কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে লাউ চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ গোবিন্দপুর গ্রামের অটোরিকশা চালক আলামীন। তিনি অটোরিকশা চালানোর পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। তার স্ত্রী জরিনা বেগম গৃহস্থালি কাজের পাশাপাশি তাকে এই সবজি চাষে সার্বক্ষণিক সাহায্য করে থাকেন।
সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহকালে সফল লাউচাষি আলামীনের সাথে কথা হয়। তিনি জানান, চলতি মৌসুমে তিনি ১০ শতাংশ জমিতে বড় দুটি মাচায় লাউ চাষ করেছেন। গত বর্ষা মৌসুমে কাদা ও বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে বেড পদ্ধতিতে কয়েক প্রজাতির হাইব্রিড জাতের লাউয়ের চারা রোপণ করেন তিনি। প্রতি তিন ফুট দূরত্ব বজায় রেখে তিনি রোপণ করেছেন লাউয়ের চারা। এতে শতাংশ প্রতি ৬০০-৮০০ টাকা খরচ হয়েছে তার। এ জাতের লাউ গাছ ৪০-৫০ দিন পর্যন্ত ভালো ফলন দিয়ে থাকে। এর পর থেকে ফলন কমতে থাকে। এজন্য প্রতি চার মাস পর পর তিনি নতুন করে লাউয়ের চারা রোপণ করেন। এভাবে এ জাতের লাউ সারা বছরই চাষ করা যায় এবং ফলনও হয় বাম্পার। তাই সব খরচ বাদ দিয়ে আলামীন বিগত ৯ মাসে লক্ষাধিক টাকা লাভ করেছেন বলে তিনি জানান।
আলামীনের স্ত্রী জরিনা বেগম জানান, তারা দুজনই শখের বসে গত বছর পরীক্ষামূলকভাবে চার শতাংশ জমিতে লাউ চাষ শুরু করেন। কাক্সিক্ষত সফলতা পাওয়ায় এ বছর তারা ১০ শতাংশেরও বেশি জমিতে লাউ চাষ করেছেন এবং বাম্পার ফলন পেয়েছেন। রোগ বালাই ও অন্যান্য সমস্যা দেখা দিলে তারা ইউটিউব দেখে নিজেরাই সমাধান করেন। তাই লাউ চাষে তুলনামূলক খরচ কম হয় তাদের। ক্ষেতের অবস্থা বিবেচনায় এ বছরের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত লাউ চাষে আরো ৫০ হাজার টাকার বেশি আয় করতে পারবেন বলে আশা করছেন আলামীন দম্পতি। তাদের এই নতুন পদ্ধতিতে লাউ চাষ এলাকায় অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহজাহান কবির জানান, অটোরিকশা চালানোর পাশাপাশি লাউ চাষে আলামীনের এমন অভাবনীয় সফলতা সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। তার দেখাদেখি এখন স্বল্প আয়ের অনেকেই লাউ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। আলামীনসহ অন্য সবাইকে আধুনিক পদ্ধতিতে এভাবে লাউ চাষে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দিতে সচেষ্ট রয়েছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।