নীলফামারী প্রতিনিধি
নীলফামারীতে আগাম জাতের আলু উত্তোলন শুরু হলেও আশানুরূপ ফলন ও ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকরা। প্রতি বিঘায় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে অনেক চাষিকে। আগাম আলু উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত কিশোরগঞ্জ ও জলঢাকা উপজেলায় এবারো সেভেন ও রুমানা জাতের আলু লাগিয়েছিলেন কৃষকরা, তবে ফলন গতবারের তুলনায় অনেক কম।
অসময়ের টানা বৃষ্টিতে বীজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উৎপাদন নেমে এসেছে প্রায় অর্ধেকে। যেখানে গেল বছর শুরুতে প্রতি কেজি আগাম আলুর দাম ছিল ৯০-১০০ টাকা, সেখানে এবার বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫৫-৬০ টাকায়। ফলে লাভের আশায় আগাম আলু চাষ করা কৃষকরা পড়েছেন লোকসানে। কিশোরগঞ্জের বাহাগিলী ইউনিয়নের কবিরাজপাড়া গ্রামের কৃষক সেকেন্দার আলী জানান, দেড় বিঘা জমিতে আলুর উৎপাদন হয়েছে মাত্র ২৫০ কেজি, যেখানে স্বাভাবিক ফলন হওয়ার কথা ৭০০-৮০০ কেজি। এতে ৫৫ হাজার টাকা খরচ করে বিক্রি করতে পেরেছেন মাত্র ১৩ হাজার ৭৫০ টাকার আলুর লোকসান ৪০ হাজার টাকা।
একই ইউনিয়নের জাহাঙ্গীর আলম জানান, ১ বিঘায় ৩০০ কেজি আলু পেয়ে তিনি লোকসান গুনছেন ২২ হাজার টাকা। সদর উপজেলার বেড়াডাঙ্গা গ্রামের মোশ্বাবের হোসেন বলেন, বীজ বপনের পর টানা তিনদিনের বৃষ্টিতে অনেক বীজ পচে নষ্ট হয়েছে। পাশাপাশি বাজারে পুরাতন আলুর অতিরিক্ত সরবরাহ থাকায় নতুন আলুর দামও কমে গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় ২২ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আগাম জাতের আলু হয়েছে সাত হাজার ৮৩০ হেক্টর জমিতে। এখন পর্যন্ত উত্তোলন হয়েছে মাত্র ১ হেক্টর জমির ফসল। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মনজুর রহমান বলেন, এই অঞ্চলে দেশের অন্যান্য জেলার আগে আলু ওঠে। তবে এবার বাজারে পুরনো আলুর প্রাচুর্য ও বৃষ্টিজনিত ক্ষতির কারণে কৃষকরা আগাম আলুর ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না।



