ফ্যাসিবাদী স্টাইলে ক্ষমতা ধরে রাখতে বাংলাদেশ রিফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (ব্রামা) নির্বাচন বন্ধের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ব্রামা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে এসি ও ফ্রিজ ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে বড় সংগঠন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় গায়ের জোরে এই সংগঠনের সভাপতি হয়েছিলেন মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আসাদুজ্জামান। এরপর থেকে চলতে থাকে সাজানো নির্বাচন।
গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর ব্রামার সদস্যদের ক্ষোভের মুখে সংগঠন থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন আসাদুজ্জামান। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সংগঠনটির কার্যক্রম পরিচালনা ও নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে একজন প্রশাসক নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি ব্রামার প্রশাসক তরফদার সোহেল রহমান নির্বাচনের প্রস্তুতি নিলে তার বিরুদ্ধেও শুরু হয় অপপ্রচার। সাধারণ সদস্যরা বলছেন, এর পেছনে কলকাঠি নাড়ছেন ব্রামার সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান। কারণ তিনি জানেন প্রশাসক যদি নিজের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন করান তাহলে আসাদের ব্রামার নেতৃত্ব পুনর্দখলের স্বপ্ন পূরণ হবে না।
জানা গেছে, গত ১০ জুলাই রাজধানীর পুরানা পল্টনের একটি কনভেনশন হলে মতবিনিময় সভা করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়োগকৃত ব্রামার প্রশাসক তরফদার সোহেল রহমান। সেই সভায় ব্রামার নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়। পাশাপাশি সাবেক কমিটির সভাপতি আসাদুজ্জামানসহ তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের তথ্য সবার সামনে উপস্থাপন করা হয়। সভায় সংগঠনের চাঁদার রশিদ বইগুলোর হদিস পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান প্রশাসক নিজেই। ব্রামার সদস্যদের অভিযোগ সাবেক কমিটির আর্থিক অনিয়ম ও লুটপাটের এ বিষয়টি মতবিনিময় সভায় জানাজানি হওয়ার কারণে ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে ব্রামার প্রশাসকের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে ক্ষমতাচ্যুতরা।
ব্রামার সদস্য আরিফ হোসেন মাসুম বলেন, নির্বাচন হলো না, এর আগেই নিয়ম না মানার অভিযোগ কতটা সত্য তা নিয়ে বেশ সন্দেহ রয়েছে। ব্রামার প্রশাসকের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। একটি পক্ষ বিশেষ ফয়দা নেয়ার জন্য তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন। ব্রামার আরেক সদস্য পুরান ঢাকার এয়ারকন্ডিশনের (এসি)পার্টস ব্যবসায়ী মো: মাইনুদ্দিন জানান, অতীতের সবগুলো নির্বাচন আমাদের সদস্যরা নিজেরাই আয়োজন করেছে। সেই নির্বাচনগুলোতে অনিয়ম হওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু এবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়োগকৃত প্রশাসক সোহেল সাহেব যেভাবে নির্বাচনের আয়োজন করছেন সেখানে ন্যূনতম অনিয়ম হওয়ার কোনো সুযোগ আমরা দেখছি না। নির্বাচন কমিশনেও আমাদের কোনো লোক থাকছে না। নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে পুরো নির্বাচনের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। যারা প্রশাসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনছে তারা আর যাই হোক সংগঠন এবং সংগঠনের সদস্যদের কল্যাণ চায় না। এ বিষয়ে জানতে ব্রামার সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ব্রামার প্রশাসক তরফদার সোহেল রহমান নয়া দিগন্তকে বলেন, ষড়যন্ত্র বাধা আসবেই। অনেকে অনেক কিছু বলবে। তবে এসব কিছু উপেক্ষা করে কাজ করতে হবে। সব বাধা উপেক্ষা করে নির্বাচনের জন্য বোর্ড গঠন করে দেয়া হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই তারা (হতে পারে এ সপ্তাহের মধ্যে) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবেন।