জাতীয় স্মৃতিসৌধে মানুষের ঢল

যথাযোগ্য মর্যাদায় বিজয় দিবস উদযাপন

Printed Edition
মহান বিজয় দিবসে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে সর্বস্তরের মানুষের উপচে পড়া ভিড় : আবদুল্লাহ আল বাপ্পী
মহান বিজয় দিবসে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে সর্বস্তরের মানুষের উপচে পড়া ভিড় : আবদুল্লাহ আল বাপ্পী

নিজস্ব প্রতিবেদক

যথাযোগ্য মর্যাদায় সরকারি ও বেসরকারিভাবে গৃহীত নানা কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সারা দেশের নানা শ্রেণিপেশার মানুষ ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে মহান বিজয় দিবস উদ্যাপন করেছেন। স্বাধীনতার ৫৪ বছর উদযাপনে সাভার জাতীয় স্মৃৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে তাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। ভোরে রাজধানীতে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে কর্মসূচির সূচনা হয়। বিজয় দিবস উপলক্ষে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।

গতকাল সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সাভারে জাতীয় স্মৃৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জাতির বীর সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তারা সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি ও ৬টা ৫৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। এ সময় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদর্শন করে। তখন বিউগলে করুণ সুর বেজে ওঠে। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তারা স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন। এ সময় প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা, তিন বাহিনীর প্রধানরা, মুক্তিযোদ্ধা ও যোদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকসহ পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীরমুক্তিযোদ্ধারা শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ ছাড়াও বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশী কূটনীতিকরা, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষও স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বিদেশের মাটিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনগুলোতেও ওড়ে জাতীয় পতাকা। সন্ধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাগুলোতে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের প্রধান শহরগুলোর সড়ক ও সড়কদ্বীপগুলোয় জাতীয় পতাকা, ব্যানার ও বর্ণিল ফেস্টুনে সাজিয়ে তোলা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করে। এর মধ্যে তিন দিনব্যাপী বিজয় মেলা, রেকর্ডসংখ্যক জাতীয় পতাকা নিয়ে প্যারাশুটিং, ব্যান্ড শো এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পালন করা হয়। শিশুদের জন্য কবিতা আবৃত্তি, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।

দিনটি উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেন। একই সাথে তিনি একটি উদ্বোধনী খাম ও বিশেষ সিলমোহর উন্মোচন করেন। গতকাল বিকেলে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন বীরশ্রেষ্ঠদের পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেন। এ ছাড়া মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সম্মানে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। দিনটি উপলক্ষে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), বাংলাদেশ বেতারসহ অন্যান্য টেলিভিশন চ্যানেল ও রেডিওতে মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাস তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্র্রচার করা হয়। দেশের বিভিন্ন সিনেমা হলে শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন মিলনায়তন ও উন্মুক্ত স্থানে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সব জাদুঘর ও বিনোদন কেন্দ্রে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকায় সেখানে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা যায়।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এ দিন বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী পৃথকভাবে ফ্লাই-পাস্ট প্রদর্শনীর আয়োজন করে। সেখানে একটি বিশেষ বিজয় দিবস ব্যান্ড শোও অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া স্বাধীনতার ৫৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘টিম বাংলাদেশ’-এর ৫৪ জন প্যারাট্রুপার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে জাতীয় পতাকা বহন করে স্কাইডাইভ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এটি হবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পতাকা-প্যারাশুটিং প্রদর্শনী, যা গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নতুন সংযোজন হিসেবে স্বীকৃতি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। একই ধরনের ফ্লাই-পাস্ট প্রদর্শনী দেশের অন্য শহরেও সশস্ত্রবাহিনীর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়। পাশাপাশি পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও আনসার বাহিনী দেশব্যাপী ব্যান্ড শোর আয়োজন করে। সব অনুষ্ঠান সাধারণ জনগণের জন্য উন্মুক্ত ছিল। বিকেল ৩টা থেকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিজয় দিবসের গান পরিবেশিত হয়। একই সাথে দেশের ৬৪টি জেলায় নতুন প্রজন্মের শিল্পীরা স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান পরিবেশন করেন। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোও দিনটির তাৎপর্য তুলে ধরে অনুরূপ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

বিজয় দিবস উপলক্ষে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সুবিধাজনক সময়ে স্কুল, কলেজ, মাদরাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, ফুটবল ম্যাচ, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, কাবাডি ও হাডুডু খেলার আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজগুলো সকাল ৯টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিল। এ সব জাহাজ চট্টগ্রাম, খুলনা, মোংলা ও পায়রা বন্দরসহ ঢাকা সদরঘাট, পাগলা ও বরিশালের বিআইডব্লিউটিসি ঘাটে নোঙর করে।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে গতকাল মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের রূহের মাগফিরাত, আহত বীরমুক্তিযোদ্ধাদের সুস্থতা এবং দেশের শান্তি ও অগ্রগতি কামনায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। দেশের সব হাসপাতাল, কারাগার, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কল্যাণ কেন্দ্র, ডে-কেয়ার সেন্টার, শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র, শিশু পরিবার ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হয়। দেশের বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হয়।

আমাদের সাভার সংবাদদাতা জানান, রাষ্ট্রপতি ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শ্রদ্ধা জানানোর পরে জাতীয় স্মৃতিসৌধের মূলফটক খুলে দেয়া হয় সর্বসাধারণের জন্য। এর পরে সেখানে নামে হাজারো মানুষের ঢল। ভোরের আলো ফুটে ওঠার আগেই শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা স্মৃৃতিসৌধের আশপাশে জমায়েত হন। ছোট-বড় সব বয়সীর হাতে লাল সবুজের পতাকা আর রঙ-বেরঙয়ের ফুল, হৃদয়ে গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় ফুলে ফুলে ঢেকে যায় জাতীয় স্মৃতিসৌধের মূল শহীদ বেদি। একে একে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও ছাত্র সংসদ, বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল এবং ছাত্র সংসদ, জাবি সাংবাদিক সমিতি, প্রাণিসম্পদ অধিদফতর, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, জাসদ, জাতীয় যুবজোট, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা জেলা বিএনপি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, ভিপি সাদিক কায়েমের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু), ঢাকা জেলা যুবদল, সাভার থানা যুবদল, বাংলাদেশ প্রাক্তন সৈনিক সঙ্ঘ সাভার উপজেলা, কর্মসংস্থান ব্যাংক, বাঁধন, ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল, ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব), নবীন সংগ্রাম পরিষদ ঢাকা, ন্যাশনাল পিপল্স পার্টি (এনপিপি), আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, ঢাকা সিটি কলেজ, ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রদল, জাতীয় গামের্ন্টস শ্রমিক জোট বাংলাদেশ, গণ সংহতি আন্দোলন জিএসএ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটি, প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র, বাংলাদেশ গণ অধিকার পরিষদ ঢাকা জেলা উত্তর, এডাব (এসোসিয়েশন অব ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিজ ইন বাংলাদেশ, জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, সাভার প্রেস ক্লাব, বাংলাদেশ কৃষিব্যাংক, সোনালী ব্যাংক-পিএলসি, নাগরিক ঐক্য, নাগরিক ছাত্র ঐক্য, বাংলা একাডেমি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় ছাত্র শক্তি, বাংলাদেশের উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, সড়ক ও জনপথ অধিদফতর, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, গণফোরামসহ বিভিন্ন সংগঠন শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এ দিন জাতীয় স্মৃৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে আসা মানুষের হাতে ফুল, ব্যানার ও ফেস্টুন দেখা গেছে। তারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বীর সন্তানদের শ্রদ্ধা জানায়। এতে বীর শহীদদের বেদি ফুলে ফুলে ভরে যায়। অন্য যেকোনো বছরের তুলনায় এ বছর জাতীয় স্মৃৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে আসা মানুষের সংখ্যা ছিল বেশি।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর এক অবিস্মরণীয় বীরত্বগাথা গৌরবময় দিন। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সব লাঞ্ছনা, শোষণ ও বঞ্চনার অবসান ঘটিয়ে এদিন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর কাছ থেকে কাক্সিক্ষত বিজয় অর্জিত হয়। সেদিন বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে।

চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রামে বীর শহীদদের শ্রদ্ধায় বিজয় দিবসের কর্মসূচি শুরু হয় সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কাট্টলীস্থ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে ৩১ বার তোপধ্বনি ও পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্যদিয়ে।

সিটি মেয়র ডা: শাহাদাত হোসেন ও বিভাগীয় কমিশনার ড. মো: জিয়াউদ্দীন প্রথমে স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পর্যায়ক্রমে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা, চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মো: আহসান হাবীব পলাশ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন সরকারি, আধা-সরকারি স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনসাধারণ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সিটি মেয়ের ডা: শাহাদাত হোসেন উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, আমি তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই যাদের রক্ত ও ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা লাল-সবুজের পতাকা পেয়েছি। আমাদের এখন মানুষের মৌলিক চাহিদা,গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য কাজ করে যেতে হচ্ছে। আমরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি তাকে ধরে রাখতে পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

বিভাগীয় কমিশনার ড. মো: জিয়াউদ্দীন বলেন, ২০২৫-এর আজকের এই দিনটি আমাদের জাতির জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ এবং বিজয়ের দিন। অন্যান্য বারের চেয়ে এবারে আমাদের প্রত্যাশা সবচেয়ে বেশি কেননা আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গঠনের পথে যাত্রা শুরু করেছি যেখানে মানুষের আশা- আকাক্সক্ষার প্রতিফলনকে বাস্তবায়নের দিকে আমরা অগ্রসর হতে পারব।

রংপুর ব্যুরো জানায়, ঐক্যবদ্ধভাবে গণতান্ত্রিক উত্তরণের মাধ্যমে বাংলাদেশ নিজস্ব স্বকীয়তায় সারা বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে বলে মন্তব্য করেছেন রংপুরের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। বিজয় দিবসের নানা আয়োজনে অংশ নিয়ে তারা এ কথা বলেন।

গতকাল সকাল ৬টা ৪২ মিনিটে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রংপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম, সিটি করপোরেশনের প্রশাসক আশরাফুল ইসলাম, ডিআইজি আমিনুল ইসলাম ইসলাম, মহানগর পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী, ডিসি মোহাম্মদ এনামুল আহসান, এসপি মারুফাত হোসাইনসহ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা। পরে এক মিনিটের নিরবতা পালন এবং গার্ড অব অনার দেয়া হয় শহীদদের উদ্দেশ্যে।

পরে বিভিন্ন শ্রেণী, পেশা এবং রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। সকাল ৯টায় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় ৪৩টি সংগঠনের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য কুচকাওযাজ। এ ছাড়াও ডিসপ্লেতে পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অংশ নিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধ, জুলাই বিপ্লবসহ বিভিন্ন সামাজিক অসঙ্গতি ও উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা। বেলা সাড়ে ১১টায় শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে দেয়া হয় মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা। এ সময় তাদের হাতে ফুল ও উপহার সামগ্রী তুলে দেন অতিথিরা। দুপুর ১২টা থেকে রংপুর জিলা স্কুলে শুরু হয় তিন দিনব্যাপী বিজয় মেলা। এ ছাড়াও মধ্যরাতে বিএনপি, এনসিপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান শহীদ মিনারে। বেলা ১১টায় জামায়াত, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠন নগরীতে বিজয় মিছিল বের করে। প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানে ’৭১ ও ’২৪-এর আকাক্সক্ষা বাস্তবায়নের ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন সবাই অংশগ্রহণকারীরা।

সিলেট ব্যুরো জানায়, সিলেটে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে ৩১ বার তোপধ্বনি, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন এবং বিভিন্ন বাহিনী ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে কুচকাওয়াজ ও দেশাত্মবোধক ডিসপ্লে প্রদর্শন করা হয়। সিলেট জেলা প্রশাসক মো: সারওয়ার আলমের সভাপতিত্বে কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার খান মো: রেজা-উন-নবী।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিভাগীয় কমিশনার বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী অর্ধ শতাব্দীর বেশি সময়কালের শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থার সব প্রতিকূলতা, প্রতিবন্ধকতা ও ব্যর্থতাকে অতিক্রম করে গভীর দেশপ্রেম, জাতীয় ঐক্য ও রাষ্ট্র সংস্কারের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দারিদ্য বিমোচন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, খাদ্যনিরাপত্তা, সুশাসন, নারীর ক্ষমতায়ন ও সবার জন্য মানসম্মত শিক্ষাসহ মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে স্বনির্ভর বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধে সিলেটের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে সভাপতির বক্তৃতায় জেলা প্রশাসক বলেন, সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় এই অঞ্চলটি ছিল একটি ভরসার জায়গা। সিলেটের মানুষ মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়, খাদ্য ও আহতদের চিকিৎসাসহ সর্বক্ষেত্রে সাহসের সাথে সাহায্য করে গিয়েছেন। অনেক তরুণ সিলেট সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে অনেকে বিজয়ের আনন্দ নিয়ে ফিরেছেন আবার অনেকে ফিরে আসেননি। দেশের জন্য নিজের জীবনটুকু বিলিয়ে দিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে রেঞ্জ ডিআইজি মো: মুশফেকুর রহমান, পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুছ চৌধুরী, পুলিশ সুপার আখতার উল আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ, সরকারি-বেসরকারি দফতরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, শিশু-কিশোর সংগঠনের সদস্যবৃন্দসহ ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সংবাদকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় বাংলাদেশ পুলিশ, বাংলাদেশ আনসার-ভিডিপি, বাংলাদেশ জেল, রোভার স্কাউট, স্কাউট, গার্লস গাইড, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ করে।

বগুড়া অফিস জানায়, বগুড়ায় যথাযোগ্য মর্যাদায় ৫৪তম মহান বিজয় দিবস ’২৫ উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে সরকারি ও বেরকারি পর্যায়ে নানা কর্মসূচি পালিত হয়। এসব কর্মসূচিতে সব বয়সী মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

জেলা প্রশাসন : বগুড়া জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমানের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ সুপার শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে জেলা পুলিশ বিভাগ, বিভিন্ন সরকারি দফতর, পৌরসভা, সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তির ফুলবাড়ীস্থ শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্প মাল্য অর্পণ, র‌্যালি, আলোচনা সভা, মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা, শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে শিক্ষার্থী সমাবেশ, কুজকাওয়াজ, ডিসপ্লে অনুষ্ঠিত হয়।

বিএনপি : জেলা বিএনপির উদ্যোগে সকালে পুষ্পমাল্য অর্পণ, র‌্যালি, আলোচনা সভা, অনুষ্ঠিত হয়। এসব অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, কেন্দ্রীয় সদস্য ভিপি সাইফুল ইসলাম, জয়নাল আবেদীন চাঁন, আলী আজগর হেনা, সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান খান মুক্তা, এম আর ইসলাম স্বাধীন, মাফতুন আহমেদ খান রুবেল, সহিদ উন নবী সালামসহ জেলা নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।

জামায়াতে ইসলামী : শহর জামায়াতের উদ্যোগে বিকেলে আইন কলেজ চত্বরে এক আলোচনা সভা শহর আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আবিদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন শহর সেক্রেটারি অধ্যাপক আ স ম আব্দুল মালেক, নায়েবে আমির আব্দুল হালিম বেগ, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম অধ্যাপক আব্দুস সালাম তুহিন, আব্দুল হামিদ বেগ প্রমুখ।

পেশাজীবী সংগঠন : বগুড়া প্রেস ক্লাব ও সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়ার নেতৃবৃন্দ সকালে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রেজাউল হাসান রানু, কালাম আজাদ, গণেশ দাস ও আবু সাইদসহ উভয় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

ছাত্রশিবির : মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে সাক্ষাৎ ও বীর শহীদদের কবর জিয়ারত করেন ইসলামী ছাত্রশিবির বগুড়া শহর শাখার নেতৃবৃন্দ। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কার্যকারি পরিষদের সদস্য ও বগুড়া শহর সভাপতি হাবিবুল্লাহ খন্দকার, অফিস সম্পাদক সজিবুল ইসলাম সজিব প্রমুখ।

খুবি প্রতিনিধি জানান, যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বিপুল উৎসাহ- উদ্দীপনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সম্মুখে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।

পরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ভিসি প্রফেসর ড. মো: রেজাউল করিম সর্বপ্রথম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। শ্রদ্ধা নিবেদনকালে প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মো: হারুনর রশীদ খান, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো: নূরুন্নবী, বিভিন্ন স্কুলের ডিনরা, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত), ছাত্রবিষয়ক পরিচালক ও প্রভোস্টরা উপস্থিত ছিলেন।

গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি জানান, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাউবি) মহান বিজয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে।

দিনের শুরুতে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে গাজীপুর ক্যাম্পাসে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। পরে সকাল ৮টায় ভিসি অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন, প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহা: শামীম, রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক মো: আনিছুর রহমানসহ বিভিন্ন স্কুলের ডিন, বিভাগীয় পরিচালক, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

এ দিকে যথাযোগ্য মর্যাদা ও বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস ২০২৫ উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি পালন উপলক্ষে এ দিন সূর্যোদয়ের সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও গার্ড অব অনার প্রদান এবং বিশেষ মুনাজাত এবং আলোকজ্জ্বাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়।

সকালে বারির প্রধান কার্যালয়ের সামনে সূর্যোদয়ের সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচির সূচনা করেন বারির মহাপরিচালক ড. মো: আবদুল্লাহ ইউছুফ আখন্দ। এ সময় আনসার সদস্যদের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। বারির পরিচালক (সেবা ও সরবরাহ) ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ; পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও যোগাযোগ) ড. মুহাম্মদ আতাউর রহমান; পরিচালক (পরিকল্পনা ও মূল্যায়ন উইং) ড. মো: মাজহারুল আনোয়ার; পরিচালক (তৈলবীজ গবেষণা কেন্দ্র) ড. মো: মন্জুরুল কাদির; পরিচালক (কন্দাল ফসল গবেষণা কেন্দ্র) ড. মো: আলতাফ হোসেন; পরিচালক (উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র) ড. ফারুক আহমেদ; বিভাগের বিভাগীয় প্রধানরা, ইনস্টিটিউটের সর্বস্তরের বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিক, বিএআরআই উচ্চবিদ্যালয় এবং আনন্দ শিশুকাননের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

পাবিপ্রবি প্রতিনিধি জানান, যথাযোগ্য মর্যাদায় পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। বিজয়ের ৫৫ বছরে পদার্পণের এই ঐতিহাসিক দিনে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

মঙ্গলবার সকাল ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে কর্মসূচির সূচনা হয়।

এরপর প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মো: নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে একটি বিজয় র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিতে উপস্থিত ছিলেন- রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম, প্রক্টর অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান খান, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দফতরের পরিচালক অধ্যাপক ড. রাশেদুল হকসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। র‌্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে স্বাধীনতা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

পরে স্বাধীনতা চত্বরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মো: নজরুল ইসলাম ও রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।