নিজস্ব প্রতিবেদক
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা পরিবর্তন করে সঙ্গীত ও শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল জারি করা সংশোধিত বিধিমালায় সঙ্গীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ বাদ দেয়া হয়েছে। সংশোধিত বিধিমালার গেজেটে এই তথ্য প্রকাশ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত আগস্টে জারি করা বিধিমালায় চার ধরনের শিক্ষকের কথা বলা ছিল। সেগুলো ছিল প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক (সঙ্গীত) ও সহকারী শিক্ষক (শারীরিক শিক্ষা)। সংশোধিত বিধিমালায় কেবল প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের কথা বলা হয়েছে।
এর আগে গত ২৮ আগস্ট ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫’ -এর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। এতে অন্যান্য বিষয়বস্তুর পাশাপাশি সঙ্গীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ রাখা হয়। এরপর ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা সভা, সেমিনার, বিক্ষোভ সমাবেশে সঙ্গীত শিক্ষকের বদলে ধর্ম শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার দাবি করেন। সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগ সিদ্ধান্ত বাতিল করা না হলে তারা আন্দোলনেরও হুমকি দেন।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা সংশোধন করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে জটিলতা কাটল সহকারী শিক্ষক নিয়োগের। এর মধ্যেই দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাড়ে ১৩ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য টেলিটকের সাথে মিটিং করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। গতকাল সোমবার সকালে এই মিটিং সম্পন্ন হয়। এর আগে গত আগস্টে প্রকাশিত বিধিমালার বিজ্ঞান বিভাগের ২০ শতাংশ কোটা নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। বিধিতে বলা হয়, ‘এই বিধিমালার অধীন সরাসরি নিয়োগযোগ্য ৯৩% পদ মেধাভিত্তিক প্রার্থীদের দ্বারা, তন্মধ্যে ২০% পদ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের দ্বারা এবং ৮০% পদ ‘অন্যান্য বিষয়ে’ স্নাতক ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের দ্বারা মেধাক্রম অনুযায়ী নিয়োগযোগ্য হবে’।
এ প্রজ্ঞাপনের পর বিজ্ঞান বিভাগের প্রার্থীদের ২০ শতাংশ কোটায় আবদ্ধ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন চাকরিপ্রার্থীরা। পরে বিধিমালা সংশোধন করে আবারো প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা সংশোধিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী সরাসরি নিয়োগযোগ্য মোট ৯৩ শতাংশ পদ মেধাভিত্তিক প্রার্থীদের মধ্য থেকে পূরণ করা হবে। এর মধ্যে ২০ শতাংশ পদ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে, আর বাকি ৮০ শতাংশ পদ বিজ্ঞানসহ অন্যান্য বিষয়ে অন্যূন স্নাতকদের জন্য।’ নতুন বিধি অনুযায়ী, বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে। এর পাশাপাশি বাকি ৭৩ শতাংশ সাধারণ প্রার্থীদের থেকেও তাদের নিয়োগ দেয়া হবে। শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের গবেষণা কর্মকর্তা এস এম মাহবুব আলম বলেন, এরই মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা সংশোধন করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
 


