রয়টার্স
ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হাউছি প্রশাসন জানিয়েছে, ইসরাইলি হামলায় তাদের শীর্ষ নেতাদের নিহত হওয়ার ঘটনায় আটক ৪৩ জন স্থানীয় জাতিসঙ্ঘ কর্মীর বিরুদ্ধে বিচার শুরু হবে। হাউছি সরকারের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুলওয়াহিদ আবু রাস এক বিবৃতিতে বলেন, “নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর তদন্ত শেষ হয়েছে এবং পাবলিক প্রসিকিউশনকে অবহিত করে বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।”
এই ঘোষণা আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। জাতিসঙ্ঘ ইতোমধ্যে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং জানিয়েছে, তাদের কোনো কর্মী ইসরাইলি হামলার সাথে জড়িত নয়। সংস্থাটি বলছে, হাউছি প্রশাসন মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করছে এবং কর্মীদের আটক রেখে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে। গত আগস্টে ইয়েমেনের রাজধানী সানাতে ইসরাইলের একটি বিমান হামলায় হাউছি সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও কয়েকজন মন্ত্রী নিহত হন।
এটি ছিল ইসরাইলের প্রথম হামলা যাতে হাউছি প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা নিহত হন। হাউছি কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, এই হামলায় জাতিসঙ্ঘের স্থানীয় কর্মীরা কোনোভাবে সহায়তা করেছেন বা তথ্য সরবরাহ করেছেন। আবু রাস বলেন, “এই বিচার রাজনৈতিক নয়, এটি নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্ন। জাতিসঙ্ঘ কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের ভিত্তিতে গঠিত হয়েছে।”
মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই বিচারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আশঙ্কা করছে। তারা বলছে, জাতিসঙ্ঘ কর্মীদের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং ইয়েমেনের সঙ্কট আরো গভীর করতে পারে। জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস হাউছি প্রশাসনের কাছে আটক কর্মীদের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন এবং বলেছেন, “মানবিক সহায়তা কর্মীদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা রক্ষা করা আন্তর্জাতিক দায়িত্ব।”
এই পরিস্থিতি ইয়েমেনে চলমান সঙ্ঘাত ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কার্যক্রমকে আরো জটিল করে তুলছে। জাতিসঙ্ঘ কর্মীদের বিচার আন্তর্জাতিক কূটনীতি ও মানবাধিকার প্রশ্নে নতুন বিতর্কের জন্ম দিতে পারে বলে দাবি পশ্চিমা গণমাধ্যমের। তবে হাউছি প্রশাসনের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে তাদের সম্পর্ককে আরো উত্তপ্ত করে তুলতে পারে।



