ভোলা জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নবিষয়ক মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় জেলা প্রশাসক মো: আজাদ জাহানের সভাপতিত্বে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফায়জুল কবির খান, শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন।
জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান মতবিনিময় সভায় গৃহস্থালীর কাজে গ্যাস সংযোগ দেয়া হবে না এবং শিগগিরই ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হচ্ছে না বলে বক্তব্য রাখলে সভায় উপস্থিত ভোলার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে তারা নানা স্লোগানে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া করতে থাকেন। মতবিনিময় সভায় তোপের মুখে পড়েন বিদ্যুৎ জ্বালানি খনিজস¤পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান এবং বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। পরে উপদেষ্টারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ত্যাগ করার সময় তাদের গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকে। পরে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী গোলাম নবী আলমগীর ও পুলিশের হস্তক্ষেপে বিক্ষোভকারীরা সরে গেলে উপদেষ্টারা সভাস্থল ত্যাগ করেন।
ভোলা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুর রহমান কিরন, সদস্যসচিব রাইসুল আলম, যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির সোপান, এনামুল হক, ভোলা জেলার প্রবীণ সাংবাদিক দৈনিক আজকের ভোলার সম্পাদক আলহাজ শওকত হোসেন, ইন্ডিপেনডেন্ট টিভির জেলা প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট নজরুল হক অনু, জেলা জামিয়াতুল মোদাররেছিনের সাধারণ সম্পাদক মোবাশ্বিরুল হক নাইম, ইসলামী আন্দোলনের তরিকুল ইসলাম, তরুণ উদ্যোক্তা ইঞ্জিনিয়ার হেদায়েত আলী অরুন।
এর আগে ভোলার প্রাকৃতিক গ্যাসকে কাজে লাগিয়ে দ্বীপজেলা ভোলায় ইউরিয়া সার কারখানা স্থাপনের সম্ভাব্য জায়গা পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তিন উপদেষ্টা। তারা হলেন, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন।
গতকাল দুপুরে প্রথমে ভোলার ভেদুরিয়া ফেরিঘাট-সংলগ্ন তেঁতুলিয়া নদীতীর এলাকায় একটি জায়গা পরিদর্শন করেন। এরপর বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার আমিনাবাদ ইউনিয়নে আরেকটি জায়গা পরিদর্শন করেন উপদেষ্টারা।
পরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, আমরা দু’টি জায়গা দেখলাম, এর মধ্যে ফিজিবল যেটা সেটা আমরা নেব। আমরা চেষ্টা করব নতুন কোনো জায়গা যেন অধিগ্রহণ করতে না হয়। বিভিন্ন জেলায় তো অধিগ্রহণ করা খাস জমি আছে, তো ওইটাই যেন আমরা কাজে লাগাতে পারি সেজন্য আরেকটু পরীক্ষার দরকার আছে।
তিনি আরো বলেন, দেশের অনেক জায়গায় গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না, ভোলায় তো গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। এই গ্যাসকে আমরা দেশের কাজে লাগাতে পারি। আমরা গ্যাসের থেকে স্যার উৎপাদন করতে পারি এজন্য একটা কারখানা করা যায় কিনা এবং সেটার ফিজিবিলিটি দেখার জন্য এসেছি।
এ সময় উপদেষ্টাদের স্ব-স্ব মন্ত্রণালয়ের সচিব, ভোলার জেলা প্রশাসক মো: আজাদ জাহানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, এ দিন সকালে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় অবস্থিত শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র পরিদর্শন করেন উপদেষ্টারা। বাংলাদেশ গ্যাস উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান বাপেক্সের তথ্য মতে, ভোলা জেলার গ্যাসফিল্ডগুলোতে মজুদকৃত গ্যাসের পরিমাণ ২ দশমিক ২৪ ট্রিলিয়ন কিউবিক ফিট (টিসিএফ)।