কয়রায় কাজ ফেলে ৩ বছর ধরে লাপাত্তা ঠিকাদার

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সংস্কারের নামে পুরনো সড়কটি খুঁড়ে খোয়া ফেলে রেখে গেছে

Printed Edition

কয়রা (খুলনা) সংবাদদাতা

কয়রা উপজেলা সদরের মদিনাবাদ মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মোড় থেকে চার নম্বর কয়রা লঞ্চঘাট অভিমুখে সড়কটির সংস্কারের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালে। তবে রাস্তা খোঁড়ার পর ইটের খোয়া ফেলে তিন বছরের বেশি সময় ধরে লাপাত্তা হয়ে আছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী লোকজন চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কয়রা সদর ইউনিয়নের সড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় আড়াই কিলোমিটার। ২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের কারণে এ সড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। সড়কটির খানাখন্দ সংস্কারে নতুন করে কার্পেটিং করার জন্য বরাদ্দ হয় এক কোটি ২৩ লাখ টাকা। কাজের দরপত্র পায় মেসার্স রাকা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে তারা কাজ শুরু করে। কয়েক মাস ধরে রাস্তা খুঁঁড়ে ইটের খোয়া ফেলার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন কাজ ফেলে চলে যায়। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার তিন বছর পেরিয়ে গেলেও বাকি কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেই ঠিকাদারের। সরেজমিনে দেখা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সংস্কারের নামে পুরোনো সড়কটি খুঁড়ে কেবল খোয়া ফেলে রেখে গেছে। দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকায় সেসব খোয়াও সরে গিয়ে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে বড় বড় খানাখন্দ ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে সেসব গর্তে পানি জমে আছে। বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ঝুঁঁকি নিয়েই চলছে। মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে বলে জানান স্থানীয়রা।স্থানীয় বাসিন্দা আ: লতিফ বলেন, রাস্তা দিয়ে বৃষ্টির সময় চলতে যেমন দুর্ভোগ তার চেয়ে শুখনো মৌসুমে ধুলায় দুর্ভোগ বাড়ে। সড়কটি দ্রুত সংষ্কারে দাবি জানান তিনি। কয়রা গ্রামের ইসমাইল হোসেন বলেন, এ রাস্তা দিয়ে উত্তর বেদকাশী, দক্ষিণ বেদকাশী ও কয়রা সদর ইউনিয়নের বাসিন্দারা ছাড়াও সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, উপজেলা হাসপাতাল ও উপজেলা সদরে আসা লোকজনকে অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে। জরুরি রোগীদের হাসপাতালে নেয়ার পথে দুর্ভোগের সীমা থাকে না।

ভ্যানচালক সুলাইমা হোসেন বলেন, রাস্তার কারণে প্রতিদিন যে উপার্জন হয় তার চেয়ে বেশি খরচ হয় ভ্যান মেরামতে। স্থানীয় বাসিন্দা মেসবাজ উদ্দীন বলেন, ‘জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কারের কাজ শুরু হওয়ায় এলাকাবাসী অনেক খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু দীর্ঘদিন রাস্তা মেরামতের কাজটি বন্ধ থাকায় স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থী ও গ্রামের লোকজনের চলাচলের অনেক অসুবিধা হচ্ছে। সংস্কার কাজ শুরুর আগে সড়ক দিয়ে চলাচল করতে পারতাম। এখন তো চলাই যায় না খানাখন্দে ভরা।

এ বিষয়ে কথা বলতে একাধিকবার মুঠোফোনে চেষ্টা করেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী তপন চক্রবর্তীর সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। কয়রা উপজেলা প্রকৌশলী আবুল ফজেল বলেন, চুক্তি অনুযায়ী ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। রাস্তাটি গত অর্থ বছরে পুনরায় দরপত্র আহ্বানের জন্য পাঠানো হয়েছিল কিন্তু অনুমোদন না হওয়ায় এ অর্থবছরে আবার ইস্টিমেট করে সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্য কাজ শুরু হবে।