ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে মামলা করেও বহাল ডাকের ডিজি শাহাব উদ্দীন

নগদে ৬৪৫ কোটি টাকার কেলেঙ্কারির আসামি হয়েও গ্রেড-১ এ পদোন্নতি!

২০ জুলাই রাজশাহী থেকে ঢাকায় ফেরার পথে গাজীপুরে ছাত্র-জনতার প্রতিরোধের মুখে পড়েন তিনি। তখন শাহাব উদ্দীন ছিলেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক।

মনিরুল ইসলাম রোহান
Printed Edition
শাহাব উদ্দিন
শাহাব উদ্দিন

জুলাই আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে রীতিমতো ভাগ্য খুলে যায় ডাক অধিদফতরের বর্তমান মহাপরিচালক এস এম শাহাব উদ্দীনের। ২০ জুলাই রাজশাহী থেকে ঢাকায় ফেরার পথে গাজীপুরে ছাত্র-জনতার প্রতিরোধের মুখে পড়েন তিনি। তখন শাহাব উদ্দীন ছিলেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক। সরকারের সুনজর পেতে সুযোগ পেয়ে ২৪ জুলাই গাছা থানায় সরকারি গাড়ী পোড়ানোর অপরাধে ছাত্র-জনতার নামে গাড়ী চালক মো: তারিকুল ইসলামকে দিয়ে তিনি একটি মামলা ঠুকে দেন। ২৭ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন উপলক্ষে ডাক অধিদফতরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আহত অবস্থায় অংশ নিয়ে তার বক্তৃতায় জুলাই আন্দোলনকারীদের নাশকতা সৃিষ্টকারী, দেশদ্রোহী, জঙ্গী ও সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে তৎকালীন সরকারের কর্তাব্যক্তিদের সুনজরে পড়েন শাহাব উদ্দীন। দ্রুতগতিতে এর পুরস্কারও পান তিনি। ১ আগস্ট ডাক অধিদফতরের মহাপরিচালক তরুণ কান্তি শিকদারকে সরিয়ে এডিজি শাহাব উদ্দীনকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে ওই পদে বসানো হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

জুলাই আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে রীতিমতো ভাগ্য খুলে যায় ডাক অধিদফতরের বর্তমান মহাপরিচালক এস এম শাহাব উদ্দীনের। ২০ জুলাই রাজশাহী থেকে ঢাকায় ফেরার পথে গাজীপুরে ছাত্র-জনতার প্রতিরোধের মুখে পড়েন তিনি। তখন শাহাব উদ্দীন ছিলেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক। সরকারের সুনজর পেতে সুযোগ পেয়ে ২৪ জুলাই গাছা থানায় সরকারি গাড়ী পোড়ানোর অপরাধে ছাত্র-জনতার নামে গাড়ী চালক মো: তারিকুল ইসলামকে দিয়ে তিনি একটি মামলা ঠুকে দেন। ২৭ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন উপলক্ষে ডাক অধিদফতরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আহত অবস্থায় অংশ নিয়ে তার বক্তৃতায় জুলাই আন্দোলনকারীদের নাশকতা সৃিষ্টকারী, দেশদ্রোহী, জঙ্গী ও সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে তৎকালীন সরকারের কর্তাব্যক্তিদের সুনজরে পড়েন শাহাব উদ্দীন। দ্রুতগতিতে এর পুরস্কারও পান তিনি। ১ আগস্ট ডাক অধিদফতরের মহাপরিচালক তরুণ কান্তি শিকদারকে সরিয়ে এডিজি শাহাব উদ্দীনকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে ওই পদে বসানো হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।জুলাই আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে রীতিমতো ভাগ্য খুলে যায় ডাক অধিদফতরের বর্তমান মহাপরিচালক এস এম শাহাব উদ্দীনের। ২০ জুলাই রাজশাহী থেকে ঢাকায় ফেরার পথে গাজীপুরে ছাত্র-জনতার প্রতিরোধের মুখে পড়েন তিনি। তখন শাহাব উদ্দীন ছিলেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক। সরকারের সুনজর পেতে সুযোগ পেয়ে ২৪ জুলাই গাছা থানায় সরকারি গাড়ী পোড়ানোর অপরাধে ছাত্র-জনতার নামে গাড়ী চালক মো: তারিকুল ইসলামকে দিয়ে তিনি একটি মামলা ঠুকে দেন। ২৭ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন উপলক্ষে ডাক অধিদফতরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আহত অবস্থায় অংশ নিয়ে তার বক্তৃতায় জুলাই আন্দোলনকারীদের নাশকতা সৃিষ্টকারী, দেশদ্রোহী, জঙ্গী ও সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে তৎকালীন সরকারের কর্তাব্যক্তিদের সুনজরে পড়েন শাহাব উদ্দীন। দ্রুতগতিতে এর পুরস্কারও পান তিনি। ১ আগস্ট ডাক অধিদফতরের মহাপরিচালক তরুণ কান্তি শিকদারকে সরিয়ে এডিজি শাহাব উদ্দীনকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে ওই পদে বসানো হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এ দিকে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের নজিরবিহীন পতন ঘটলেও এক অদৃশ্য জাদুর কাঠির ক্ষমতাবলে মহাপরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্বে বহালতবিয়তেই থেকে যান এই আমলা। পদটিকে পোক্ত করতে ভোল পাল্টিয়ে রীতিমতো অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে গেল ২৩ মে গ্রেড-১ পদে পদোন্নতিও বাগিয়ে নিয়েছেন এস এম শাহাব উদ্দীন। অপর দিকে মিলেমিশে ডাক বিভাগের অধীনে থাকা নগদের ৬৪৫ কোটি টাকার আর্থিক কেলেঙ্কারির সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বর্তমান মহাপরিচালক এস এম শাহাব উদ্দীনসহ ২৪ জনের নামে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক মামলা করায় দেশজুড়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

ডাক বিভাগ সূত্র বলছে, নগদের ৬৪৫ কোটি টাকার অবৈধ ইলেকট্রনিক অর্থ (ই-মানি) সৃষ্টি করে লেনদেন করার অভিযোগে ডাক অধিদফতরের মহাপরিচালক এস এম শাহাব উদ্দীন, নগদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ মিশুকসহ ২৪ জনকে আসামি করে গত ৩ ফেব্রুয়ারি মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। অবশ্য ডাক অধিদফতরের এক চিঠির প্রেক্ষিতে মহাপরিচালক এস এম শাহাব উদ্দীনসহ ওই বিভাগের আটজনকে পরবর্তীতে মামলার আসামির তালিকা থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে বলে এ প্রতিবেদককে জানান মামলার বাদি বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক সরকার মোহাম্মদ আমির খসরু। যদিও মতিঝিল থানায় দায়েরকৃত ওই মামলায় বলা হয়েছে, ১৬জন আসামি আটজন আসামির সহায়তায় ভার্চুয়াল মুদ্রা এবং ডকুমেন্ট জালিয়াতি করে নগদের গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। সূত্র বলছে, কোনো সরকারি কর্মকর্তার নামে ফৌজদারি মামলা বা দুদকে মামলা চলমান থাকলে তাকে পদোন্নতি দেয়ার কোনো সুযোগ নাই। কিন্তু পিটিডির কালো তালিকাভুক্ত ডাক বিভাগের সাবেক সচিব ড. মুশফিকুর রহমানের যোগসাজশে মামলার তথ্য গোপন করে সরকারি পদোন্নতির সর্বোচ্চ সংস্থা ‘এসএসবি’র চোখ ফাঁকি দিয়ে মহাপরিচালককে গ্রেড-১ এ পদোন্নতি দেয়া হয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, গত বছর ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ২০ জুলাই রাজশাহী থেকে ঢাকায় ফেরার পথে রাত সাড়ে ৮টার দিকে গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির আশপাশে হামলার শিকার হন তৎকালীন এডিজি শাহাব উদ্দীন। তখন ছাত্র-জনতা তাকে বহনকারী সরকারি পাজেরো গাড়ীটি প্রথমে ভাঙচুর করে এবং পরবর্তীতে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এ সময় এডিজির মুখ গাড়ির ভাঙা কাঁচে কেটে যায়। গাড়িতে থাকা অন্য কর্মকর্তারা তড়িঘড়ি করে বের হয়ে নিরাপদে চলে যান। এ ঘটনায় ২৪ জুলাই গাছা থানায় তিনি তাঁর ড্রাইভার তারিকুল ইসলামকে দিয়ে একটি এজাহার দায়ের করান। যার এফআইআর নং-২০, জিআর নং-১৭৬ এবং সেখানে ২০০/২৫০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে আসামি করা হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধাদান ও গাড়ি পোড়ানোর অভিযোগ আনা হয়। ওই সময় আটজন ছাত্রকে গ্রেফতার করে অমানবিক নির্যাতন করার খবর শোনা যায়।

মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী এ প্রতিবেদককে জানান, জুলাই আন্দোলন চলাকালীন সরকারের তরফ থেকে জারি করা কারফিউ চলছিল। এ পরিস্থিতিতে তিনদিন আগে রাজশাহী যাওয়া এবং ২০ জুলাই গাড়ি নিয়ে ঢাকায় ফিরে আসার সময় ৭২ লাখ টাকা মূল্যের গাড়ি পুড়ে গেলেও তার বিরুদ্ধে কোনো বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। উল্টো ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা করে তিনি পুরস্কৃত হন। সাবেক প্রতিমন্ত্রী পলকের অতি আস্থাভাজন হওয়ায় সিনিয়রিটি লঙ্ঘন করে ১ আগস্ট অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে শাহাব উদ্দীনকে মহাপরিচালকের পদে বসানো হয়। আওয়ামী লীগের আমলে নিজেকে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ছাত্রলীগের সমাজকল্যাণ সম্পাদক হিসাবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। যদিও ৫ আগস্টের পর নতুন প্রেক্ষাপটে তিনি আর ছাত্রলীগের ওই পরিচয় কারো কাছে দিচ্ছেন না। হামলার ঘটনা ও মামলা করা প্রসঙ্গে তৎকালীন এডিজি এস এম শাহাব উদ্দীনের গাড়ীচালক তারিকুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে জানান, রাজশাহী থেকে ঢাকায় ফেরার পথে ২০ জুলাই রাত সাড়ে ৮টার দিকে গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির পাশে পৌঁছালে কে বা কারা আমাদের গাড়ির ওপর হামলা করে। এরপর তারা গাড়িতে আগুন দিয়ে সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দেয়। রাত হওয়ায় কাউকেই চিনতে পারিনি। গাড়িতে আরো ৫ জন ছিলেন। ওই ঘটনায় শুধু স্যারই আহত হয়েছিলেন। তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গাছা থানায় আমি বাদি হয়ে একটি মামলা করি। ৫ আগস্টের আগে পুলিশ একবার ডেকেছিল। ৫ আগস্টের পর ওই মামলার আর খোঁজ খবর নেয়া হয়নি।

এ প্রসঙ্গে ডাক অধিদফতরের মহাপরিচালক এস শাহাব উদ্দীন নয়া দিগন্তকে বলেন, ২০ জুলাই রাজশাহী থেকে ঢাকায় ফেরার পথে গাজীপুরে হামলার শিকার হই। কে বা কারা হামলা করেছিল আমার জানা নেই। মহাপরিচালক পদে বসা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এর আগে যিনি ছিলেন তার মেয়াদ ছিল। তারপরও ১ আগস্ট আগের সরকারই আমাকে এ পদে বসিয়েছিল। নগদের ৬৪৫ কোটি টাকার আর্থিক কেলেঙ্কারীর ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের করা মামলার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ডাক অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, মামলায় আসামির তালিকায় আমার নাম ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে মামলার বাদি স্বেচ্ছায় আসামির ওই তালিকা থেকে আমার নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এ সংক্রান্ত কাগজ আমার কাছে আছে।