জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে অবস্থিত রাষ্ট্রায়ত্ত জিল বাংলা চিনিকল ৬৫৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকার পুঞ্জিভূত ঋণ মাথায় নিয়ে ৬৮তম আখ মাড়াই মৌসুম শুরু করতে যাচ্ছে। দেশের প্রাচীনতম চিনি শিল্পগুলোর একটি এই প্রতিষ্ঠানটির ঋণের বৃহৎ অংশই ব্যাংক সুদজনিত বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
গতকাল বিকেলে নতুন মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন হবে। মিল সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে ৭০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে পাঁচ হাজার মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
দেওয়ানগঞ্জ ও ইসলামপুরের আখচাষের ওপর নির্ভর করে ১৯৫৭ সালে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড সরকারের আর্থিক সহায়তায় ‘জিল পাক সুগার মিল’ প্রতিষ্ঠিত হয়। স্বাধীনতার পর এর নাম হয় ‘জিল বাংলা সুগার মিলস’। ১৯৭২ সালে এটি রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প হিসেবে ঘোষিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৬৭টি মাড়াই মৌসুম সম্পন্ন করেছে মিলটি, যার মধ্যে মাত্র ১৮ মৌসুমে লাভ হয়েছিল।
চাষিদের অভিযোগ, যন্ত্রাংশ সঙ্কট, ঋণ সুবিধা না পাওয়া, উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি এবং অন্যান্য ফসলে অধিক লাভ হওয়ায় আখচাষ ক্রমে কমে যাচ্ছে। মিলের সক্ষমতা হ্রাস, বাজার সিন্ডিকেট ও নানাবিধ জটিলতা দীর্ঘদিন ধরে লোকসান বাড়িয়ে তুলছে বলেও তারা দাবি করেন।
জিল বাংলা চিনি কলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিকুল আলম জানান, মিলকে টিকিয়ে রাখতে কৃষকদের আখচাষে আরো আগ্রহী হতে হবে। তিনি বলেন, ‘চাষিদের অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি আখচাষ বজায় রাখতে হবে। সরকার ও শিল্প মন্ত্রণালয় পাঁচ বছর মেয়াদি রোডম্যাপ নিয়ে কাজ করছে।’
এলাকাবাসীর দাবি, মিলটি আধুনিকায়ন এবং বহুমুখী উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করতে পারলে একসময়কার লাভজনক এই শিল্প আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারে।



