হাত বদলেই বেগুনের দাম দ্বিগুণ

কীটনাশকে খরচ বাড়ে কৃষকের

শিমুলতলা বাজারে প্রতিদিনই জমজমাট বেগুনের হাট বসছে। বিশেষ করে বোতল বেগুনের জন্য এ বাজারের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। তবে কৃষক পর্যায়ে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার অভিযোগ থাকলেও মধ্যস্বত্বভোগীদের হাত ঘুরে জেলা শহর ও অন্যান্য বাজারে বেগুনের দাম প্রায় দিগুণ হয়ে যাচ্ছে।

Printed Edition

মেলান্দহ (জামালপুর) সংবাদদাতা

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার চরাঞ্চলে চলতি মৌসুমে ব্যাপক পরিমাণে বেগুন চাষ হয়েছে। উপজেলার অন্যতম পাইকারি সবজি বাজার শিমুলতলা বাজারে প্রতিদিনই জমজমাট বেগুনের হাট বসছে। বিশেষ করে বোতল বেগুনের জন্য এ বাজারের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। তবে কৃষক পর্যায়ে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার অভিযোগ থাকলেও মধ্যস্বত্বভোগীদের হাত ঘুরে জেলা শহর ও অন্যান্য বাজারে বেগুনের দাম প্রায় দিগুণ হয়ে যাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেলান্দহ উপজেলার শিমুলতলা বাজার থেকে প্রতিদিন গড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার মণ বেগুন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে। কৃষকের কাছ থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি বেগুন ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় কিনছেন। অথচ মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে জামালপুর জেলা শহরের বাজারে সেই বেগুনই বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে। এতে করে কৃষক ও ভোক্তার মাঝখানে দামের বড় পার্থক্য তৈরি হচ্ছে।

মেলান্দহ পৌর এলাকার শিমুলতলা বাজারে বর্তমানে প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন বেগুন ব্যবসায়ী রয়েছেন। বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বেগুনের ক্রয়-বিক্রয়। কৃষকেরা ক্ষেত থেকে বেগুন তুলে অটোরিকশা ও ঘোড়ার গাড়িতে করে বাজারে আনেন। পরে পাইকাররা ট্রাকে এসব বেগুন দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে দেন। শ্যামপুর ইউনিয়নের টুপকারচর বাজারসহ আশপাশের কয়েকটি বাজার থেকেও বেগুন সংগ্রহ করা হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে কৃষকের কাছ থেকে প্রতি মণ বেগুন এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকায় কেনা হচ্ছে। মৌসুমের শুরুতে দাম কিছুটা ভালো থাকলেও এখন ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। তবে জেলা শহর ও খুচরা বাজারে দাম তুলনামূলকভাবে বেশি থাকছে। অন্যদিকে বেগুন চাষিরা বলছেন, এবার ফলন ভালো হলেও উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় লাভের পরিমাণ কমে গেছে। বন্যা না হওয়ায় পোকার আক্রমণ তুলনামূলকভাবে বেশি হয়েছে। ফলে সপ্তাহে অন্তত দুইবার কীটনাশক প্রয়োগ করতে হচ্ছে। এতে খরচ বেড়েছে কয়েকগুণ।

শ্যামপুর ইউনিয়নের বালুরচর গ্রামের বেগুন চাষি বিল্লাল হোসেন বলেন, চার বিঘা জমিতে বেগুন চাষ করেছেন তিনি। বর্তমানে প্রতি মণ এক হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি করছেন। কিন্তু পোকার আক্রমণ বেশি হওয়ায় কীটনাশকে অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে। এতে লাভের আশঙ্কা খুবই কম।

মেলান্দহ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রউফ বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর উপজেলায় বেগুনের চাষ ও ফলন দুটোই বেশি হয়েছে। তবে পোকার আক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় নিয়মিত কীটনাশক ব্যবহার করতে হচ্ছে। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।