৬ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি

পৃথক দিনে গণভোটের দাবিতে অটল ৮ দল

Printed Edition

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি, সংশোধিত আরপিও বহাল রাখা ও পৃথক গণভোটসহ ৫ দফা দাবিতে আগামী ৬ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেবে সমমনা আট দল। এ দাবির বিষয়ে সন্তোষজনক কোনো অগ্রগতি না হলে ১১ নভেম্বর মঙ্গলবার ঢাকায় গণসমাবেশ করবে দলগুলো।

গতকাল পল্টনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির, সাবেক এমপি ডা: সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।

মামুনুল হক বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ অবিলম্বে জারি করতে হবে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে পৃথক গণভোট আয়োজন করতে হবে এবং সংশোধিত ও উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত আরপিওতে আর কোনো ধরনের সংশোধন, পরিমার্জন বা পরিবর্তন করা যাবে না। একই সাথে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, গণহত্যার বিচার ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি হলো প্রধান বিষয়। এটা না হলে এ সরকার, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান সব কিছুই আইনি প্রশ্নের মুখে পড়বে। ৫ আগস্টের পরে সংস্কার, বিচার ও নির্বাচনের দায়িত্ব নিয়ে সরকার গঠিত হয়েছিল। সেই লক্ষ্যে সংস্কার কমিশন হয়েছে, ঐকমত্য কমিশন হয়েছে। গণভোটের বিষয়ে সবাই একমতও হয়েছে। এখন গণভোটের দিনক্ষণ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে বিভেদ তৈরি হয়েছে তা দুঃখজনক। এ ক্ষেত্রে বিএনপির আচরণের কোনো অর্থ আমি বুঝি না। পীর সাহেব চরমোনাই উপদেষ্টা পরিষদেও সোমবারের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে আবারো একত্রে বসে চলমান বিভেদ দূর করে শান্তিপূর্ণ অবস্থা তৈরির আহ্বান জানান।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা: আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, আমরা যে ঐকমত্যে পৌঁছেছিলাম, সেখানে হঠাৎ একটি দল বিরোধিতা করছে। আমরা আশা করি তারা শিগগিরই তাদের অবস্থান পরিষ্কার করবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে গণভোট আগে কিংবা পরে করার কোনো অর্থ নেই। বরং গণভোটের মাধ্যমেই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে।

দলগুলোর ৫ দফা দাবি হলো ১. জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও উক্ত আদেশের ওপর পৃথক গণভোট আয়োজন করা। সংশোধিত ও উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত আরপিওতে আর কোনো ধরনের সংশোধন, পরিমার্জন বা পরিবর্তন না করা। ২. আগামী জাতীয় নির্বাচনে সংসদের উভয় কক্ষে/উচ্চ কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা। ৩. অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা। ৪. ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা। ৫. স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা

সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত ৮টি রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ, মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, বিডিপি সভাপতি অ্যাডভোকেট এ কে এম আনোয়ারুল ইসলাম চান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইজহার, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউসুফ সাদিক হক্কানী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমদ, জাগপার সহসভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আজাদ, খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির মহাসচিব মো: কাজী নিজামুল হক নাঈম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান প্রমুখ।