নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা যদি দেশ পরিচালনার সুযোগ পাই, তাহলে ভারতের সাথে সম্পর্ক হবে পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে। মানুষ নিজের জায়গা বদলাতে পারে, কিন্তু প্রতিবেশী বদলাতে পারে না। আমরা আমাদের প্রতিবেশীকে সম্মান করতে চাই এবং একইভাবে প্রতিবেশীর কাছ থেকেও সম্মান প্রত্যাশা করি।
সপ্তাহব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র সফরের প্রথম দিন স্থানীয় সময় গত বুধবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণকালে ভারতের সাথে সম্পর্ক বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
জামায়াত আমির আরো বলেন, বাংলাদেশের চেয়ে ভারত আয়তনে ২৬ গুণ বড় দেশ। তাদের সম্পদ, জনশক্তি আমাদের চেয়ে অনেক বেশি। আমরা তাদের অবস্থান বিবেচনায় সম্মান করি। তবে আমাদের ছোট ভূখণ্ড ও প্রায় ১৮ কোটি মানুষের অস্তিত্বকেও তাদের সম্মান করতে হবে। দিস ইজ আওয়ার ডিমান্ড। যদি তা হয়, তাহলে দুই প্রতিবেশী শুধু ভালোই থাকব না; বরং এক প্রতিবেশীর কারণে অন্য প্রতিবেশীও বিশ্ব দরবারে সম্মানিত হবে।
ভিন্ন ধর্মের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত প্রায় দেড় বছরে আমাদের কার্যক্রমের মধ্য দিয়েই আমরা এর জবাব দিয়েছি। একটা বিষয় একেবারে পরিষ্কার করতে চাই, গত ৫৪ বছরে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের অভিবাসন ঘটেছে, মুসলমানদেরও। আমরা জোর করে কোনো কিছু বন্ধের পক্ষে নই, আবার জোর করে কাউকে দেশ থেকে তাড়ানোর পক্ষেও নই।
তিনি আরো বলেন, আমরা মেজরিটি ও মাইনোরিটি ধারণায় বিশ্বাস করি না। আমরা বলি ‘উই নিড ইউনিটি’। মেজরিটি-মাইনোরিটি বলা মানেই বিভাজন তৈরি করা, যা একদল অন্য দলের মুখোমুখি দাঁড় করায়। গত ৫৪ বছর ধরে আমরা এর ভয়াবহতা দেখেছি- আমরা আর তা দেখতে চাই না।
তিনি বলেন, আমাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও সভ্যতার ভিত্তিতে যুগের পর যুগ আমরা মিলেমিশে বসবাসের যে ঐতিহ্য গড়ে তুলেছি, সেটিকেই পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চাই। যে কয়েকটি কালো দাগ পড়েছে, সেগুলো উপড়ে ফেলব ইনশাআল্লাহ, যাতে দল ও ধর্মের বিভাজনে জাতি আর বিভক্ত না হয়।
জামায়াত আমির বলেন, আমরা অনুভব করি, কেউ যদি গত ৫৪ বছরে অন্য কারো সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করে থাকে এবং তার প্রমাণ থাকে, তবে আমরা সেই সম্পত্তি ফেরত দেয়ার পক্ষে- এটিই আমাদের অবস্থান।
যুক্তরাষ্ট্র সফরে দেশটির কোনো শীর্ষ রাজনৈতিক নেতার সাথে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে জামায়াত আমির বলেন, এই প্রশ্নটির উত্তর বৃহত্তর স্বার্থে আপাতত এড়িয়ে যাচ্ছি। সভায় নিউইয়র্কে অবস্থানরত বাংলাদেশী সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
নাগরিকদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাবো- মোবারক হোসাইন : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, ঢাকা-১৩ আসনে জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী মোবারক হোসাইন বলেছেন, স্বাস্থ্যসেবা কোনো বিলাসিতা নয়; এটি প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক ও মানবিক অধিকার। ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থাই পারে সেই অধিকারকে বাস্তবে রূপ দিতে এবং স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে।
গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগর উত্তর থানা জামায়াত আয়োজিত ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে আগারগাঁও এলাকার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার অসংখ্য নারী-পুরুষ, শিশু ও প্রবীণ নাগরিক বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ গ্রহণ করেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও স্বেচ্ছাসেবকদের অংশগ্রহণে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এ ক্যাম্পে মেডিসিন, গাইনি, ডেন্টাল ও শিশু বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। পাশাপাশি ব্লাড গ্রুপিং, ডায়াবেটিস পরীক্ষা ও প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়।
মেডিক্যাল ক্যাম্প অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন থানা আমির আবদুল আউয়াল আজম এবং সঞ্চালনা করেন থানা সেক্রেটারি মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু।
জামায়াত কেবল রাজনৈতিক দল নয়, একটি মানবিক সংগঠন- ড. হেলাল উদ্দিন : জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দেিণর নায়েবে আমির, ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, জামায়াত কেবল রাজনৈতিক দল নয়, একটি মানবিক সংগঠন। মানবিক সংগঠন ছাড়া মানবিক বাংলাদেশ গঠন করা যাবে না। অতীতে যারা সরকার গঠন করেছে তারা প্রত্যেকে ক্ষমতার রাজনীতি করে। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতার নয়, মানবতার রাজনীতি করে। যেখানেই দুর্যোগ-দুর্দিন সেখানেই জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতে ইসলামী চার দফা ভিত্তিতে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে। তারমধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে সমাজসংস্কার ও সমাজসেবা। সমাজ সেবার অংশ হিসেবে জামায়াতে ইসলামী ব্যাপকভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এসব কার্যক্রম দলমত, ধর্ম বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে পরিচালিত হয়।
গতকাল জামায়াতে ইসলামী মতিঝিল উত্তর থানার উদ্যোগে আয়োজিত দিনব্যাপী ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। মতিঝিল উত্তর থানা আমির এস এম শামছুল বারীর সভাপতিত্বে এবং থানা সেক্রেটারি রবিউল ইসলামের পরিচালনায় মুক্তিযোদ্ধা সাবু চত্বরে অনুষ্ঠিত ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পের উদ্বোধনী স্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠিত মেডিক্যাল ক্যাম্পে সহস্রাধিক নারী-পুরুষ চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক টিম স্বাস্থ্যসেবা দেন। এ ছাড়াও প্রত্যেক রোগীকে চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ওষুধ বিনামূল্যে দেয়া হয়।



