চুয়াডাঙ্গায় ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার প্রকোপ হাসপাতালে ভর্তি ৫৪৮, ২ নবজাতকের মৃত্যু

হুসাইন মালিক, চুয়াডাঙ্গা
Printed Edition

হুসাইন মালিক চুয়াডাঙ্গা

চুয়াডাঙ্গায় হঠাৎ করে তাপমাত্রার অস্থিরতা, দিনে গরম ও রাতে তীব্র ঠাণ্ডা, শিশুসহ সব বয়সীদের মধ্যে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার প্রকোপ বাড়িয়ে দিয়েছে। গত ১ থেকে ১৬ নভেম্বর রাত ১০টা পর্যন্ত এ ১৬ দিনে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৪৮ জন রোগী। এর মধ্যে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে দুই নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে।

হাসপাতালের শিশু ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডের তথ্য অনুযায়ী, শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে ৩৬৩ জন রোগী; তাদের বেশির ভাগই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। অন্যদিকে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১৮৫ জন নারী, শিশু ও বয়োবৃদ্ধ চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা জানান, রোটা ভাইরাসের প্রভাবে ডায়রিয়ার রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। দিন-রাতের তাপমাত্রার এ বিপরীতমুখী পরিবর্তনে ছোট শিশুদের শ্বাসযন্ত্র দ্রুত জটিল হয়ে পড়ছে। হাসপাতালের বহির্বিভাগেও প্রতিদিন শত শত রোগী সর্দি-কাশি, জ্বর, ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা নিচ্ছেন। গত ১৬ দিনে মারা যাওয়া দুই নবজাতকের একজন আলমডাঙ্গার আইলহাঁস গ্রামের দুই দিন বয়সী শাহানাজ, শিশুটিকে ভর্তি করার ১ ঘণ্টার মধ্যেই মারা যায়। অন্যজন রামচন্দ্রপুর গ্রামের এক দিন বয়সী সালমা, ভর্তি হওয়ার পরদিনই তার মৃত্যু হয়।

চিকিৎসা নিতে আসা একাধিক অভিভাবক জানান, শিশুদের হঠাৎ জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে হাসপাতালে আনতে বাধ্য হচ্ছেন। ভর্তি রোগীদের অবস্থা ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে বলেও জানান তারা। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা: মাহবুবুর রহমান মিলন বলেন, ‘আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বেড়েছে। সামান্য লক্ষণেই শিশুকে হাসপাতালে আনতে হবে। মায়ের দুধ ও গরম কাপড় অত্যন্ত জরুরি।’ শিশু বিশেষজ্ঞ ডা: আসাদুল হক মালিক খোকন জানান, ‘প্রতিদিন ৪০-৫০ জন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে। আউটডোরে একদিনে ৩০০-৪০০ রোগী দেখা হচ্ছে।’

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘রোগী বাড়লেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। জনসচেতনতা এখন সবচেয়ে জরুরি।’