ধর্ম ও রাজনীতি রাষ্ট্রকাঠামোর বাইরের কোনো জিনিস না : নাজিব ওয়াদুদ

রাশিদুল ইসলাম
Printed Edition

বিশিষ্ট সাংবাদিক, লেখক ও চিকিৎসক ডা: নাজিব ওয়াদুদ বলেছেন, রাজনীতিকে ধর্মবিযুক্ত করার কোনো সুযোগ নাই। দেশে অতীতচারী রাজনীতি এখনো চলছে বিধায় এখনো রাজনীতিবিদরা ধর্মকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চাচ্ছেন। তিনি বলেন, জনগণ এটাকে গ্রহণ করে নাই, তার প্রমাণ ৫ আগস্টের গণবিপ্লব। এই যে অতীতচারী, ট্যাগিংয়ের রাজনীতি, এই আওয়ামী বয়ান এ ধরনের প্রজেক্টকে ফের চালু করে ভারত চাচ্ছে বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে।

তিনি বলেন, ওই প্রজেক্ট বিএনপির না, প্রজেক্ট আওয়ামী লীগের, বামদের বা ভারতের। এটা বিএনপির সাথে যায় না। বিএনপি জন্মলগ্ন থেকে সব সময় চরম ডান, চরম বাম, মধ্যপন্থী সবাইকে নিয়ে একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্রকাঠামো তৈরির জন্য কাজ করেছে। বিএনপির মূল স্রোতটা কিন্তু এইটা। সবাইকে নিয়ে থাকা। সেটা থেকেওছে। জনগণকে বিভক্ত না করে। সবাইকে নিয়ে চলা। কিন্তু এখন বিএনপির নেতাদের বক্তব্যে মনে হচ্ছে সেখান থেকে বিএনপি দূরে সরে যাচ্ছে।

ডা: নাজিব ওয়াদুদ দৈনিক রাজশাহী সংবাদের প্রধান সম্পাদক। গত কয়েক দশকে তিনি জাতীয় দৈনিক ও বার্তা সংস্থাগুলোতে পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি রাজশাহী সিটি প্রেস ক্লাব এবং রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। নাজিব ওয়াদুদ দেশের একজন বিশিষ্ট কথাশিল্পী এবং অনুবাদক। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা পঁচিশ। সাহিত্যকৃতির জন্য তিনি দেশ-বিদেশের অনেক সরকারি ও বেসরকারি পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন। তিনি গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪ চেতনা পরিষদ রাজশাহী, জুলাই ৩৬ পরিষদ রাজশাহী, রাজশাহী সংস্কৃতি কেন্দ্র, পরিচয় সংস্কৃতি সংসদ, রাজশাহী মানবকল্যাণ সংস্থাসহ বিভিন্ন সাহিত্য, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের সদস্য, পরিচালক, সভাপতি ও উপদেষ্টা। এই চিকিৎসক ও গবেষকের আন্তর্জাতিক বিভিন্ন জার্নালে ২৫টিরও বেশি বৈজ্ঞানিক গবেষণা-প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।

নয়া দিগন্ত : বাংলাদেশের রাজনীতিতে নির্বাচনী হাওয়ায় কি অতীতের দোষারোপ ফিরে আসছে?

নাজিব ওয়াদুদ : খুবই দুঃখজনক একটি বিষয়। বাংলাদেশে গত ৩৫ বছর ধরে যে অতীতচারী রাজনীতি চলছে, সব দলই করছে, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও বামধারার রাজনৈতিক ধারার দলগুলো এটি করেছে, গত দেড় দশকের বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যে স্বৈরাচারী শাসন চলেছে, তারা মেকানাইজড ওয়েতে, কনসার্টেড ওয়েতে অতীতকে ইস্যু করে রাজনীতি করেছে। ১৯৭১ সাল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, রাজাকার, আলবদর, গণহত্যা ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে তারা এমনভাবে প্রমোট করেছে যে মনে হয়েছে এসব ইস্যু ছাড়া দেশে আর কোনো ইস্যু নাই। কিন্তু জনগণ এটাকে গ্রহণ করে নাই, তার প্রমাণ ৫ আগস্টের গণবিপ্লব। জনগণ যে গ্রহণ করে নাই তার একটা বড় প্রমাণ ছাত্র সংসদগুলোর নির্বাচন। এই যে অতীতচারী, ট্যাগিংয়ের রাজনীতি, এই আওয়ামী বয়ান, স্বাধীনতা বিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার যে বয়ানের সবচেয়ে বড় ক্ষেত্র ছিল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। সেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দেখা গেল যাদেরকে ট্যাগিং করা হয়েছে, ভিক্টিম করা হয়েছে, সাধারণ ছাত্ররা ব্যাপকহারে তাদেরকেই গ্রহণ করেছে। তার মানে অতীতচারী এ রাজনীতিকে জনগণ আর এক্সসেপ্ট করছে না। এটা প্রমাণিত। তার পরেও রাজনীতিবিদরা তাদের অতীতচারী রাজনীতির অভ্যাস থেকে বের হয়ে আসতে পারছেন না।

নয়া দিগন্ত : রাজনীতিবিদরা কি মনে করে খুব সহজেই তাদের প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে পারে অতীতচারী রাজনীতি দিয়েই?

নাজিব ওয়াদুদ : রাজনীতিবিদরা তা মনে করে কী না এটা বলা মুস্কিল। হয়তো মনে করে সে জন্যই করছে। কিন্তু এটা যে ভুল ধারণা তা অলরেডি প্রমাণিত।

নয়া দিগন্ত : মানুষ তো চায় বাংলাদেশ ভবিষ্যতে কিভাবে এগিয়ে যাবে তার একটা দিকনির্দেশনা রাজনীতিবিদরা দেবেন...

নাজিব ওয়াদুদ : রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে মানুষ সবসময় চায় নতুন দিকনির্দেশনা, রাজনীতিবিদরা যদি অতীতেই ঘোরাফেরা করে, তা হলে আমাদের ভবিষ্যৎ কিভাবে নির্মাণ হবে। সাধারণ মানুষ, ছাত্র ও তরুণ সমাজ এই জিনিসটা চাচ্ছে বলেই তার প্রতিফলন কিন্তু বাংলাদেশের চারটি বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন হলো তাতে শিক্ষিত এই তরুণ সমাজ রায় দিয়েছে যে তারা অতীতচারী রাজনীতি আর করতে চাচ্ছে না। তারা বাংলাদেশকে নতুনভাবে বিনির্মাণের দিকনির্দেশনা চাচ্ছে। সেই কর্মসূচিগুলো রাজনৈতিক দলগুলো দিক। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো সেখানে ব্যর্থ হচ্ছে।

নয়া দিগন্ত : বলা হচ্ছে ধর্ম রাজনীতি থেকে বিযুক্ত। অতীতে দেখেছি কোনো কোনো নেত্রী মাথায় স্কার্ফ বেঁধে মাফ চেয়ে ভোট চেয়েছেন। এখনো কোনো কোনো রাজনৈতিক নেতা টুপি ও চাদর পড়ছেন, ধর্ম ধর্মের জায়গায়, রাজনীতি আলাদা, এর মানে কি আপনি ধর্মপ্রাণ হবেন, আবার ঋণখেলাপি হবেন, মানুষের জীবন যাপন, আচরণ, রাজনীতি, অর্থনীতি থেকে ধর্মকে কি আদৌ আলাদা করা সম্ভব?

নাজিব ওয়াদুদ : ধর্ম জীবনবিমুখ বা জীবনবিযুক্ত কোনো বিষয় না। জীবনের প্রত্যেকটা বিষয়ের সঙ্গে ধর্ম জড়িত। ধর্ম বলতে বাংলাদেশে ইসলামকেই বুঝানো হয় তো একজন মানুষ সুদ খাবে না, ঘুষ খাবে না, ঘুষ দেবে না, এটাতো ধর্মেরই বিষয়। সুদ ও ঘুষের বিরুদ্ধে কুরআন ও হাদিসে ব্যাপকভাবে কঠোরভাবে বলা হয়েছে। সুদ ও ঘুষ কি সমাজ, রাজনীতি, রাষ্ট্র কাঠামোর বাইরে? বাইরে না হলে ধর্ম তো জীবনবিযুক্ত হচ্ছে না। ধর্মকে বাদ দিয়ে জীবন চলতে পারে না। রাজনীতিও চলবে না। জীবনও চলবে না। সুতরাং যারা ধর্মবিযুক্ত রাজনীতির কথা বলে তারা ভুল বলে। তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বলে তার কারণ দেশের সাধারণ মানুষ ধর্মমুখী মানুষ, যারা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে তাদের পক্ষে অটোমেটিক ধর্মপ্রাণ মানুষের সমর্থন কিছুটা চলে আসে। যারা ধর্মবিরোধী রাজনীতি করেন, ধর্মকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চান, ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি করেন, তাদের জন্য এ বিষয়টি একটা বড় সমস্যা। এ সমস্যাকে মোকাবেলায় তারা এভাবে বলতে চান যে ধর্মকে রাজনীতিতে টেনে আনা ঠিক না।

নয়া দিগন্ত : এই যে ধর্মবিযুক্ত রাজনীতির বয়ান তারা তৈরি করেন এটা কি তাদের মেধাভিত্তিক যুক্তিকৌশলের অভাব থেকেই করেন?

নাজিব ওয়াদুদ : এটা অভাব থেকেই হয়। আসলে মানুষের কাছে যাওয়ার, মানুষের সমর্থন লাভে বিভিন্ন পদ্ধতি আছে। ইতিবাচক পদ্ধতি। অর্থাৎ আমি কী করতে চাই? আমার দল, আমার আদর্শকে প্রজেক্ট করা। আরেকটা হচ্ছে বিরোধী দল যারা আছেন, আমার প্রতিপক্ষ যারা আছেন তাদের খারাপ দিকগুলোকে প্রজেক্ট করা। আমাদের অধিকাংশ রাজনৈতিক দলগুলোর নিজেদের প্রজেক্ট করার মসলা বা উপকরণ খুবই কম। এই কারণে তারা অন্যের ত্রুটি-বিচ্যুতি বের করার দিকে বেশি নজর দেয়। আগাগোড়া এটা হয়ে আসছে।

নয়া দিগন্ত : প্রতিবেশী দেশ থেকে শুরু করে যারা বাংলাদেশের উন্নয়ন চায় না তারা তো রাজনীতিবিদদের এ ধরনের ভ্রান্তির বেড়াজালে দেখতে পেয়ে বা ফেলে দিয়ে রাজনৈতিক শক্তিকে জনগণের কাছে বিমুখ করে রেখেছে কি না?

নাজিব ওয়াদুদ : সেটাই তাদের উদ্দেশ্য। আজকে নতুন করে একাত্তর, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সামনে আনা হচ্ছে এটা মূলত ভারতের ব্রাহ্মণ্যবাদী সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বহু দিনের একটা প্রজেক্ট। এই প্রজেক্টটা ফেইল করেছে কিন্তু প্রজেক্টটা তারা ছাড়তে পারছে না। এই প্রজেক্টটাকে নানাভাবে তারা আবার সামনে আনার চেষ্টা করছে। এ ছাড়া বাংলাদেশে ভারতের আধিপত্য বিস্তার করে রাখার দ্বিতীয় কোনো উপায়-উপকরণ তাদের হাতে নাই। তাই এই প্রজেক্টটাকেই তারা সামনে আনছেন। বেশি লাভ হবে না তারা জানে কিন্তু একটা ক্যাওয়াস তৈরি করা যাবে। একটা বিশৃঙ্খলা যদি তৈরি করে রাখা যায় বিশেষ করে যখন আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে যারা এত দিন লড়াই করে আসল, নির্বাচনের আগে যদি তাদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করা যায়, অনৈক্য সৃষ্টি করা যায়, তা হলে ভবিষ্যতে আবারো বাংলাদেশে একটা ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক শক্তি ঘুড়ে দাঁড়ানোর একটা রাস্তা খুঁজে পাবে। এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই যে প্রজেক্টটা রিসেন্টলি চরমভাবে পতন হলো সেটা নিয়ে ফের তারা আগাতে চেষ্টা করছে।

নয়া দিগন্ত : মুক্তিযুদ্ধকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার তো আওয়ামী লীগের ট্রেডমার্ক, সেটা নিয়ে কোনো রাজনৈতিক দল যদি চেতনার রাজনীতি করতে চায়, অনেকে শঙ্কা করছেন এটা ব্যুমেরাং হতে পারে।

নাজিব ওয়াদুদ : এই প্রজেক্ট বিএনপি গ্রহণ করেছে বলে মনে হচ্ছে। তারেক রহমানের বক্তব্য শুনলে ধরেই নেয়া যায় বিএনপি পরিকল্পিতভাবে, সুচিন্তিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েই এ প্রজেক্টটাকে হাতে নিয়েছে। কিন্তু প্রজেক্টটাতো বিএনপির না, প্রজেক্ট আওয়ামী লীগের, বামদের বা ভারতের। এটা বিএনপির সঙ্গে যায় না। বিএনপির জন্মলগ্ন থেকে শুরু করে দেখেন দলটি সবসময় চরম ডান, চরম বাম, মধ্যপন্থী সবাইকে নিয়ে একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্রকাঠামো তৈরির জন্য সব সময় কাজ করেছে। শুরু থেকেই। হয়তো কখনো ব্যর্থ হয়েছে, কখনো কমবেশি হয়েছে। বিএনপির মূল স্রোতটা কিন্তু এইটা। সবাইকে নিয়ে থাকা। সেটা থেকেওছে। জনগণকে বিভক্ত না করে। সবাইকে নিয়ে চলা। জিয়াউর রহমানের সময়ের দিকে তাকালে দেখবেন শাহ আজিজুর রহমানের মতো, আব্দুর রহমান বিশ্বাসের মতো, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, মশিউর রহমান যাদু মিয়ার মতো যারা স্বাধীনতাবিরোধী নেতা ছিলেন তাদের এবং চরম ডান ও বাম সবাইকে নিয়ে তিনি দল করেছেন। তাদেরকে রাষ্ট্রপতির পদ, প্রধানমন্ত্রীর পদ দিতে বিএনপি কখনো কুণ্ঠিত হয়নি। জামায়াতকে সাথে নিয়ে তারা দিনের পর দিন রাজনীতি করেছেন। জামায়াতের পক্ষে তারা বলেছেন, জামায়াতের নেতাদের পক্ষে তারা বক্তৃতা দিয়েছেন, বিবৃতি দিয়েছেন, খোদ তারেক রহমান সাহেবও তো এর আগে জামায়াতের পক্ষে, শিবিরের পক্ষে বক্তব্য-বিবৃতি দিয়েছেন। আর আজকে তারা আওয়ামী লীগের বয়ান সামনে এনে কথা বলছেন, এটা এক দিকে যেমন তাদের দলীয় আদর্শের বিরোধী হচ্ছে, নিজেদের কথার বিপরীত কথা বলতে হচ্ছে, ক’দিন আগে যা বলেছেন তার উল্টো কথা এখন বলছেন। এতে তাদের সম্পর্কে জনগণের মধ্যে একটা বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। তারা কী অবস্থান নিতে চায়?

নয়া দিগন্ত : ভোটের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে জনগণতো এক ধরনের বিড়ম্বনায় পড়ছে?

নাজিব ওয়াদুদ : জনগণ এখন রাজনৈতিক অবস্থা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, কর্মসংস্থান, বিনিয়োগ, ভবিষ্যতের অর্থনীতি এগুলো নিয়ে কর্মসূচি চায়। এটাই তাদের বাঁচা মরার লড়াই ও চাহিদা। জনগণ সরাসরি ঠিক ওইভাবে রাজনৈতিক আদর্শিক বয়ান এই মুহূর্তে শুনতে চায় বলে মনে হয় না। আমরা তৃণমূলে বাস করি বলে সব ধরনের শিক্ষিত, অশিক্ষিত, ধনী, গরিব সব ধরনের মানুষের সঙ্গে আমাদের মেশার সুযোগ হয়। মানুষ আদর্শিকভাবে সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, ইসলাম- এগুলোর ওপর অতটা গুরুত্ব দিতে চাচ্ছে না। ইসলামের ব্যাপারে মানুষের একটা মোহ আছে সেটা আলাদা বিষয়। ভারতের আগ্রাসন ও আধিপত্যবাদ থেকে মানুষ কিভাবে বাঁচতে পারবে এটা নিয়ে তাদের শঙ্কা, দুবেলা দুমুঠো খেয়ে পরে থাকতে পারলেই তারা সন্তষ্ট। কিন্তু সে ব্যবস্থা রাজনৈতিক দলগুলো অতীতে নিশ্চিত করতে পারেনি। এখন চুয়ান্ন, পঞ্চাশ বা তিরিশ বছর আগে কে কী বলেছে, কে কী করেছে এগুলো জনগণ মোটেই ভাবছে না। আওয়ামী লীগের বয়ান সামনে নিয়ে যারা আগাতে চাইবে তারা ভুল পথে আগাচ্ছে বলে মনে হয়। জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না এবং নিজেদের ক্রেডিবিলিটি একেবারে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক অবস্থান নষ্ট হচ্ছে। জিয়া ও বেগম জিয়ার লিগ্যাসি থেকে একেবারেই দূরে সরে যাচ্ছে বিএনপি। ওনারা অন্তর্ভুক্তিমূলকভাবে সবাইকে নিয়ে একটা নাগরিক বোধের সমাজ তৈরি ও নাগরিকদের ওপর ভিত্তি করেই ওনারা করতে চেয়েছিলেন। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের মূল ভিত্তি হচ্ছে মুসলিম চেতনা ও আগ্রাসন আধিপত্যবাদ বিরোধিতা। এ দুটো থেকেই বিএনপি দূরে সরে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।