নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও আত্মবিশ্বাসী টাইগ্রেসরা

Printed Edition

ক্রীড়া প্রতিবেদক

কিছু দিন আগেও এমন উজ্জ্বল ছিল না বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে বাছাই টুর্নামেন্ট খেলতে হয়েছে তাদের। সেখানেও সুতার ওপর ঝুলছিল তাদের বিশ্বকাপ খেলার ভাগ্য। অবশেষে চূড়ান্ত পর্বে জায়গা পেয়ে লড়াকু একটি দল হয়ে ওঠার চেষ্টা ছিল নিগার সুলতানা জ্যোতিদের। সেই মানসিকতায় বিশ^কাপ আয়োজন শ্রীলঙ্কা ও ভারতে খেলছেন তারা। টানা দুটি ম্যাচে ভালো ক্রিকেট খেলে প্রশংসা কুড়িয়েছেন শারমিন-জ্যোতি-মারুফা-ফাহিমারা। আজ গৌহাটিতে বিকাল ৩.৩০ টায় মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড।

শ্রীলঙ্কার কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপ শুরুই করেছেন জয় দিয়ে। ইংলিশদের বিপক্ষেও ছিলেন জয়ের মানসিকতায়। এই ভালো খেলার পেছনে রয়েছে ইতিবাচক মানসিকতা। প্রধান কোচ সারোয়ার ইমরান জানান, একাগ্রতাই ভালো খেলতে উজ্জীবিত করছে ক্রিকেটারদের। খেলোয়াড়দের মানসিকতা ও ফিটনেসে বড় পরিবর্তন হওয়ায় মাঠে ইতিবাচক পারফরম্যান্স করা সম্ভব হচ্ছে। লেগস্পিনার ফাহিমা খাতুনও মানসিকতায় পরিবর্তনকে উন্নতির কারণ হিসেবে দেখছেন।

বিশ্বকাপের আগের ক্যাম্পগুলো ভালো ছিল বলে মনে করে নারী দলের ম্যানেজমেন্ট। অনূর্ধ্ব-১৫ ছেলে দলের বিপক্ষে হেরে ‘টাফনেস’ তৈরি হয়েছে বলে দাবি কোচ সারোয়ার ইমরানের। সিলেট, বিকেএসপি ও মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুশীলন ও প্র্যাকটিস ম্যাচগুলো খেলেছেন জ্যোতিরা। এই কন্ডিশনের পরিবর্তন বিশ্বকাপের ভিন্ন ভিন্ন ভেনুতে মানিয়ে নিতে সহায়ক হয়েছে। ক্রিকেট স্কিলের বাইরে যে জিনিসটা নারী দলকে ভালো খেলতে সহায়তা করছে, সেটি একতা। নিজেদের মধ্যে দারুণ বোঝাপড়া ফাহিমাদের। নারী ক্রিকেটের প্রধান নির্বাচক সাজ্জাদ আহমেদ শিপন বলেন, ‘এই দলের মধ্যে বিভাজন নেই। সবাই মিলে একটি দল হয়ে উঠেছে। এই বিশ্বকাপের প্রথম দিন থেকে ভালো খেলার এবং চ্যালেঞ্জ নেয়ার একটা মানসিকতা দেখতে পাচ্ছি। এটি ধরে রাখতে পারলে বিশ্বকাপে ভালো কিছু হবে।’

জ্যোতিরা দেশ ছাড়ার আগে বলেছিলেন, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিততে চান। বাকি দলগুলোকেও বড় করে দেখতে চান না। তারা বিশ্বকাপ শুরুই করেছেন পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় দিয়ে। দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন। পেসার মারুফা আক্তারের পেশীতে টান না লাগলে বোলিং ইউনিট দিয়ে ম্যাচটি জিতেও যেতে পারত। সাজ্জাদ আরো বলেন, ‘আমাদের বোলিং খুবই ভালো। বিশেষ করে স্পিন বিভাগ বিশ্বের যে কোনো দলের চেয়ে শক্তিশালী। একাধিক লেগস্পিনার আছে। বাঁহাতি, ডানহাতি স্পিনার আছে। পেস বোলিংয়ে মারুফা তার সেরা খেলাটা খেলছে। এই বোলিং ইউনিট যেদিন ক্লিক করবে, সেদিন বিশ্বের যে কোনো দলকে হারাতে পারবে।’

এই বিশ্বকাপে এখনো পাঁচটি ম্যাচ বাকি জ্যোতিদের। আজ তারা মোকাবিলা করবে নিউজিল্যান্ডের। সেরাটা খেলা সম্ভব হলে গৌহাটিতে ম্যাচ জেতা সম্ভব। পেসার মারুফা আক্তার ম্যাচ খেলার মতো ফিট আছেন বলে জানায় টিম ম্যানেজমেন্ট। গতকাল অনুশীলনে মারুফা ছিলেন। তেমন একটা অস্বস্থি দেখা যায়নি। অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি জানিয়েছেন, ‘আমরা স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে চাই। নির্দিস্ট দিনের উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। মারুফা মোটামুটি সুস্থ আছে। ব্যাটারদের কাছে আরো দায়িত্বপূর্ণ ব্যাটিং আশা করছি। যদিও তারা ফুল এফোর্ট দিয়ে থাকেন। বোলিং বিভাগ নিয়ে বলার কিছু নেই। তারা আগের চেয়ে আরো বেশি পরিণত। যে কোন পরিস্থিতিতে মানসিক চাপটা ধরে রাখতে পারলে কিউইদের বিপক্ষে ভালো কিছুই হবে এবং আমরা আত্মবিশ^াসী।’