বসুন্ধরা গ্রুপ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে এক ম্যাচেই তিন লালকার্ড। সর্বশেষ বসুন্ধরা কিংস ও ঢাকা আবাহনীর ম্যাচে রেফারি ভূবন মোহন তরফদারকে তিনবার পকেটে হাত দিতে হয় লালকার্ডের জন্য। তিনি আবাহনীর শাহীন আহমেদ ও বসুন্ধরা কিংসের সোহেল রানা ও সাদ উদ্দিনকে লালকার্ড দেখান। এর আগে এ দুই প্রবল প্রতিপক্ষের এবারের ফেডারেশন কাপের প্রথম ফাইনাল ম্যাচে লালকার্ড পান বসুন্ধরা কিংসের ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। দুই ম্যাচে চার লালকার্ডধারীর তিনজনই জাতীয় দলের। সোহেল রানা, সাদ উদ্দিন এবং ফাহিমদের এ লালকার্ড বাংলাদেশ দলের জন্য চরম অশনি সঙ্কেত। ১০ জুন থেকে ফের বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ম্যাচে নামছে। লাল-সবুজ জার্সিধারীরা যদি তাদের ক্লাব ফুটবলের এ বদ অভ্যাস ত্যাগ করতে না পারেন জাতীয় দলেও যদি এটা অব্যাহত রাখেন তাহলে বিপদে পড়তে হবে বাংলাদেশকে।
ফাহিম ছাড়া সোহেল রানা এবং সাদ উদ্দিনের লালকার্ড কিন্তু ফাউল করার জন্য নয়। মাঠে মারামারি করার দণ্ড। সাদের মতো একজন সিনিয়র খেলোয়াড় যেখাবে আবাহনীর উঠতি ফুটবলারটির হাত দিয়ে গলা পেঁচিয়ে মাটিতে ফেলে দিয়েছিলেন তা খুব দুঃখজনক।
বাংলাদেশ দলের জার্সিতে লালকার্ড পেয়ে দলকে বিপদে ফেলাটা নতুন কিছু নয়। গত বছরও মালদ্বীপের বিপক্ষে ম্যাচে লালকার্ড পেয়েছিলেন মিডফিল্ডার মো: সোহেল রানা। এরপরও বাংলাদেশ ২-১ এ জিতেছিল সেই ম্যাচ। ২০২১ এর সাফ ফুটবলে বিশ্বনাথ ঘোষ ফাউল করে লালকার্ড পান ভারতের বিপক্ষে। সে ম্যাচে অবশ্য পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশ ১-১ গোলে ড্র করেছিল। এ বিশ্বনাথ ২০১৭ সালের অনূর্ধ্ব-১৮ সাফে অযথা ফাউল করে লালকার্ড পেয়েছিলেন নেপালের বিপক্ষে। সে ম্যাচে বাংলাদেশ ১০ নিয়ে ১-২ এ হেরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন বিসর্জন দেয়।
২০০১ সালের বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব। সৌদি আরবের মাঠে অনুষ্ঠিত ফিরতি পর্বের ম্যাচে জর্জ কোটানের দল এক পর্যায়ে ২-১ এ এগিয়ে ছিল মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে। এরপর হঠাৎই বাংলাদেশ স্ট্রাইকার রোকনুজ্জামান কাঞ্চন কনুই দিয়ে গুতা মারেন মঙ্গোলিয়ার এক ফুটবলারকে। এতে ১০ জনে পরিণত হওয়া বাংলাদেশ দল আর কুলিয়ে উঠতে পারেনি। প্রবল চাপে পড়ে জিততে ব্যর্থ। ম্যাচ ২-২ গোলে ড্র করে মঙ্গোলিয়া, যা ছিল গোবি মরুভূমির দেশটির প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচে পয়েন্ট পাওয়া। ২০০৪ সালে মিরপুর স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ বাছাই প্লে-অফে তাজিকিস্তানের বিপক্ষে লালকার্ড পান মিডফিল্ডার আজমল হোসেন বিদ্যুৎ। ফলে এক খেলোয়াড় কম নিয়ে গোলাম সারোয়ার টিপুর দলের ০-২ গোলে হার।
তাই সামনে সিঙ্গাপুর, হংকং ও ভারতের বিপক্ষে যে তিনটি হোম ম্যাচ এ বছরে সেই খেলাগুলোতে এ আচরনগত দিকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। এ সতর্ক করার দায়িত্ব টিম ম্যানেজমেন্ট এবং ন্যাশনাল টিমস কমিটির। কাল অবশ্য এ বিষয়ে বক্তব্য নেয়ার জন্য বাফুফে সভাপতি এবং ন্যাশনাল টিমস কমিটির চেয়ারম্যান তাবিথ আওয়ালকে ফোন দিলে তিনি মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম বাবুর মাধ্যমে জানিয়েছেন, আমরা বিষয়টি খুব সিরিয়াসভাবে দেখছি। খেলোয়াড়দের এ আচরণ যেন জাতীয় দলের ম্যাচের সময় না থাকে, সেই বিষয়ে তাদের সাথে কথা বলব।
ক্লাব ফুটবলে ফুটবলাররা যে আচরণ করে এর প্রভাব পড়ে জাতীয় দলে। কারণ বদ অভ্যাসতো ত্যাগ করতে পারে না। বাফুফের আগের কমিটির সময় এ কার্ড পাওয়া বিষয়ে ফুটবলারদের সতর্ক করেছিল তখনকার ন্যাশনাল টিমস কমিটি।