জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি চায় বেশির ভাগ দল, বিএনপির না

রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার মাধ্যমে তৈরি হওয়া জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ আগামী দিনে কীভাবে বাস্তবায়ন হবে তা নিয়ে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে।

কাওসার আজম
অসীম আল ইমরান
Printed Edition
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে গতকালের বৈঠকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে গতকালের বৈঠকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা |নয়া দিগন্ত

  • প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় সংসদই হবে মূল মঞ্চ : সালাহউদ্দিন আহমেদ
  • জুলাই সনদের লিগ্যাল ভিত্তি নির্বাচনের আগেই প্রয়োগযোগ্য; প্রধান উপদেষ্টা গণভোট এবং প্রোক্লেমেশন ঘোষণা করতে পারেন : শিশির মনির
  • জুলাই সনদকে তিন দলের রূপরেখার মতো চাই না : আখতার হোসেন

বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলনসহ ৩০টিরও বেশি রাজনৈতিক দলের সাথে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দুই দফায় বৈঠক চলছে। গতকাল বুধবার দ্বিতীয় দফায় ২২ দিনের মতো আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এসব বৈঠকে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে সেগুলোর আলোকে জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ তৈরি করবে সরকার। এটি আগামী ৫ আগস্টের মধ্যে ঘোষণা করার কথা। রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার মাধ্যমে তৈরি হওয়া জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ আগামী দিনে কীভাবে বাস্তবায়ন হবে তা নিয়ে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। বিএনপি চাচ্ছে আসন্ন নির্বাচনে জয়ী দল ক্ষমতায় গিয়ে এ বিষয়ে আইন করবে। তবে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদ, এ বি পার্টিসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল আসন্ন নির্বাচনের আগেই তথা বর্তমান সরকারের আমলেই যাতে এর আইনি ভিত্তি দিয়ে যায় সেই দাবি তুলেছে। সংলাপে অংশ নেয়া বেশিরভাগ দলের নেতাদের ভাষ্য, গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রতিষ্টিত বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিতে পারে, এতে কোনো বাধা নেই। এ ক্ষেত্রে দলগুলোর পক্ষ থেকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের উদাহরণ টানা হয়। বিভি

গতকাল বুধবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে অনুষ্ঠিত সংলাপে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ সভাপতিত্ব করেন। এতে কমিশনের অন্যান্য সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

সন্ধ্যায় সংলাপের বিরতিকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ আসলে একটি ঐতিহাসিক অঙ্গীকারনামা, যা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে জাতিকে একটি নতুন দিশা দেখাবে। তিনি উল্লেখ করেন, এই সনদের মূল শক্তি হলো এতে থাকা অঙ্গীকারনামা, যেখানে ঐকমত্যে পৌঁছানো বিষয়গুলো বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনে আইন, সংবিধান ও বিধির পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।

সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় সংসদই হবে মূল মঞ্চ। আমরা একমত হয়েছি যে, সংসদ গঠনের দুই বছরের মধ্যে সব অঙ্গীকার বাস্তবায়িত হবে। আর তার আগেই অনেক সংস্কার প্রস্তাব ইতোমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধ্যাদেশের মাধ্যমে কার্যকর হয়ে যাচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘এই সনদের চূড়ান্ত কপি মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার স্বাক্ষরসহ কমিশনের সব সদস্য এবং রাজনৈতিক নেতাদের স্বাক্ষরে প্রকাশিত হবে। এটি জাতির সামনে ওয়েবসাইট ও গণমাধ্যমে উন্মুক্ত থাকবে। এরপর কোনো রাজনৈতিক দল কি সাহস করবে একে ভাঙার? তাহলে কী বিশ্বাসযোগ্যতা থাকবে, সেই রিস্ক কি কোনো দল নেবে?

বিএনপির অন্যতম এই নীতিনির্ধারক বলেন, আমার তো মনে হয় না এর চাইতে বড় বেশি কোনো কনসেনসাস হতে পারে? এর চেয়ে বড় বেশি কোনো মেমো অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং হতে পারে। এর চেয়ে বড় কোনো সোশ্যাল এগ্রিমেন্ট হতে পারে। এটা কন্ট্রাক্ট অনেকটা সোশাল, ইট ইজ কন্ট্রাক্ট ইন বিটুইন ন্যাশন, ইন বিটুইন পিপল অ্যান্ড দি পলিটিক্যাল পার্টিস অ্যান্ড স্টেকহোল্ডারস; অর্থাৎ জাতীয় ঐকমত্যকে তিনি একটি ‘সামাজিক চুক্তি’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘এই চুক্তি শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নয়, এটি পুরো জাতির সাথে, জনগণের সাথে, একটি ঐক্যমূলক প্রতিশ্রুতি।’

তিনি বলেন, ছয়টি সংস্কার কমিশনের ৮২৬টি সংস্কারের সুপারিশের মধ্যে ৬৫৯ টিতে একমত পোষণ করেছি। মাত্র ৫১ টিতে বিএনপি একমত হয়নি। আর বাকি ১১৬ টিতে দ্বিমত পোষণ করেছি। তার পরও বলবে, বিএনপি সংস্কার চায় না। সেটা জাতি দেখেছে।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা: সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল গতকালের সংলাপে অংশ নেন। বিকেলে চা বিরতিকালে জুলাই সনদ প্রসঙ্গে ডা: তাহের সাংবাদিকদের বলেন, আমরা অনেক জায়গায় একমত হয়েছি। কিছু রিজার্ভেশন রয়েছে, যা আমরা ‘নোট অব ডিসেন্ট’ আকারে দিয়েছি। কিন্তু এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই ঐকমত্যের ভবিষ্যৎ কী? আমরা বলেছি, এই ঐকমত্যের ভিত্তিতে আইনিকাঠামো তৈরি করতে হবে, নইলে এই আলোচনার ফলাফল হবে না।

তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ বলছে, আগামী পার্লামেন্টে গিয়ে আইন হবে। এটা অবাস্তব ও অসামাজিক বক্তব্য। কারণ পরবর্তী পার্লামেন্ট গঠিত হবে এই সংস্কারের ভিত্তিতে না হলে আবার পুরনো নিয়মে নির্বাচন হবে।’ ইতোমধ্যে (জামায়াত) প্যানেল অব ল ইয়ার্সের সাথে আলোচনা করেছেন এবং আইনি ভিত্তি তৈরির কয়েকটি বিকল্প পথ খুঁজে পেয়েছেন বলে জানান ডা: তাহের।

এই প্রসঙ্গে জামায়াতের প্রতিনিধি দলে সংলাপে অংশ নেয়া সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির বলেন, এটার (জুলাই সনদ) লিগ্যাল ভিত্তি (লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক ওয়ার্ডার) নির্বাচনের আগেই প্রয়োগযোগ্য। গণভোট এবং প্রোক্লেমেশন- প্রধান উপদেষ্টা তা ঘোষণা করতে পারেন।

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময় গণভোট ও প্রোক্লেমেশনের মাধ্যমে বৈধতা দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে পার্লামেন্টে রথ্যাটিফাই করে তা সাংবিধানিক মর্যাদা পেয়েছে। এরশাদের সময়ও একই হয়েছে।’ শিশির মনির আরো বলেন, ‘এই সরকারের মেয়াদ বা বৈধতা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন করছেন। কিন্তু ৫ আগস্ট জনগণের অভিপ্রায় প্রকাশিত হয়েছে, আর ৮ আগস্ট সরকার গঠিত হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট কখনো বলে দেয়নি সরকারের মেয়াদ কত দিন। অতএব, জনগণের অভিপ্রায়ই হচ্ছে সুপ্রিম ল।’

তিনি বলেন, ‘সবশেষে আমরা চাই এই সনদ ও প্রোক্লেমেশনকে সাংবিধানিক ঘোষণা হিসেবে প্রকাশ করা হোক। পরবর্তী সংসদে এটি রথ্যাটিফাই হলে কেউ আর আদালতে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে না। এর মাধ্যমে জাতীয় ঐক্যমতের চূড়ান্ত আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।’

এ সময় জামায়াতের নায়েবে আমির ডা: তাহের বলেন, ‘আইনি ভিত্তি দেয়া যাবে না, এটা বিভ্রান্তিকর বক্তব্য। আমরা তো বলেছি, যদি বর্তমান সরকারের পক্ষে সম্ভব হয়, তাহলে তারা দিক। যদি না পারে, তাহলে আমরা বিকল্প পথ খুঁজে নেবো।’

জুলাই ঘোষণাপত্র প্রসঙ্গে ডা: তাহের বলেন, ‘আমাদের হাতে দুটো কাগজ আছে, একটি হচ্ছে জুলাই ঘোষণাপত্র, আরেকটি হচ্ছে জুলাই সনদ। সনদ হলো এই সংলাপের আউটকাম। তবে এর খসড়া এখনো অসম্পূর্ণ এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঐকমত্যের বিষয় এতে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। আমরা আজ অথবা কালকের (গতকাল ও আজ বৃহস্পতিবার) মধ্যে এর লিখিত জবাব দেবো।’

তিনি আরো বলেন, ‘এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই সনদকে আইনি মর্যাদা কিভাবে দেয়া যাবে। আমাদের মতে, যেভাবে অতীতে পঞ্চম ও সপ্তম সংশোধনীর মাধ্যমে গণভোট ও প্রোক্লেমেশন রথ্যাটিফাই হয়েছে, একইভাবে এই সনদ এবং ঘোষণাপত্রকেও সংবিধানিক মর্যাদা দিতে হবে। ডা: তাহের জানান, আমরা চেয়েছি, চূড়ান্ত আলোচনার সময় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রেসিডেন্টের (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) উপস্থিতি নিশ্চিত করা হোক, যাতে আমরা সরাসরি তার সাথে পয়েন্টগুলো বিনিময় করতে পারি।

এ দিকে গতকালের সংলাপের বিকেলের বিরতিকালে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেছেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ও ‘জুলাই সনদ’ দুটো সম্পূর্ণ ভিন্ন ডকুমেন্ট হলেও অনেকেই একে অপরের সাথে গুলিয়ে ফেলছেন, যার ফলে জনমনে বিভ্রান্তি ও একটা বিষয় নিয়ে সন্দেহের বেড়াজাল তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, জুলাই সনদকে যদি আমরা একটি আইনি ভিত্তির জায়গায় নিয়ে আসতে না পারি, সেক্ষেত্রে সেই জুলাই সনদ সেটা পূর্বেকার মতো তিন দলের রূপরেখার (৯১ সালের ঘটনা) মতো শুধু একটা ইতিহাসের দলিল হয়ে থাকবে। যার কোনো কার্যকারিতার জায়গা থাকবে না। আমরা একটা অকার্যকর অপূর্ণাঙ্গ মৌলিক সংস্কারবিহীন জুলাই সনদ চাই না। একই সাথে জুলাই ঘোষণাপত্র সেটাকে বাস্তবায়নযোগ্য করা সেই বাস্তবায়নের ভিত্তিতেই সামনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার করে জুলাই সনদকে কার্যকর করা, আইনি ভিত্তি দান করা, এসব বিষয় সম্পূর্ণ করেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে আমরা অগ্রসর হতে চাই। ৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ও ‘সনদপত্র’ বাস্তবায়ন চাই।

আখতার হোসেন বলেন, সংস্কারের যে আলাপগুলো করছি সেগুলো অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যায়। সেই অনিশ্চিত একটা ডকুমেন্টে জাতীয় নাগরিক পার্টি সিগনেচার করা না করা বা আর কারো সিগনেচার করা না করা সেটা মোটা দাগে কোনো ধরনের কার্যকারিতার জায়গা তৈরি করে না। খোলাসা করে বলছি, জুলাই ঘোষণাপত্রের ব্যাপারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে গত বছর ৩১ ডিসেম্বর আমরা শহীদ পরিবারসহ একত্রিত হয়েছিলাম। সরকার সময় বেঁধে দিয়েছিল পরবর্তীতে আবার সময় তারা বৃদ্ধি করেছে কিন্তু এখন পর্যন্ত জুলাই ঘোষণাপত্র জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করেনি।

এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার যদি জুলাই মাসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র জারি না করেন তাহলে আমরা এনসিপির পক্ষ থেকে সব শরিকদেরকে সাথে নিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব পক্ষকে সাথে নিয়ে আমরা জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করব। জুলাই ঘোষণাপত্র জুলাই মাসের মধ্যে সরকারকে দিতে হবে। এটি আমাদের জোর দাবি। কিন্তু জুলাই সনদের মধ্যে ঐকমত্য কমিশনের সংস্কারের প্রস্তাবনাগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। সব প্রস্তাবনা যদি জুলাই সনদে উল্লেখ করা না হয়, যদি কিছু কিছু বিষয় উল্লেখ থাকে, আর কিছু কিছু বিষয়কে যদি অনুল্লেখ রাখা হয়। আর জুলাই সনদের যদি একটা আইনি ভিত্তি না থাকে এবং কমিশন যেরকম জুলাই সনদের একটা প্রাথমিক খসড়া দিয়েছে, সেখানে দুই বছরের সময়সীমার কথা বলা হয়েছে। জুলাই সনদে আমরা যে বিষয়গুলোতে একমত হলাম সেগুলোকে সাথে সাথে কার্যকর করার পদ্ধতি সেখানে বাতলানো না থাকে, জুলাই সনদকে যদি আমরা একটা আইনি ভিত্তির জায়গায় নিয়ে আসতে না পারি, সেক্ষেত্রে সেই জুলাই সনদ সেটা পূর্বেকার মত তিন দলের রূপরেখার মত শুধু একটা ইতিহাসের দলিল হয়ে থাকবে। যার কোনো কার্যকারিতার জায়গা থাকবে না। আমরা একটা অকার্যকর অপূর্ণাঙ্গ মৌলিক সংস্কারবিহীন জুলাই সনদ আমরা চাই না। ‘একটা কার্যকর একই সাথে পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের সব বিষয়কে ধারন করে আইনি ভিত্তির সাথে এবং সাথে সাথে বাস্তবায়নযোগ্য এমন একটা জুলাই সনদ’ জাতী নাগরিক পার্টি-এনসিপির বলে জানান তিনি।