আইফোনে স্যাটেলাইট সেবার পরিধি বাড়ছে

আহমেদ ইফতেখার
Printed Edition
আইফোনে স্যাটেলাইট সেবার পরিধি বাড়ছে
আইফোনে স্যাটেলাইট সেবার পরিধি বাড়ছে

২০২২ সালে আইফোন ১৪ চালুর পর থেকে ব্যবহারকারীদের ফ্রি স্যাটেলাইট পরিষেবা দিচ্ছে অ্যাপল। এ পরিষেবার মাধ্যমে জরুরি পরিস্থিতিতে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন আইফোন ব্যবহারকারীরা। এখন পর্যন্ত নিজেদের আইফোনে স্যাটেলাইট সংযোগের জন্য ‘গ্লোবালস্টার’ নামের কোম্পানির সেবা ব্যবহার করছে অ্যাপল। ২০২৬ সালে আসবে আইফোন ১৮ প্রো মডেল, তখন হয়তো নিজেদের স্যাটেলাইট পার্টনার গ্লোবালস্টারের বদলে ইলন মাস্কের কোম্পানি স্পেসএক্স-এর সাথে কাজ শুরু করবে অ্যাপল।

আইফোনে আরো উন্নত স্যাটেলাইট ফিচার যুক্ত করার পরিকল্পনা করছে অ্যাপল। ডিভাইসটিতে ৫জি নন-টেরেস্ট্রিয়াল নেটওয়ার্ক সাপোর্ট নিয়েও কাজ করছে। ভবিষ্যতে আইফোন থেকে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে শুধু জরুরি মেসেজই পাঠানো যাবে না, আরো নানা কাজও হবে। গত বছর ‘মেসেজেস ভায়া স্যাটেলাইট’ ফিচারের মাধ্যমে টেক্সট পাঠানো ও গ্রহণের সুবিধা চালু করেছিল। এবার কোম্পানিটি সেই সুবিধায় ছবি পাঠানোর অপশন যোগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

আইফোনে ৫জি নন-টেরেস্ট্রিয়াল নেটওয়ার্ক সাপোর্ট আনতে পারলে মোবাইল টাওয়ারগুলো স্যাটেলাইটের সাহায্যে তাদের কভারেজ বাড়াতে পারবে। বিশেষ করে ফিচারটি দুর্গম বা নেটওয়ার্কবিহীন এলাকায় বেশি কার্যকর হবে। অ্যাপল ম্যাপস অ্যাপেও স্যাটেলাইট সংযোগ আনতে চাইছে যাতে করে ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেট বা সেলুলার সংযোগ ছাড়াই দিকনির্দেশনা পেতে পারেন।

অ্যাপল স্যাটেলাইট সংযোগের মাধ্যমে এমন এক ফিচার তৈরি করছে, যাতে ব্যবহারকারীরা ফোনের সিগন্যাল ছাড়াই নেভিগেশন ও যোগাযোগ করতে পারবেন। আইফোন ১৪ সিরিজের সাথে অ্যাপল ‘ইমারজেন্সি এসওএস বাই স্যাটেলাইট’ সুবিধা চালু করেছিল। এতে সেলুলার সেবা না থাকলেও উদ্ধারকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করা যেত। এবার সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য অফলাইন ম্যাপস ও বার্তা পাঠানোর সুবিধা যুক্ত করার পরিকল্পনা করছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রকৌশলীরা ‘ন্যাচারাল ইউজেজ’ নামে নতুন একটি পদ্ধতির ওপর কাজ করছেন বলে জানা গেছে। এতে ফোন আকাশের দিকে তাক না করেও সংযোগ পাওয়া যায়। অর্থাৎ ফোন পকেট বা গাড়ির ভেতর থাকলেও স্যাটেলাইট লিংক সচল থাকবে। পরবর্তী প্রজন্মের আইফোনে ফাইভজি এনটিএন বা নন-টেরেস্ট্রিয়াল নেটওয়ার্ক সুবিধা যুক্ত হতে পারে। এতে মোবাইল টাওয়ার ও স্যাটেলাইট মিলিয়ে আরো স্থিতিশীল সংযোগ পাওয়া যাবে। ভারতের মতো গ্রামীণ বা দুর্বল নেটওয়ার্কযুক্ত এলাকায় এটি নির্ভরযোগ্য যোগাযোগ নিশ্চিত করবে।

বর্তমানে আইওএস এ যে স্যাটেলাইটভিত্তিক ফিচারগুলো সক্রিয় আছে, সেগুলো গ্লোবালস্টারের নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভরশীল। নতুন ফিচারগুলো সমর্থন করতে এই নেটওয়ার্কের অবকাঠামো আধুনিকায়নে অ্যাপল আর্থিক সহায়তাও দিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, স্যাটেলাইটনির্ভর সুবিধা বাড়ানো অ্যাপলের ভবিষ্যৎ কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এতে প্রচলিত মোবাইল নেটওয়ার্কের বাইরে থাকলেও ব্যবহারকারীরা প্রয়োজনীয় কাজ করতে পারবেন, যা দূরবর্তী অঞ্চলে আইফোনের ব্যবহারযোগ্যতা আরো বাড়াবে।