সাবা কামার

নীরবতা ভেঙে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলুন

এমন অনেক দিন ছিল যখন তার কাছে সব কিছু ‘ভারী’ মনে হতো এবং তিনি জানতেন না কার কাছে যাবেন। তবে তিনি জানান, সুস্থতা আসে কেবল যোগাযোগ স্থাপন করে, নিজের অনুভূতিগুলো নিয়ে কথা বলে এবং কিছু ছোট, স্থির রুটিন মেনে চলার মাধ্যমে।

সাকিবুল হাসান
Printed Edition
পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাবা কামার
পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাবা কামার

অক্টোবর মাসটি হলো বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্যসচেতনতা মাস। এ উপলক্ষে পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেত্রী এবং ইউনিসেফ পাকিস্তানের শিশু অধিকারের প্রথম জাতীয় অ্যাম্বাসেডর সাবা কামার সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে একটি মর্মস্পর্শী ভিডিও বার্তা শেয়ার করেছেন। তিনি সবাইকে মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব নিয়ে কথা বলা বিশেষত শিশুদের আবেগীয় জগতের প্রতি মনোযোগ দেয়ার অনুরোধ করেছেন।

সাবা কামার পাকিস্তানের অন্যতম জনপ্রিয় ও সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেত্রী। যিনি ‘বাগি’ নাটকে কান্দিল বালোচের চরিত্রে অভিনয় এবং বলিউডে ইরফান খানের বিপরীতে ‘হিন্দি মিডিয়াম’ চলচ্চিত্রে অভিনয় তাকে আন্তর্জাতিক খ্যাতি এনে দেয়। নিজের বার্তায় সাবা কামার স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, সমাজে মানসিক স্বাস্থ্যকে এখনো ফিসফিস করে বলার বা লুকিয়ে রাখার মতো বিষয় হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। তিনি বলেন, ‘আমরা মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে যথেষ্ট কথা বলি না। আর যখন বলি, তখন তা প্রায়ই ফিসফিস করে বলা হয়, যেন এটি লুকানোর কিছু; কিন্তু এটি তা নয়। মানসিক স্বাস্থ্য শারীরিক স্বাস্থ্যের মতোই গুরুত্বপূর্ণ।’

সাবা কামার তার নিজ জীবনের অভিজ্ঞতাও খোলাখুলিভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি স্বীকার করেছেন, এমন অনেক দিন ছিল যখন তার কাছে সব কিছু ‘ভারী’ মনে হতো এবং তিনি জানতেন না কার কাছে যাবেন। তবে তিনি জানান, সুস্থতা আসে কেবল যোগাযোগ স্থাপন করে, নিজের অনুভূতিগুলো নিয়ে কথা বলে এবং কিছু ছোট, স্থির রুটিন মেনে চলার মাধ্যমে।

সাবা কামার বলেন, ‘আমার প্রার্থনা করা, জার্নালিং করা, পড়া, ব্যায়াম করা, ছবি আঁকা এবং এমনকি গান শোনা এই অভ্যাসগুলোই আমাকে শান্ত রাখে।’ এই অভিনেত্রী বিশেষভাবে বাবা-মা, শিক্ষক এবং পরামর্শদাতাদের প্রতি শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তার মতে, ‘কখনো কখনো, কেবল একটি শিশুর কথা শোনা বা তাদের অনুভূতিকে বৈধতা দেয়াই সবচেয়ে বড় পার্থক্য গড়ে তুলতে পারে।’

ইউনিসেফ পাকিস্তানের সাথে তার এই অংশীদারত্বের মাধ্যমে তিনি শিশু মানসিক স্বাস্থ্যের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর আলো ফেলা অব্যাহত রেখেছেন, যা আজো অনেক সমাজে কলঙ্কের দ্বারা বেষ্টিত।

তার এই বার্তাটি সহমর্মিতা ও সংযোগের মাধ্যমে নিরাময় শুরু করার একটি জোরদার আহ্বান। তিনি শেষ করেছেন এই বলে- ‘চলুন, আমরা কথা বলতে থাকি, শুনতে থাকি এবং একে অপরকে মনে করিয়ে দিতে থাকি, এটি ঠিক আছে যে- আপনি ভালো নেই।’