জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দীর্ঘ এক বছরের পরিশ্রম ও আলোচনা প্রক্রিয়ার প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টা এবং কমিশনের সভাপতি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আমরা ইতিহাসের এক অনন্য মোড়ে দাঁড়িয়ে আছি। যে ঐকমত্য গড়ে উঠেছে, তা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বিশ্ববাসীর জন্যও হবে এক নজির।’
শনিবার আয়োজিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভায় তিনি বলেন, প্রথমে ঐকমত্য কমিশন গঠনের ধারণা নিয়ে সন্দেহ ছিল। অনেকেই মনে করেছিলেন, এটি ভেঙে যাবে বা অর্থহীন হয়ে পড়বে। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে গভীর আলোচনার মাধ্যমে সদস্যরা এমন এক প্রক্রিয়া তৈরি করেছেন, যা দেশের ভবিষ্যতের জন্য নতুন পথ রচনা করেছে।
নির্বাচন ও নবজন্মের ঘোষণা : আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে পুনরায় আশ্বস্ত করে ড. ইউনূস বলেন, ‘এ নির্বাচন শুধু ভোট নয়, এটি হবে জাতির নবজন্মের মহোৎসব। আমরা যদি ঐকমত্যের চূড়ান্ত ফয়সালা করে ফেলতে পারি, তবে এই নির্বাচন ইতিহাসে এক স্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘স্বৈরাচারের সব পথঘাট বন্ধ করাই হবে আমাদের সংস্কারের মূল লক্ষ্য। একবার যদি আমরা তা করতে পারি, তবে বাংলাদেশের নতুন যাত্রা হবে অপরিবর্তনীয়।’
ঐকমত্যের পথে অগ্রযাত্রা : ড. ইউনূস বলেন, ‘এই প্রচেষ্টা কোনো বই থেকে নেয়া নয়, বরং আমাদের বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে তৈরি। আজকে যে পথ আমরা তৈরি করেছি, তা থেকে সরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ পথই আমাদের জাতির নবযাত্রার একমাত্র মাধ্যম।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, রাজনৈতিক মতভেদ ও ব্যক্তিগত ক্ষোভ থাকলেও দেশের শান্তি, ন্যায়বিচার ও টেকসই গণতন্ত্রের স্বার্থে সবাইকে সমঝোতায় আসতেই হবে।
আলাদিনের প্রদীপের উপমা : প্রধান উপদেষ্টা তরুণ প্রজন্মের আন্দোলনের ত্যাগ ও আত্মদানকে তুলে ধরে বলেন, ‘এটি অনেকটা আলাদিনের প্রদীপের মতো যেখান থেকে বের হওয়া দৈত্য জিজ্ঞেস করছে, কী চাই। আমরা চাইলে শুধু ছোট খাটো কিছু পেতে পারি; কিন্তু এটাই সুযোগ আমাদের পৃথিবীকে পাল্টে দেয়ার।’
তিনি আহ্বান জানান, ছাত্র-জনতার এই অভ্যুত্থান থেকে পাওয়া সুযোগকে যেন ছোট করে না দেখা হয়। বরং নতুন বাংলাদেশ গঠনের জন্য একে কাজে লাগাতে হবে।
ঐকমত্য কমিশনের অবদান : ড. ইউনূস বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান কমিশনের সমন্বয়ক প্রফেসর আলী রীয়াজকে। পরিচালক হিসেবে মনির হায়দারের ভূমিকাকেও তিনি কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ‘কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই তিনি সাহসিকতার সাথে দায়িত্ব নিয়েছেন, ধৈর্য ধরে দিন-রাত কাজ করেছেন। কমিশনের প্রতিটি সদস্য অসামান্য ধৈর্য ও নিষ্ঠার পরিচয় দিয়েছেন।’
শেষ পথচলার আহ্বান : বক্তব্যের শেষে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা হাইওয়ে বানিয়ে ফেলেছি, এখন শুধু সঠিক সাইনবোর্ড বসানো বাকি। আমাদের গন্তব্য পরিষ্কার- একটি ঐক্যবদ্ধ, শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। এ যাত্রাপথে যেন কোনো খুঁত না থাকে, সেটাই আমাদের সবার দায়িত্ব।’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘দ্বিমত রেখে আমরা শেষ করতে পারব না। ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনমুখী হতে হবে। এটাই একমাত্র সুযোগ, আর কোনোদিন এমন সুযোগ আসবে না।’
তাৎপর্য : ড. ইউনূসের বক্তব্যে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে- বাংলাদেশের সামনে এখন একদিকে ঐতিহাসিক সুযোগ, অন্যদিকে অমোঘ দায়িত্ব। ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করে যদি ফেব্রুয়ারির নির্বাচন মহোৎসবমুখরভাবে অনুষ্ঠিত হয়, তবে এটি শুধু একটি নির্বাচন নয়, হবে একটি জাতির পুনর্জন্ম।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন- এটি হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবার যখন গণ-আন্দোলনের পর সমঝোতা ভিত্তিক গণতান্ত্রিক রূপান্তর ঘটতে যাচ্ছে। ঐকমত্য কমিশন কেবল রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে একত্র করেনি, বরং সামাজিক সংলাপের নতুন সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করেছে। এ প্রক্রিয়া সফল হলে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশেও এটি মডেল হিসেবে বিবেচিত হবে।
জাতীয় রাজনীতির সম্ভাব্য প্রভাব : ড. ইউনূসের বক্তব্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে-আগামী নির্বাচনকে কেউ বয়কট করতে পারবে না, কারণ এটি শুধু রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা নয়, বরং জাতির নবজন্মের অংশ। ঐকমত্যের মাধ্যমে প্রণীত নীতিমালা নির্বাচনের পরও রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রভাব ফেলবে। ছাত্র-যুব আন্দোলনের ত্যাগকে সামনে রেখে তরুণ প্রজন্ম রাজনীতিতে আরো সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে।
এ ছাড়া বক্তৃতায় স্বৈরাচারের পথ বন্ধ করার যে অঙ্গীকার ব্যক্ত হয়েছে, তা ভবিষ্যতের জন্য সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের দিকনির্দেশনা বহন করে।
আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ : ড. ইউনূসের বক্তৃতায় আন্তর্জাতিক মহলকে ইঙ্গিত করে বলা হয়- এটি কেবল বাংলাদেশের সমস্যা নয়, বিশ্বব্যাপী অনেক দেশই রাজনৈতিক অস্থিরতায় ভুগছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা যে সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছি, তা অন্য দেশও অনুসরণ করতে চাইবে। নেপালসহ অনেক দেশে একই রকম সঙ্কট তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশ একটি বৈশ্বিক নজির সৃষ্টি করতে পারে।’
বিশ্লেষকদের মতে, যদি ফেব্রুয়ারির নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে হয়, তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের প্রতি আস্থা রাখবে এবং বিদেশী বিনিয়োগ, বাণিজ্য ও কূটনৈতিক সম্পর্ক আরো জোরদার হবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের বক্তব্য নতুন আশার দিগন্ত উন্মোচন করেছে। তিনি নির্বাচনকে ‘নবজন্মের মহোৎসব’ আখ্যা দিয়ে জাতিকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন- এই সুযোগ আর দ্বিতীয়বার আসবে না।
এখন প্রশ্ন হলো- রাজনৈতিক দলগুলো ও সমাজের বিভিন্ন অংশ কি সত্যিই দ্বিমত ভুলে ঐকমত্যের পথে হাঁটতে পারবে? যদি পারে, তবে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন কেবল একটি রাজনৈতিক ঘটনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং ইতিহাসে লিপিবদ্ধ হবে একটি জাতির পুনর্জন্ম হিসেবে।
প্রেক্ষাপট : এক বছরের অভিজ্ঞতা
২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লব এবং আগস্টের অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। সেই সময় ছাত্র-জনতার আন্দোলনের দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়, যার নেতৃত্ব দেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস। ক্ষমতায় আসার পর তিনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করেন, যার উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক, সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার নিয়ে সর্বস্তরের ঐকমত্য গড়ে তোলা।
প্রথমে এই কমিশন নিয়ে অনেকেই সন্দিহান ছিলেন-এটি আদৌ টিকবে কি না, কিংবা কার্যকর কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবে কি না। কিন্তু এক বছরের নিরলস আলোচনার পর কমিশন দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কাঠামো ও সংস্কারের রূপরেখা তৈরি করেছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চূড়ান্ত পর্যায়ে আলোচনার অগ্রগতি : দিনের পর দিন, সপ্তাহের পর সপ্তাহ, রাজনৈতিক দলসমূহ, বিশেষজ্ঞ ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা আলোচনার টেবিলে বসে থেকেছেন। কখনো ছোট ছোট দলীয় বৈঠক, কখনো বা সর্বদলীয় অধিবেশন- অবশেষে সেই দীর্ঘ পরিশ্রম ও ধারাবাহিক আলোচনার ফলেই প্রণীত হলো ‘জুলাই জাতীয় সনদ’।
শনিবার জাতীয় সংসদ ভবনের কক্ষে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ অধিবেশনে কমিশনের সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউনূস উপস্থিত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘আপনাদের ধৈর্য, সহিষ্ণুতা ও ইতিবাচক অংশগ্রহণের কারণেই আমরা একটি বহুল প্রত্যাশিত সংস্কারের দলিলে পৌঁছেছি। এই সনদ শুধু রাজনৈতিক ঐকমত্য নয়- এটি নতুন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রকাঠামো নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর।’
তিন পর্বের ঐতিহাসিক আলোচনা : কমিশনের সহ-সভাপতি বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর আলী রীয়াজ সূচনা বক্তব্যে পুরো প্রক্রিয়াটিকে বাংলাদেশের ইতিহাসের ‘একটি অভূতপূর্ব অধ্যায়’ আখ্যা দেন। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ১৫ ফেব্রুয়ারি কমিশনের যাত্রা শুরু হয়। এর প্রথম পর্ব: ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত টানা আলোচনায় দলগুলো প্রাথমিক সংস্কার প্রস্তাব উত্থাপন করে। দ্বিতীয় পর্ব: ২৩ জুন থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত ২৩টি অধিবেশনে সংবিধান, বিচারব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন, জনপ্রশাসন সংস্কারসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে গভীর আলোচনা চলে। তৃতীয় পর্ব: বর্তমানে বাস্তবায়ন কাঠামো নির্ধারণের আলোচনা চলছে।
আলী রীয়াজ বলেন, ‘এই আলোচনায় ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে। ভিন্ন মত থাকা সত্ত্বেও পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহিষ্ণুতা ছিল অনন্য। এর মধ্য দিয়েই আমরা একটি মাইলফলক অর্জন করেছি।’
রাজনৈতিক দলের প্রতিক্রিয়া : এ দিন তিনটি দলের প্রতিনিধিরা সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যাশায় আমরা দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা করেছি। সংবিধানের মৌলিক কাঠামোয় পরিবর্তনের প্রস্তাব টেকসই করতে হলে গণপরিষদ নির্বাচন জরুরি।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘জুলাই সনদ কেবল রাজনৈতিক দলিল নয়, এটি হবে রাষ্ট্রীয় দলিল। এই সনদের ভিত্তিতেই সুশাসন, ন্যায়বিচার ও কল্যাণমুখী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে। প্রয়োজনে গণভোট কিংবা প্রভিশনাল কনস্টিটিউশনাল অর্ডারের মাধ্যমে এর আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা প্রায় সব সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্যে পৌঁছেছি। তবে সাংবিধানিক ১৯টি বিষয়ে কার্যকর সমাধান প্রয়োজন। বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাবগুলো এখনই কার্যকর করা উচিত।’
উপদেষ্টাদের ভূমিকা : আলোচনা শেষে সভাপতির আহ্বানে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বক্তব্য রাখেন। তিনি জানান, ৬টি সংস্কার কমিশনের অর্ধেক প্রস্তাব ইতোমধ্যেই বাস্তবায়িত হয়েছে, আর ডিসেম্বরের মধ্যে ৭০% সম্পন্ন করার লক্ষ্য রয়েছে। তিনি পরিষ্কার করে বলেন, সংবিধান স্পর্শ করে এমন কোনো প্রস্তাব সংসদ ছাড়া কার্যকর করা যাবে না।
ড. আসিফ নজরুল আরো বলেন- ‘আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে প্রয়োজনীয় আইনি সংস্কার শেষ করতে চাই, কারণ জানুয়ারিতে নির্বাচন শিডিউল ঘোষণার পর আর কোনো সংশোধন সম্ভব হবে না।’
সামনে কী : জুলাই জাতীয় সনদকে ঘিরে এখন দেশজুড়ে প্রত্যাশা- এটি কেবল একটি কাগুজে ঘোষণা নয়, বরং নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থার রূপরেখা। প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস বলেন, ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যে রক্ত ঝরেছে, তার দায় আমাদের কাঁধে। সেই রক্তঋণ শোধ করতে হলে এই সংস্কারগুলো সফলভাবে বাস্তবায়ন করতেই হবে।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা জানান, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা অপরিহার্য। তাদের আশা, এই ঐকমত্যের ধারা অব্যাহত থাকলে আগামীর নির্বাচন হবে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও বিশ্বমানের একটি মডেল।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে দীর্ঘদিন পর এমন এক মুহূর্ত এসেছে যখন ভিন্ন মত ও আদর্শের দলগুলো একটি জাতীয় দলিলে একত্র হয়েছে। এখন জাতির প্রত্যাশা- এই ঐতিহাসিক ঐক্য টিকে থাকুক এবং ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ হয়ে উঠুক নতুন বাংলাদেশের আলোকবর্তিকা।