নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম হারমোনিওএসের মাধ্যমে নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেছে চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। গবেষণা সংস্থা ক্যানালিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত হারমোনিওএস চালিত ১০ কোটি ৩০ লাখের বেশি স্মার্টফোন বাজারে ছেড়েছে হুয়াওয়ে। এর মধ্যে শুধু গত বছরেই চার কোটি ৬০ লাখ হারমোনিওএস যুক্ত স্মার্টফোন বাজারে ছাড়ে কোম্পানিটি। আন্তর্জাতিক বাজারে সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও চীনের ঘরোয়া বাজারে হুয়াওয়ের চাহিদা ও অবস্থান শক্তিশালী। প্রতিষ্ঠানটির একক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে হারমোনিওএস ধীরে ধীরে চীনের প্রযুক্তি ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে নিচ্ছে। হুয়াওয়ের বর্তমান কৌশল শুধু সফটওয়্যারের সংখ্যা বাড়ানো নয়; বরং একটি পূর্ণাঙ্গ ইকোসিস্টেম তৈরি করায় চীনের প্রযুক্তি স্বনির্ভরতার লক্ষ্যকে এগিয়ে নিচ্ছে। নতুন সংস্করণের আগমনের প্রস্তুতির পাশাপাশি স্মার্টফোন, ট্যাবলেট ও পিসি খাতে বিক্রি বাড়তে থাকায় হুয়াওয়ে নিজেকে চীনের শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হিসেবে আরো সুদৃঢ় করছে। শুধু স্মার্টফোন নয়, হুয়াওয়ের ট্যাবলেটেও হারমোনিওএস ব্যবহৃত হচ্ছে উল্লেখযোগ্য হারে। ক্যানালিসের তথ্য অনুসারে, এখন পর্যন্ত মোট দুই কোটি ১০ লাখ হারমোনিওএস চালিত ট্যাবলেট বাজারজাত করেছে হুয়াওয়ে, যার মধ্যে ২০২৪ সালেই বিক্রি হয়েছে ১০ লাখ ৫০ হাজার ইউনিট। ২০১৯ সালে চালুর পর ২০২১ সালের মাঝামাঝি থেকেই হুয়াওয়ের বেশির ভাগ ভোক্তাপণ্যে নিয়মিতভাবে ব্যবহার হচ্ছে হারমোনিওএস। স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট ছাড়াও বর্তমানে হুয়াওয়ের স্মার্টওয়াচ, অডিও ডিভাইস, স্মার্ট হোম গ্যাজেট ও পিসিতেও এ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হচ্ছে। চীনে হুয়াওয়ে এ পর্যন্ত ৪২ লাখ কম্পিউটার বাজারে ছেড়েছে, যার মধ্যে ৩২ লাখই ছিল ল্যাপটপ। যদিও পারসোনাল কম্পিউটার (পিসি) খাতে হুয়াওয়ের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে ছোট, তবে প্রতিষ্ঠানটির হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের ওপর একক নিয়ন্ত্রণ বাজারে বাড়তি সুবিধা তৈরি করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে গুগল সার্ভিসের অনুপস্থিতি ও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে হুয়াওয়ে কিছু সীমাবদ্ধতার মুখে পড়েছে। তবে দেশের বাজারে প্রতিষ্ঠানটি অ্যান্ড্রয়েড ও উইন্ডোজের ওপর নির্ভর না করে নিজস্ব একটি বিকল্প প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।



