নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রতিরোধযোগ্য হলেও অক্টোবরের গত ১৮ দিনে ডেঙ্গু জ্বরে ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া গতকাল রোববার সকাল পর্যন্ত সারা দেশে ৯৫০ ডেঙ্গু আক্রান্তকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় অবশ্য একজনের মৃত্যু হয়েছে। বরিশাল মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন ছিলেন ৬২ বছর বয়সের বরিশাল বানারি পাড়ার একজন পুরুষ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। সারা দেশে গত জানুয়ারি থেকে ৫৯ হাজার ৮৪৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এবং সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন ৫৬ হাজার ৮১১ জন। বাকিরা এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ডেঙ্গু আক্রান্তদের ৬৪.৩ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৫.৭ শতাংশ নারী। অপর দিকে মৃতদের ৫৩.১ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৬.৯ শতাংশ নারী। সারা দেশে যে ২৪৫ জন ডেঙ্গুতে ভোগে মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ১২২ জন, ঢাকা উত্তর সিটি ৩৩ জন, বরিশাল বিভাগের হাসপাতালে ৩৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের হাসপাতালে ২৫ জন, রাজশাহী বিভাগের হাসপাতালে ১১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগের হাসপাতালে ৮ জন, খুলনা বিভাগের হাসপাতালে ৭ জন এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের বাইরে ঢাকা বিভাগের অন্যান্য হাসপাতালে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ডেঙ্গু একটি খুবই আলোচিত রোগ হলেও জনগণের মধ্যে বাড়েনি তেমন সচেতনতা। ‘জ্বর হলেই ডাক্তারের পরামর্শে ডেঙ্গু পরীক্ষাটি করে নেয়া উচিত এবং সেই অনুযায়ী প্রথম থেকেই চিকিৎসার আওতায় থাকলে ডেঙ্গু থেকে সুস্থ হওয়া খুবই সহজ’ এ ধরনের সচেতনতা সবার কাছে এখনো পৌঁছেনি। যে কারণে মানুষ এখনো মশারি ছাড়া ঘুমিয়ে থাকে দিনের বেলা। এমনকি এক শ্রেণীর মানুষ রাতের বেলাও মশারি ছাড়া ঘুমাচ্ছে এই চিন্তায় যে মশা নেই, মশা তাকে কামড়ায় না অথবা খুবই কম মশা। এই ধরনের সাধারণ অসচেতনতা দুর করার কার্যকর প্রচার নেই। ফলে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গতকাল রোববার সকাল পর্যন্ত দেশে ২৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গুতে। তবে এটা ঠিক যে, সব ধরনের সচেতনতা ও ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে প্রতি সব ধরনের প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেয়া সত্ত্বেও অনেকে বাড়িতে অথবা কর্মক্ষেত্রে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানান চিকিৎসকরা।
চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গু রোগ এখন আর ভয়াবহ কিছু নয়। প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা নিলে স্বল্প খরচেই রোগ থেকে সুস্থ হওয়া যাচ্ছে। কিন্তু রোগীদের জ্বরের শুরুতেই ডাক্তারের কাছে আসতে হবে। তাছাড়া জ্বর হলে প্রচুর তরল পান করতে হবে, বেশি বেশি করে তরল পান করলে ভাইরাসের ঘনত্ব কমে আসে, ফলে রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে যায়। তা ছাড়া কোনো জটিলতা দেখা দিলে অথবা বৃদ্ধ বয়সে ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে একটু জটিলতা দেখা দেয় সে ক্ষেত্রে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে অবশ্যই চিকিৎসা নিতে হবে।



