ভারত-শাসিত কাশ্মিরে বন্দুকধারীদের হামলার ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন। প্রাণঘাতী এই হামলা দেশটিতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এমন অবস্থায় বিতর্কিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে চলমান বিক্ষোভ তিন দিনের জন্য স্থগিত করেছে ভারতের মুসলিম ল বোর্ড। একই সাথে পেহেলগ্াঁওয়ে ওই হামলার নিন্দাও জানিয়েছে তারা। মূলত মোদি সরকারের বিতর্কিত ওয়াকফ আইন সংশোধনীর বিরুদ্ধে সম্প্রতি ভারতজুড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ প্রকট আকার ধারণ করেছিল।
পেহেলগ্াঁওয়ে ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড (এআইএমপিএলবি)। হামলায় নিহতদের পরিবারের প্রতি সংহতি জানিয়ে তারা ওয়াকফ আইন সংশোধনের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলন তিন দিনের জন্য স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত মঙ্গলবার জম্মু ও কাশ্মিরের অনন্তনাগ জেলার জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা পেহেলগামে এই হামলা হয়। হামলার শিকারদের বেশির ভাগই ছিলেন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের পর্যটক। হামলায় আরো অনেকেই আহত হন। এআইএমপিএলবি এক বিবৃতিতে জানায়, বোর্ড এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে থাকার প্রতীকী সমর্থন হিসেবে আন্দোলন ২৩ এপ্রিল থেকে তিন দিনের জন্য বন্ধ রাখছে।
বোর্ডের অধীনে গঠিত ‘ওয়াকফ সুরক্ষা কমিটির’ মজলিসে আমলের জাতীয় সমন্বয়ক এসকিউআর ইলিয়াস বলেন, “পেহেলগ্াঁওয়ের হামলা খুবই মর্মান্তিক ও নিন্দনীয়। নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে আন্দোলনের সমস্ত কর্মসূচি তিন দিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে।” তিনি আরো জানান, এ সংক্রান্ত নির্দেশনা রাজ্য ও জেলা পর্যায়ের আন্দোলন কমিটিগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে, যাতে সব ধরনের কর্মসূচি তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ রাখা হয়। তবে ইলিয়াস স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এই স্থগিতাদেশ শুধুই সাময়িক এবং তিন দিন পর আন্দোলন আবার শুরু হবে।
প্রসঙ্গত, এআইএমপিএলবি সম্প্রতি ওয়াকফ আইন সংশোধন নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছে। বোর্ডের মতে, নতুন সংশোধনীগুলো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ও দাতব্য সম্পত্তির ওপর হস্তক্ষেপের সুযোগ তৈরি করছে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভারতের পার্লামেন্টে পাস হওয়া ওয়াকফ আইনের সংশোধনী নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক ছড়িয়েছে। এই সংশোধনীর ফলে অমুসলিমদের ওয়াকফ বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।