কুয়েট প্রশাসন শেষ পর্যন্ত সব দাবি মেনে নিয়ে হল খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও আমরণ অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেননি আন্দোলনরত খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা উপদেষ্টার অনুরোধও মানেনি তারা। তাদের দাবি এক দফা এখন ভাইস চ্যান্সেলরের পদত্যাগ। ৩৭ শিক্ষার্থীর সাময়িক বহিষ্কারাদেশের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সাথে খুলে দেয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি আবাসিক হল। গতকাল বুধবার দুপুরে সিন্ডিকেটের ১০২তম জরুরি সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে ভার্সিটির রেজিস্ট্রার মো: আনিছুর রহমান ভূঞা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এর আগে গত ১৩ এপ্রিল হল খুলে দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ এবং ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তখন ২ মে হল খোলার সিদ্ধান্ত নেয়। এ দিকে দোষী প্রমাণিত না হলে চাপ প্রয়োগ করে ভিসির অপসারণ মেনে নেবে না বলে সংবাদ সম্মেলন করেছে শিক্ষক সমিতি।
কুয়েট শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে এরই মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে, কাস বর্জন করেছে। আবার কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অনশন কর্মসূচিও পালন করছেন। সবার দাবিই এখন কুয়েট ভিসির পদত্যাগ। শিক্ষাঙ্গন সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্র্তৃপক্ষ সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারলে পরিস্থিতি এত জটিল আকার ধারণ করতো না। তারা মনে করেন, শিক্ষার্থীদের অনড় অবস্থানে নেয়ার পেছনে দায় এড়াতে পারে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষা উপদেষ্টা যখন শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছেন তখন পানি অনেক দূর গড়িয়ে গেছে। ফলে তার উদ্যোগও ফলপ্রসূ হয়নি। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শিক্ষার্থীরা ভিসির পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ক্যাম্পাসে কফিন মিছিল বের করে। স্টুডেন্ট ওয়েল ফেয়ার সেন্টার থেকে কফিন মিছিলটি বের হয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।
গতকাল বুধবার সকাল পৌনে ১০টায় অনশনস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের অনশন থেকে সরে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুর আববার। শিক্ষা উপদেষ্টা বিমানযোগে যশোর হয়ে সড়কপথে খুলনায় এসেই সরাসরি চলে যান কুয়েটের অনশনস্থলে। সেখানে পৌঁছে প্রথমেই তিনি শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, তোমাদের দাবি যৌক্তিক, কিন্তু একটু সময় দাও, আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টির সন্তোষজনক সমাধানের। অনশন প্রত্যাহার করে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আহ্বান জানান তিনি। কিন্তু শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমাদের সময় শেষ। প্রথমে ছিল ছয় দফা, তখন আলোচনার সুযোগ ছিল। কিন্তু কর্র্তৃপক্ষ আলোচনার প্রয়োজন মনে করেননি। এরপর সবার সাথে আলোচনা করেই আমরা অনশন শুরু করেছি। এখন ভিসির পদত্যাগ ছাড়া আমরা অনশন থেকে সরে দাঁড়াব না।
উপদেষ্টা এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘বিনীত অনুরোধ’ জানিয়ে বলেন, অতিদ্রুত একটি ব্যবস্থা করা হবে। তোমাদের নিয়ে অভিভাবকরাও উদ্বিগ্ন। আমরাও তোমাদের অভিভাবক। এ সময় শিক্ষার্থীরা রক্তাক্ত কুয়েট নামের ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ঘটে যাওয়া এ পর্যন্ত সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন; যার একটি কপি উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করা হয়। শিক্ষার্থীরা উপদেষ্টার উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি ভিসিকে সরায়ে দেন স্যার, যে ভিসি আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছেন, বহিষ্কার করেছেন তার অপসারণ ছাড়া সরব না। সকাল ১০টা ১৪ মিনিটে সেখান থেকে বের হয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙানোর জন্য এসেছিলাম। অনুরোধ করেছি। তারা শোনেনি। ঢাকায় ফিরে যত দ্রুত সম্ভব এর একটি সমাধান করা হবে। এরপর উপদেষ্টা সেখান থেকে বের হয়ে ফরিদপুরের উদ্দেশে রওনা দেন।
এ দিকে গতকাল দুপুরে সিন্ডিকেটের ১০২তম জরুরি সভার পর ভার্সিটির ইস্যু করা বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত ১৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১০১তম জরুরি সভার সিদ্ধান্তে মোতাবেক আগামী ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রকার অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালু করা এবং ২ মে আবাসিক হলগুলো খোলার সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু গতকাল অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১০২তম জরুরি সভার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো ২ মের পরিবর্তে আজ (বুধবার) বিকেলেই খুলে দেয়া হয়।
এ ছাড়া কুয়েটের উদ্ভূত পরিস্থিতি বিশ্লেষণ ও শিক্ষার্থীদের দাবি পর্যালোচনা করতে গতকাল কুয়েট শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) প্রতিনিধিদল। তিন সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তনজিমউদ্দীন খান, বুয়েটের অধ্যাপক সাইদুর রহমান এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্মসচিব আহমেদ শিবলী। প্রতিনিধিদলের সসদস্যরা প্রথমেই অনশনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন। এ সময় তারা শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙানোর চেষ্টা চালিয়ে একজনকে অনশন থেকে সরিয়ে আনতে সফল হন। অন্য শিক্ষার্থীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যেতে দৃঢ় থাকেন। পরে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন। দীর্ঘ দুই ঘণ্টার এ বৈঠকে শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর সংঘটিত হওয়া হামলা, তাদের আন্দোলন ও দাবিগুলো তুলে ধরেন।
অন্য দিকে গতকাল দুপুরে কুয়েটের প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দোষী প্রমাণিত না হলে চাপ প্রয়োগ করে ভিসির অপসারণ মেনে নেবে না শিক্ষক সমিতি। তারা বলেন, ছাত্রদের ওপর আক্রমণ ও শিক্ষক লাঞ্ছনাকারীদের যথোপযুক্ত শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা কোনো ধরনের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবে না।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা আরো বলেন, শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললেও শিক্ষকদের সাথে কথা বলেননি। এতে আমরা ব্যথিত হয়েছি। অল্প কয়েকজন মিছিল করলে সাংবাদিকরা নিউজ করে যে কুয়েট উত্তাল, অথচ কুয়েটে শিক্ষার্থী পাঁচ হাজারেরও বেশি। শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের রাজনৈতিক ট্যাগ দিচ্ছে, যা দুঃখজনক। কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী ভিসিকে মারধর করেছে। কয়েকজন শিক্ষক লাঞ্ছিত হয়েছেন, তাদের নিয়ে কটূক্তি করা হয়েছে। শিক্ষকরা এসবের বিচার দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: সাহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো: ফারুক হোসেন, অধ্যাপক ড. আশরাফুল গণি ভূঁইয়া প্রমুখ।
আমরণ অনশনে বাগছাস ঢাবি সংসদ
ঢাবি প্রতিনিধি জানান, খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অনশনরত শিক্ষার্থীদের এক দফা ভিসি অধ্যাপক মাসুদকে অপসারণের দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও (ঢাবি) চলছে আন্দোলন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক বিভিন্ন প্লাটফর্ম থেকে আয়োজিত হচ্ছে এ আন্দোলন ।
এ দিকে কুয়েট শিক্ষার্থীদের এক দফা দাবির সাথে সংহতি প্রকাশ করে আমরণ অনশন কর্মসূচি দিয়েছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) ঢাবি সংসদ। গত মঙ্গলবার রাত ১০টায় এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন ঢাবি বাগছাসের সদস্যসচিব মহির আলম। বর্তমানে সদস্যরা টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে কুয়েট ভিসির পদত্যাগের দাবিতে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন।
গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম সদস্যসচিব তরিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, যতক্ষণ কুয়েট ভিসি পদত্যাগ না করবে ততক্ষণ অনশন চলবে। তিনি বলেন, কুয়েটে সন্ত্রাসী আক্রমণের ন্যায্য বিচার হয়নি।কুয়েট ভিসি হল বন্ধ করে দেয়, আমাদের ভাইদেরকে হল বন্ধ করে বের করে দেয়া হয়, মিথ্যা মামলা দেয়া হয়, এর প্রতিবাদে দুই দিন তারা আমরণ অনশন করছে, ৪৮ ঘণ্টা না খেয়ে ব্যাপকভাবে অসুস্থ অনেকে। আমরা কুয়েটের ভাইদের সাথে একাত্মতা পোষণ করে আমরাও আমরণ অনশনে বসেছি।
ঢাবি বাগছাসের আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার ক্যাম্পাসগুলোতে ভয় এবং দাসত্বের রাজনীতি কায়েম করেছিল। ২৪-এর আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা রক্ত দিয়ে, পঙ্গুত্ববরণ করে, সেই সংস্কৃতিকে হটিয়ে দেয়। ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি নতুন চেতনা জাগ্রত হয়েছে শিক্ষাঙ্গনে আর দাসত্বের রাজনীতি, কুক্ষিগত করে রাখার রাজনীতি থাকবে না। কিন্তু কুয়েটে যখন শিক্ষার্থীরা দলীয় ছাত্র রাজনীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করলো তখন ছাত্রদল স্থানীয় দলীয় লোকদের আক্রমণ করে শিক্ষার্থীদেরকে আহত করলো। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কিন্তু কোনো ধরনের নিরাপত্তা দিতে পারেনি।
হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের সংহতি সমাবেশ
হাবিপ্রবি প্রতিনিধি জানান, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার না করে উল্টো হামলার শিকার হওয়া ২৭ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করায় কুয়েট ভিসির পদত্যাগের দাবিতে সংহতি সমাবেশ পালন করেছেন দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গতকাল বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এ সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সংহতি সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের রক্তের ওপর দিয়েই তারা আজকে ক্ষমতার চেয়ারে বসতে পেরেছেন। কুয়েটে সেই শিক্ষার্থীদেরই আবার রক্ত ঝড়ানো হয়েছে। আমরা হাবিপ্রবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা কুয়েট শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি জানাচ্ছি। আমরা আরও বলে দিতে চাই, আজকের মধ্যেই যদি এই দলকানা ভিসি পদত্যাগ না করেন তাহলে আমরা আগামীকাল থেকে কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো। শুধু তাই নয়, প্রয়োজনে আমরা আমাদের ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়ক অবরোধ করবো।’
শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা হয়েছে তা তদন্ত না করে উল্টো ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ যেভাবে মানুষকে গ্রেফতার, হামলা-মামলা করে দমিয়ে রাখতো। কুয়েটের ভিসিও তেমনটি করছেন, আমরা এ জন্য লজ্জিত।’
এ দিকে কুয়েট ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থী বোরহান আহমেদ রাকিব। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সম্মুখে আমরণ অনশনে বসেন তিনি। বোরহান আহমেদ রাকিব বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী। এর আগে গত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে অনশনে বসার ঘোষণা দেন তিনি।
মাভাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন
মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি জানান, কুয়েটে চলমান ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে গতকাল টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।
গতকাল সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম গেটের সম্মুখে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে আয়োজিত সমাবেশে শিক্ষার্থীরা কুয়েটের চলমান আন্দোলনকে ‘ন্যায়সঙ্গত’ ও ‘সময়োপযোগী’ উল্লেখ করে বলেন, ‘যেখানে শিক্ষার্থীদের কথা গুরুত্ব পাচ্ছে না, সেখানে ঐক্যই হলো আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।’ সমাবেশে বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য দেন।
বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা কুয়েটের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার ঘোষণা দেন এবং সরকারের প্রতি অবিলম্বে সঙ্কট সমাধানের আহ্বান জানান।
অনশনে ইবি সমন্বয়ক
ইবি প্রতিনিধি জানান, কুয়েট ভিসির পদত্যাগের দাবিতে অনশনে বসেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) সমন্বয়ক এস এস সুইট। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অনশনে বসেন তিনি। তার সঙ্গে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী। এর আগে মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে অনশনে বসার ঘোষণা দেন সুইট। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কুয়েট শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসীদের হামলার শাস্তি নিশ্চিত না করে প্রশাসন কর্তৃক শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের মাধ্যমে কুয়েট ভিসি তার পদে থাকার নৈতিক যোগ্যতা হারিয়েছেন। তার পর লম্বা সময় পেরিয়ে গেলেও এর আসু সুরাহা করতে ব্যর্থ হয়েছে কুয়েট প্রশাসন।
সাভারে প্রতীকী অনশন
সাভার (ঢাকা) সংবাদদাতা জানান, সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাকিজা সংলগ্ন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাভারের প্রথম শহীদ ইয়ামিন চত্বরে গতকাল বুধবার সকাল ৭ টা থেকে দুপুর পৌনে ৩টা পর্যন্ত কুয়েটে চলমান আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে এবং অবিলম্বে কুয়েটের ভিসির পদত্যাগের দাবিতে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, সাভার উপজেলা ব্যানারে প্রতীকী অনশন পালন করেন কয়েকজন শিক্ষার্থী।