ট্রাম্পের প্রস্তাবিত গাজা শান্তি পরিকল্পনা ‘ভাঁওতাবাজি’

সেনা প্রত্যাহার ও ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র মানবেন না নেতানিয়াহু, পেয়েছেন ট্রাম্পের আশ্বাসও

Printed Edition

নয়া দিগন্ত ডেস্ক

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার ‘কোনোভাবেই ঘটছে না।’ সেই সাথে তিনি আরো বলেন, ইসরাইল বলপ্রয়োগ করে হলেও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করবে।

যুক্তরাষ্ট্র সফরের পর নিজের টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশিত এক ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, যারা ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) গাজা থেকে সরিয়ে নেয়ার চাপ দিচ্ছেন, তাদের দাবিতে তিনি নতি স্বীকার করবেন না, খবর দিয়েছে বিবিসি। নেতানিয়াহুর এই বক্তব্য শুধু রাজনৈতিক অবস্থান নয়, বরং একটি কূটনৈতিক বার্তা, যা গাজা যুদ্ধ-পরবর্তী শান্তি পরিকল্পনার প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে, যা প্রতারণা বা ভাঁওতাবাজি।

নেতানিয়াহু বলেন, তারা বারবার বলছে হামাসের শর্ত মেনে নাও, সব সেনা সরিয়ে নাও, যাতে হামাস আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারে ও গাজা উপত্যকাকে পুনর্গঠন করতে পারে। কিন্তু তা কোনোভাবেই ঘটছে না। তিনি আরো জানান, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজার জন্য তার প্রস্তাবিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা হামাস প্রত্যাখ্যান করলে ইসরাইলকে পূর্ণ সমর্থন দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। নেতানিয়াহুর ভাষায়, হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য সামরিক অভিযান সম্পন্ন করাই এখন মূল লক্ষ্য। সব দিক থেকে এটি ছিল একটি সফল সফর।

এ দিকে, আরেকটি ভিডিওবার্তায় নেতানিয়াহু স্পষ্ট করে বলেন, ট্রাম্পের সাথে বৈঠকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র স্বীকৃতির কোনো চুক্তি হয়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত সেই ভিডিওতে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, তিনি কি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রে সম্মত হয়েছেন? জবাবে নেতানিয়াহু বলেন, না, একেবারেই না। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা পরিকল্পনায় ফিলিস্তিন রাষ্ট্র স্বীকৃতির কোনো ধারা নেই। বরং ইসরাইল বলপ্রয়োগ করে হলেও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করবে।

এই মন্তব্য এমন সময়ে এসেছে- যখন ট্রাম্পের পরিকল্পনার ১৯ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ‘গাজা পুনর্গঠন ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সংস্কার সম্পন্ন হলে ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য পথ তৈরি হতে পারে।’ তবে নেতানিয়াহুর বক্তব্যে স্পষ্ট, তিনি এই সম্ভাবনাকেও প্রত্যাখ্যান করছেন।

আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু সম্প্রতি পশ্চিমতীরে একটি নতুন বসতি সম্প্রসারণ প্রকল্পে সই করেছেন, যা ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠানকে কার্যত অসম্ভব করে তুলবে। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করছি, এখানে কোনো ফিলিস্তিন রাষ্ট্র হবে না। এই ভূমি আমাদের।’ জাতিসঙ্ঘের এক প্রতিবেদনে ইসরাইলের কর্মকাণ্ডকে ‘গণহত্যার লক্ষ্যে পরিকল্পিত বলা হয়েছে এবং পশ্চিমতীরে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ ও বসতি সম্প্রসারণকে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে প্রধান বাধা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।