংশ নিয়েছেন। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টা একজন আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব। আশা করছি, তিনি ও তার সরকার এই সঙ্কট সমাধানে বিশেষ উদ্যোগ নেবে।

নয়া দিগন্ত : রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে আপনি কী ধরনের উদ্যোগকে সবচেয়ে কার্যকর মনে করেন?

শামসুল ইসলাম : প্রথমত, আন্তর্জাতিক চাপ জোরালো করতে হবে মিয়ানমারের ওপর। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশকে শক্তিশালী কূটনৈতিক নীতিমালা গ্রহণ করতে হবে, যা দীর্ঘমেয়াদে জাতিসঙ্ঘ, ওআইসি ও আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সাথে সমন্বয় সাধন করে। তৃতীয়ত, রোহিঙ্গা শিবিরে উগ্রবাদ বা অপরাধ যেন না বাড়ে, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সচেতন ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে কাজ করতে হবে।

নয়া দিগন্ত : এবার আমরা একটু পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে কিছু আলাপ করতে চাই। আপনি দীর্ঘদিন চট্টগ্রামে রাজনীতি করেছেন। ছাত্রাবস্থায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের জেলা ও কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমির ছিলেন। চট্টগ্রাম অঞ্চল পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। আপনি জানেন যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম দীর্ঘদিন ধরেই একটি সঙ্কটপূর্ণ এলাকা হিসেবে পরিচিত। আপনি বিষয়টি কিভাবে দেখছেন?

শামসুল ইসলাম : দেখুন, পার্বত্য চট্টগ্রাম আমাদের জাতীয় ঐক্য ও সংহতির একটি সংবেদনশীল ক্ষেত্র। এই অঞ্চলের সমস্যা কেবল একটি নৃতাত্ত্বিক বা ভৌগোলিক সমস্যা নয়, এটি একটি রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সমস্যা। দীর্ঘদিনের অবহেলা, বৈষম্য ও অদূরদর্শী নীতির ফলে এই সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। আমরা মনে করি, পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের ন্যায্য অধিকার, নিরাপত্তা এবং মর্যাদা নিশ্চিত করেই এর সমাধান সম্ভব।

নয়া দিগন্ত : জামায়াতে ইসলামী এই ইস্যুতে কী ধরনের ভূমিকা রাখতে চায়?

শামসুল ইসলাম : আমরা বরাবরই বলে আসছি, এই সমস্যা সমাধানে ন্যায়ভিত্তিক ও সংবেদনশীল দৃষ্টিভঙ্গি দরকার। ইসলাম সব জাতি ও গোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলে। পার্বত্য অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও বাঙালি উভয় জনগোষ্ঠীর প্রতি সুবিচার করতে হবে। আমরা চাই, সব সম্প্রদায় শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করুক এবং সরকার এমন একটি সমাধান দিক যা কোনো পক্ষকে বঞ্চিত না করে।

নয়া দিগন্ত : পার্বত্য শান্তিচুক্তি নিয়ে আপনার মন্তব্য কী?

শামসুল ইসলাম : শান্তিচুক্তি একটি পদক্ষেপ ছিল, কিন্তু তা পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হয়নি। অনেক পক্ষই এই চুক্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ মনে করে, বিশেষত যেভাবে কিছু গোষ্ঠীকে প্রাধান্য দিয়ে অন্যদের অবহেলা করা হয়েছে। আমরা চাই, একটি ইনক্লুসিভ (সর্বজনগ্রাহী) আলোচনা হোক যেখানে সকল পক্ষ, আদিবাসী, বাঙালি, রাজনৈতিক দল, সুশীলসমাজ অংশগ্রহণ করবে। শান্তিচুক্তি যদি সবার উপকার না করে, তবে সেটি টেকসই হবে না।

নয়া দিগন্ত : আপনার দল ভবিষ্যতে পার্বত্য চট্টগ্রাম ইস্যুতে কী ধরনের নীতি গ্রহণ করতে চায়?

শামসুল ইসলাম : আমরা এমন একটি নীতি অনুসরণ করব যার ভিত্তি ইসলামের ন্যায়বিচারমূলক মূল্যবোধের ওপর প্রতিষ্ঠিত। আমরা চাই পার্বত্য চট্টগ্রাম একটি শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ, ও বৈচিত্র্যপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে গড়ে উঠুক। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, উন্নয়ন ও মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সব জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ গড়ে তুলতে আমরা ভূমিকা রাখতে চাই।

নয়া দিগন্ত : পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে শেষ কথা হিসেবে আপনি কী বার্তা দিতে চান?

শামসুল ইসলাম : পার্বত্য চট্টগ্রাম আমাদেরই অংশ। এখানকার মানুষও আমাদের ভাইবোন। আসুন, দল-মত নির্বিশেষে আমরা সবাই মিলে একটি টেকসই, ন্যায়সঙ্গত ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজি। দ্বন্দ্ব নয়, সংলাপই হোক আমাদের পথ।