বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে ইসি সানাউল্লাহ

চোরাগোপ্তা হামলার আশঙ্কা থাকলেও ভোট নিয়ে শঙ্কা নেই

Printed Edition

বিশেষ সংবাদদাতা

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারির ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে আরো চোরাগোপ্তা হামলার আশঙ্কা থাকলেও ভোট নিয়ে কোনো ধরনের শঙ্কা নেই বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) আবুল ফজল মো: সানাউল্লাহ। তিনি বলেন, সানাউল্লাহ বলেন, আমরা চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছি না। তবে নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। যারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করবে তাদের কঠোর হাতে দমন করা হবে। তিনি জানান, ইসির মেসেজ ভেরি ক্লিয়ার- নির্বাচন নিয়ে কোনো আশঙ্কা নেই, নির্বাচন সময়মতো হবে। নির্বাচনের পথে এই ধরনের যে বাধাগুলো তৈরি করার চেষ্টা করলে দমন করা হবে। তিনি বলেন, অনেক সন্ত্রাসী জামিনে সমাজে বিরাজ করছে।

রাজধানীর আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে গতকাল রোববার আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় ইসি সচিব আখতার আহমেদও উপস্থিত ছিলেন।

আবুল ফজল মো: সানাউল্লাহ বলেন, বৈঠকে ‘তফসিল ঘোষণা পর থেকে এখন পর্যন্ত সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দুই দিন আগে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা-বাহিনীর বরাত দিয়ে মো: সানাউল্লাহ বলেন, ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

এ নির্বাচন কমিশনার আরো জানান, আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীর বিশেষ অভিযান র‌্যাবেল হান্ট শুরু হওয়ার পর থেকে যেসব সন্ত্রাসীকে অ্যারেস্ট করা হয় তাদের একটা বড় সংখ্যা ইতোমধ্যে জামিন পেয়ে গেছে। তারা সমাজে বিরাজ করছে। এটা নিয়ে কী করণীয় সেটা নিয়ে কথা হয়েছে বৈঠকে। তিনি বলেন, পাশাপাশি একটা মেসেজ সকল বাহিনীর পক্ষ থেকে সমস্বরে এসেছে- যারাই এই নির্বাচনকে বানচাল করার, প্রতিহত করার বা ক্ষতিগ্রস্ত করার কোনো চেষ্টা করবেন তারা ব্যর্থ হবেন এবং যেখানে যতটুক দৃঢ় হওয়া প্রয়োজন সকল বাহিনী ততটুক দৃঢ় হবে।

সানাউল্লাহ বলেন, হাদির ওপর হামলার ঘটনায় সাথে যাকে শনাক্ত করা হচ্ছে সন্দেহভাজন হিসেবে তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই একটা সখ্য গড়ে তুলে অত্যন্ত কাছে গিয়েছেন। পলিটিক্যাল ইনসিডেন্স ও ক্রিমিনাল রেকর্ড আছে। তিনি বলেন, যেসব সন্ত্রাসীকে অ্যারেষ্ট হয়েছিল তাদের একটা বড় সংখ্যা ইতোমধ্যে জামিন পেয়ে গিয়েছে। তারা সমাজে বিরাজ করছে। এটা নিয়ে আমাদের কী করণীয় সেটা নিয়ে আমরা কথা বলেছি।

তিনি আরো বলেন, দু’টি উপজেলায় নির্বাচন অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয়ার মতো প্রচেষ্টা হয়েছে। যদিও বা সেটা ফেল করেছে। এখান থেকেও একটা ধারণা পাওয়া যায় যে চোরাগুপ্তা হামলার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা এই ধরনের হামলার ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে বা এগুলো যাতে কঠোর হস্তে দমন করা হয় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

আর কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে সানাউল্লাহ বলেন, আমরা কিছু এক্সপেক্টেশনের কথা বলেছি যে ডেটারেন্স ক্রিয়েট করার জন্য বেশি সংখ্যায় চেকপয়েন্ট বসিয়ে সন্ত্রাসীদের কার্যক্রম লিমিট করা। যেসব সন্ত্রাসী বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে তাদের আটক করা এবং আইনের আওতায় নিয়ে আসা। আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে গতকালকে থেকে ডেবিল হান্ট নামে যে অপারেশনটা প্রথমে হয়েছিল তার দ্বিতীয় ফেজ গতকালকে থেকে আবার শুরু হয়েছে এটা সমন্বিতভাবে চলবে।

এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, সাইবার সিকিউরিটির সেলগুলো কাজ করছে। বাংলাদেশে এক্সিস্টিং সাইবার সিকিউরিটি স্ট্রাকচার আছে। সেগুলোকেই আমরা ব্যবহার করছি। তারা বিশেষভাবে এখন নির্বাচনের দিকে ফোকাস করছে।

প্রচারসামগ্রী সরানো

প্রচারসামগ্রী সরানোর জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় দেয়া হয়ে ছিল এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সুনির্দিষ্ট পরিপত্র জারি করেছি। আমাদের রিটার্নিং অফিসাররা এগুলো নিয়ে ব্যবস্থা নিবেন। আজকে বাসা থেকে আমি অফিসে আসতে গিয়ে আমি অনেক ব্যানার আর দেখিনি। তবে কিছু পোস্টার চোখে পড়েছে যেগুলো আঠা দিয়ে দেওয়ালের সাথে ল্যাপটানো। এগুলো আর হয়তো সরাতে পারেনি। এগুলো নিয়েও আমরা রিটার্নিং অফিসারদের বলে দিব এগুলোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে। আপনারা ইতোমধ্যে দেখেছেন যে মাঠপর্যায়ে আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা অ্যাকশনে আছে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।