ইমারসিভ প্রতিযোগিতায় কানে ‘ফ্রম ডাস্ট’-এর বাজিমাত

আলমগীর কবির
Printed Edition
ইমারসিভ প্রতিযোগিতায় কানে ‘ফ্রম ডাস্ট’-এর বাজিমাত
ইমারসিভ প্রতিযোগিতায় কানে ‘ফ্রম ডাস্ট’-এর বাজিমাত

৭৮তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের দ্বিতীয় ইমারসিভ প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ কাজের স্বীকৃতি পেয়েছে ডাচ শিল্পী মিশেল ফান দের আ-এর যুগান্তকারী শিল্পকর্ম ‘ফ্রম ডাস্ট’। আধুনিক প্রযুক্তি, আবেগ এবং গল্প বলার অভিনব শৈলীকে একত্র করে নির্মিত এই কাজটি বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আগত দর্শক ও বিচারকদের মুগ্ধ করেছে।

বিশ্ববিখ্যাত কার্লটন হোটেল-এর রাজকীয় ভেন্যুতে এ বছর ইমারসিভ কম্পিটিশন ঘিরে ছিল বিশাল উৎসাহ। দর্শকসংখ্যা ছিল ৫ হাজারের বেশি, যা এ ধরনের প্রতিযোগিতার প্রতি ক্রমবর্ধমান আগ্রহেরই প্রতিফলন।

পুরস্কার গ্রহণের সময় আবেগঘন কণ্ঠে মিশেল ফান দের আ বলেন, যেন ভিনগ্রহের কোনো অভিজ্ঞতা! মনোনয়ন পাওয়াটাই ছিল বিশাল সম্মান, আর জয়লাভ, একেবারে অন্য মাত্রায় প্রবেশ করার মতো।

বিচিত্র পটভূমির বিচারকমণ্ডলী

প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল নয়টি দেশের ১৬টি প্রজেক্ট। এগুলোর মধ্যে ছিল ৯টি প্রতিযোগিতামূলক কাজ, ২টি নন-কম্পিটিটিভ শোকেস এবং ৫টি ‘ফোকাস অন লুক্সেমবার্গ’ সেগমেন্টে।

বিচারক প্যানেলের নেতৃত্বে ছিলেন অস্কারজয়ী ফরাসি চলচ্চিত্র নির্মাতা লুক জ্যাকেত , যিনি ‘মার্চ অফ দ্য পেঙ্গুইনস’-এর জন্য পরিচিত। তার সঙ্গে ছিলেন মার্কিন সঙ্গীতশিল্পী, লেখক ও পারফর্মার লরি অ্যান্ডারসন, ফরাসি লেখক তানিয়া দে মন্তেনিয়, ব্রিটিশ পরিচালক ও মাল্টিমিডিয়া শিল্পী মার্থা ফায়েন্স, জাপানি ভিডিও গেম নির্মাতা ও সিনেসথেসিয়া প্রবক্তা তেতসুয়া মিজুগুচি।

জুরি প্রধান লুক জ্যাকেত বলেন, ‘আমরা এক নতুন ধারার কাহিনী বলার উত্থান দেখছি। এখানে শুধু বিচার নয়, বরং এক নবীন শিল্পরূপের অভিযাত্রী হওয়াটাও ছিল আমাদের দায়িত্ব।’

‘ফ্রম ডাস্ট : এক নতুুন অভিজ্ঞতার জগৎ

পুরস্কারজয়ী প্রজেক্ট ‘ফ্রম ডাস্ট’ দর্শককে নিয়ে যায় এক কাব্যিক ভ্রমণে, যেখানে স্মৃতি, অস্তিত্ব এবং রূপান্তরের থিমগুলো অনন্য ভিজ্যুয়াল, শব্দ এবং স্পেসিয়াল ডিজাইনের মাধ্যমে উপস্থাপিত হয়। এটি কেবল গল্প বলে না, বরং দর্শককে সেই গল্পে শারীরিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করে তোলে।

এলি লেভাস্যুর, কানের ইমারসিভ বিভাগের প্রধান, বলেন ‘ইমারসিভ আর্ট এখনো এক বিকাশমান ভাষা। তবে এ কথা নিশ্চিত এই কাজগুলো গল্প, দর্শক এবং স্থানকে এক সম্পূর্ণ নতুন সম্পর্কে যুক্ত করছে। তারা শুধু গল্প বলে না, তারা আমাদের সেই গল্পে বসবাস করায়।’

ভবিষ্যতের দিকচিহ্ন

কান উৎসব এখন আর শুধু চলচ্চিত্রের সীমায় আবদ্ধ নয়। ইমারসিভ প্রতিযোগিতা প্রমাণ করছে, ভবিষ্যতের কাহিনীকথন হবে বহুমাত্রিক, আন্তরিক এবং দর্শকের সক্রিয় অংশগ্রহণে সমৃদ্ধ। মিশেল ফান দের আ তাঁর ‘ফ্রম ডাস্ট’-এর মাধ্যমে একটি শিল্পকর্ম নয়, বরং একটি পূর্ণ জগৎ নির্মাণ করেছেন। আর এই বছর, বিশ্ব সেই জগতে প্রবেশ করেছে।