নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত চার শহীদকে নিয়ে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নাটোর শহরের হাফরাস্তায় একটি রেস্টুরেন্টে চার শহীদ পরিবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২০২৪-এর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় শহীদ মিকদাদ হোসেন খান আকিবের বাবা অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন খান এই আন্দোলনে সহযোগিতার অভিযোগে আটক হয়ে নাটোর জেলা কারাগারে বন্দী ছিলেন।
অপর দিকে শহীদ শরিফুল ইসলাম মোহনের ছেলে কলেজছাত্র ফারহান ফুয়াদ ৪ আগস্ট নাটোর শহরে আন্দোলনের পক্ষে মিছিল-সমাবেশ করার সময় নাটোরের তৎকালীন এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের লোকজন ধরে নিয়ে নির্যাতন করেছিল। শহীদ মেহেদী হাসান রবিন ও একাদশ শ্রেণীর ছাত্র মিকদাদ হোসেন খান আকিবও সে দিন মিছিলে অংশ নিয়েছিল। পরের দিন ৫ তারিখ দুপুরে নাটোরে বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ হয়েছে। সেখানেও নিহতরা যোগদান করেছিল।
পরবর্তী সময়ে নাটোরের তৎকালীন এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের আলোচিত বাড়ি জান্নাতী প্যালেস থেকে ৬ আগস্ট ভোরে কলেজছাত্র মিকদাদ হোসেন খান আকিব ও শাওন খান সিয়াম, স্কুলছাত্র ইয়াসিন আলী ছাড়াও শরিফুল ইসলাম মোহনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে অগ্নিকাণ্ডের সময় মেহেদী হাসান রবিনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারও মৃত্যু হয়। সবার মৃত্যুর ঘটনায় নাটোর থানা ও আদালতে সুনিদিষ্টভাবে তৎকালীন ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা ও নাটোরের তৎকালীন এমপি জেলা আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুল ইসলাম শিমুলসহ সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পরবর্তী সময়ে বর্তমান সরকার এবং জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন নিহতদের যাবতীয় তথ্য চেয়ে পাঠায়। আমরা সবাই জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে প্রকৃত তথ্য উপস্থাপন করি। বর্তমান সরকার এবং জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন আমাদের পরিবারের প্রিয় সন্তানদের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত শহীদ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। কিন্তু কিছু দিন ধরে নাটোরের একটি মহল এসব হত্যা মামলার আসামি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাঁচাতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা মনে করেন, এসব হত্যা মামলার আসামি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাঁচাতে মামলাগুলোকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে একটি মহল পরিকল্পিতভাবে নাটোরের তৎকালীন এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের বাড়িতে আগুনে পুড়ে নিহত পাঁচজন শহীদের চারজনকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।
পরিবারগুলোর দাবি- আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের জুলুম-নির্যাতন ও ক্ষমতা থেকে হটাতে জুলাইয়ের শুরু থেকে আগস্টে নতুন সরকার গঠনের আগ পর্যন্ত সারা দেশে যারা ফ্যাসিবাদীদের বিরুদ্ধে ভূমিকা রেখে জীবন দিয়েছেন তারা সবাই শহীদ।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, নাটোরের শহীদ মেহেদী হাসান রবিনের স্ত্রী ওয়াহিদা হাসান, শহীদ মিকদাদ হোসেন খান আকিবের বাবা অধ্যক্ষ মো: দেলোয়ার হোসেন খান, শহীদ শরিফুল ইসলাম মোহনের ছেলে ফারহান ফুয়াদ ও শহীদ ইয়াসিন আলীর বাবা ফজের আলীসহ তাদের পরিবারের সদস্যরা।



