নয়া দিগন্ত ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিশ্চিত করেছেন যে তিনি ভেনিজুয়েলায় সিআইএ-র গোপন অভিযান পরিচালনার অনুমোদন দিয়েছেন। এই পদক্ষেপটি মার্কিন প্রশাসনের দীর্ঘদিনের লক্ষ্য ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে চাপে রাখা-এর অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস।
ট্রাম্প এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ভেনিজুয়েলা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক যুক্তরাষ্ট্রে পাচার হচ্ছে, বিশেষ করে ক্যারিবিয়ান সাগর হয়ে।’ তিনি আরো অভিযোগ করেন যে ভেনিজুয়েলা সরকার বন্দী ও মানসিক রোগীদের মুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছে। যদিও এসব দাবির পক্ষে তিনি কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেননি।
তিনি জানান, সিআইএ-র অভিযান শুধু সমুদ্র পথেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং স্থলভাগেও বিস্তৃত হতে পারে। তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি সরাসরি মাদুরোকে ‘টার্গেট’ করার বিষয়টি অস্বীকার করেন, একে ‘অযৌক্তিক প্রশ্ন’ বলে অভিহিত করেন।
যুক্তরাষ্ট্র ইতোপূর্বে মাদুরোর বিরুদ্ধে মাদক পাচারের অভিযোগে তথ্যদাতার জন্য ৫০ মিলিয়ন ডলারের পুরস্কার ঘোষণা করেছে। ট্রাম্পের এই নতুন নির্দেশনা ওয়াশিংটনের কৌশলগত অবস্থানকে আরো জোরদার করে, যা ভেনিজুয়েলার রাজনৈতিক অস্থিরতা ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ।
বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ লাতিন আমেরিকায় মার্কিন হস্তক্ষেপের দীর্ঘ ইতিহাসের ধারাবাহিকতা। ভেনিজুয়েলায় অর্থনৈতিক সঙ্কট, রাজনৈতিক দমন-পীড়ন এবং গণতন্ত্রের সঙ্কট নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ থাকলেও, সরাসরি গোয়েন্দা অভিযান চালানো একটি বিতর্কিত কৌশল। মাদুরো প্রশাসন এই অভিযোগগুলোকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে অভিহিত করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে। ভেনিজুয়েলার মিত্র রাষ্ট্রগুলোও এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে লাতিন আমেরিকার ভূরাজনৈতিক ভারসাম্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই অভিযান যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে তা শুধু ভেনিজুয়েলার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিই নয়, বরং গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক সম্পর্কেও গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।



