পাবিপ্রবির মেডিক্যাল সেন্টার

প্যাথলজিস্টের অভাবে প্যাকেটবন্দী ২০ লাখ টাকার চিকিৎসা সরঞ্জাম

পাবিপ্রবি প্রতিনিধি
Printed Edition
প্যাথলজিস্টের অভাবে প্যাকেটবন্দী ২০ লাখ টাকার চিকিৎসা সরঞ্জাম
প্যাথলজিস্টের অভাবে প্যাকেটবন্দী ২০ লাখ টাকার চিকিৎসা সরঞ্জাম

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) মেডিক্যাল সেন্টারে প্যাথলজিস্টের অভাবে ২০ লাখ টাকার চিকিৎসা যন্ত্রপাতি চার বছর ধরে অচল অবস্থায় পড়ে আছে। ২০২১ সালে যন্ত্রপাতিগুলো কেনা হলেও তা ব্যবহার করা হয়নি আজো। ব্যবহার না হওয়ায় কিছু যন্ত্রপাতি ও রিয়েজেন্ট ইতোমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনার একটি বড় উদাহরণ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ৯ জুন মেডিক্যাল সেন্টারের জন্য ২০ লাখ ৩৭ হাজার টাকা ব্যয়ে সেল কাউন্টার, বায়োকেমিস্ট্রি মেশিন, ইউরিন এনালাইজার, ল্যাব রোটেটর, মাইক্রোস্কোপ, ইসিজি মেশিন, কম্পিউটারসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনা হয়। তবে প্রয়োজনীয় জনবল ও স্থান না থাকায় যন্ত্রপাতিগুলো এখনো ব্যবহারের সুযোগ হয়নি। রক্ত, প্রস্রাব, লিভার ও কিডনি ফাংশন, ব্লাড সুগার, ম্যালেরিয়া এবং হৃদযন্ত্রের কার্যক্রম নির্ণয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার জন্য এসব যন্ত্র কেনা হয়েছিল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারের চিকিৎসকরা জানান, যন্ত্রপাতি পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল এখনো নিয়োগ দেয়া হয়নি। ফলে যন্ত্রগুলো যেভাবে আনা হয়েছিল সেভাবেই প্যাকেটবন্দী অবস্থায় পড়ে আছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি রিয়েজেন্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, যা এখন আর ব্যবহারযোগ্য নয়।

এ অবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো: অলিভ বলেন, ‘চিকিৎসা সেবা মৌলিক অধিকার হলেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। যন্ত্রপাতি থাকার পরও প্যাথলজিস্ট না থাকায় আমরা চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। নতুন হল চালু হলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরো বাড়বে। তাই দ্রুত উন্নত মেডিক্যাল সেন্টার গড়ে তোলা জরুরি।’

মেডিক্যাল সেন্টারের ডেপুটি চিফ মেডিক্যাল অফিসার ডা: রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ডা: শহিদুল ইসলাম স্যার দায়িত্বে থাকাকালীন এসব যন্ত্র কেনা হয়েছিল। তবে প্যাথলজিস্ট না থাকায় সেগুলো এখনো চালু হয়নি। আমরা বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারের অর্থে কেনা যন্ত্রপাতি বছরের পর বছর পড়ে আছে, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। জায়গা সঙ্কট ছিল বড় সমস্যা। নতুন প্রশাসনিক ভবনে স্থানান্তরের পর পুরনো ভবনের একটি ফ্লোর মেডিক্যাল সেন্টারের জন্য বরাদ্দ দেয়া হবে। সেখানে চিকিৎসক চেম্বার, বেড ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে।’

শিক্ষার্থীদের দাবি, যন্ত্রপাতিগুলোর কার্যকারিতা নষ্ট হওয়ার আগেই দ্রুত জনবল নিয়োগ দিয়ে মেডিক্যাল সেন্টারকে সক্রিয় করতে হবে। অন্যথায় স্বাস্থ্যসেবার অভাবে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ আরো বাড়বে।