বিশেষ সংবাদদাতা
- ড্রোন ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে
- পুলিশের জন্য বডিওর্ন ক্যামেরা থাকবে
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ভোটের আগে ও পরে মোট আট দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তাব দিয়েছে বিভিন্ন বাহিনী। ইসি সচিব জানান, নির্বাচনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অপব্যবহার রোধ, ড্রোন ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং পুলিশের জন্য বডিওর্ন ক্যামেরা থাকবে।
আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে গতকাল জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে প্রাক-প্রস্তুতিমূলক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে স্বরাষ্ট্র সচিব, ইসি সচিবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা অংশ নেন। নির্বাচন ভবনে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুই ঘণ্টা চলে এ বৈঠক।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, সার্বিক আইনশৃঙ্খলা কাঠামো, তিন পর্যায়ের নিরাপত্তা কৌশলে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মূলত তিনটি ধাপে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
তফসিল ঘোষণার পূর্বে : স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে চিহ্নিত অপরাধী, সন্ত্রাসী ও নির্বাচনে বিঘœ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ধাপে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং সাম্প্র্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া আবশ্যক।
তফসিল ঘোষণা থেকে নির্বাচন পর্যন্ত : অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। সব প্রার্থীর নির্বিঘেœ প্রচার-প্রচারণা এবং ভোটারদের নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা ও সার্বিক শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশ, আনসার ও গ্রাম পুলিশের পাশাপাশি মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে র্যাব, পুলিশ, বিজিবি, আমর্ড পুলিশ, ব্যাটালিয়ন আনসার, কোস্টগার্ড এবং ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সশস্ত্র বাহিনী নিয়োজিত থাকবে।
নির্বাচনপরবর্তী কার্যক্রম : নির্বাচনপরবর্তী সহিংসতা রোধে নির্বাচনের পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা বা দুই দিন পর্যন্ত স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত থাকবে। এ সময়ে আইনগত নির্দেশনা প্রদানের জন্য এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এবং সংক্ষিপ্ত বিচার কাজের জন্য জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটি দায়িত্ব পালন করবে।
ব্রিফিংএ ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, এবার ভোটে পাঁচ দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাখার পরিকল্পনা ছিল। তবে বৈঠকে আট দিন রাখার প্রস্তাব এসেছে। এটা পরীক্ষানিরীক্ষা করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ রয়েছে। কোনো শঙ্কা প্রকাশ করেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানরা কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেননি। নিরাপত্তা পরিকল্পনার অনেক কিছু নির্বাচনে বাজেটের ওপর নির্ভর করবে। বাজেট বরাদ্দের বিষয়টি পরে সিদ্ধান্ত হবে। বৈঠক থেকে কোনো ধরনের দিকনির্দেশনা দেয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।
সচিব আখতার আহমেদ বলেন, সংসদ নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীর ৯০ হাজার থেকে এক লাখ সদস্য মোতায়েন থাাকবে। সবচেয়ে বেশি থাকবে আনসার বাহিনীর। আনসারের পাঁচ লাখ বা তার কিছু বেশি সদস্য মোতায়েন থাকবে। বিভিন্ন বাহিনী থেকে বলা হয়েছে সর্বোচ্চ যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু থাকবে। তিনি বলেন, সশস্ত্র বাহিনী ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারের অধীন নাকি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী নিয়োগ হবে তা এখনো ঠিক হয়নি। আরপিও সংশোধন হয়ে এলে সে বিষয়ে বলা যাবে।
ইসির পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী রোজার আগে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা করা হবে। সর্বশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও আট দিনের জন্য মাঠে নেমেছিল সশস্ত্র বাহিনী। তবে যাতায়াতের জন্য আরো পাঁচ দিন সময় নিয়েছিল। একাদশ সংসদ নির্বাচনে ১০ দিন মাঠে ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।



