জাতীয় চলচ্চিত্র নির্মাণ অর্থায়ন নীতিমালা : নতুন যুগের সূচনা

Printed Edition
জাতীয় চলচ্চিত্র নির্মাণ অর্থায়ন নীতিমালা : নতুন যুগের সূচনা
জাতীয় চলচ্চিত্র নির্মাণ অর্থায়ন নীতিমালা : নতুন যুগের সূচনা

সাকিবুল হাসান

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পে সরকারি অর্থায়নের প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, পেশাদারিত্ব ও আধুনিকতার প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় নিয়ে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র আন্দোলন’ ও ‘চলচ্চিত্র সংস্কার রোডম্যাপ’ এক মুক্ত আলোচনা আয়োজন করেছে। শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা বিভাগের সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত ওই আলোচনায় চলচ্চিত্র পেশাজীবীরা বর্তমান সঙ্কট, অর্থায়ন প্রক্রিয়ার অস্বচ্ছতা এবং নতুন নীতিমালার গুরুত্ব নিয়ে মতবিনিময় করেন।

আলোচনায় ‘চলচ্চিত্র সংস্কার রোডম্যাপ’ থেকে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র অনুদান নীতিমালা’ সংস্কারের মাধ্যমে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র নির্মাণ অর্থায়ন নীতিমালা’ প্রণয়নের প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। প্রস্তাবিত এই নীতিমালা চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য আধুনিক, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থায়ন ব্যবস্থার লক্ষ রেখে তৈরি করা হয়েছে। এতে অনুদান (গ্র্যান্ট) ও প্রণোদনা (গ্যাপ ফাইন্যান্সিং) দুই ধরনের অর্থায়ন ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যেখানে অনুদান মূলত স্বাধীন ও শিল্পমানসম্পন্ন চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য এবং প্রণোদনা বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য দেয়া হবে।

বক্তারা জানান, বর্তমান অনুদান প্রক্রিয়ায় জটিলতা ও অস্বচ্ছতার কারণে শিল্পের বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে। তাই নতুন নীতিমালা কার্যকর করার মাধ্যমে শিল্পে পেশাদারিত্ব ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। এ ছাড়া ডিজিটাল প্রক্রিয়া উন্নয়ন, কার্যকর আপিল ব্যবস্থা এবং অর্থায়ন সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়গুলোও রোডম্যাপে গুরুত্ব পেয়েছে। চলচ্চিত্র সংস্কার রোডম্যাপের কমিউনিকেশন উইংয়ের আরিফ সনেট বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাবিত রোডম্যাপটি কেবল অনুদান প্রক্রিয়া সংস্কারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি পুরো চলচ্চিত্র শিল্পের পুনর্গঠনের রূপরেখা। এটি মেধাবী ও প্রতিশ্রুতিশীল নির্মাতাদের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করবে, যা দেশের চলচ্চিত্রকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।’ চলচ্চিত্র নির্মাতা আকরাম খান বলেন, ‘জুরি বোর্ডে চলচ্চিত্র সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্তি জরুরি। পাশাপাশি নীতিমালায় দ্রুত পরিবর্তন না আনলে অনুদান ব্যবস্থার সমস্যা চলতেই থাকবে।’ অন্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা খন্দকার সুমন, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির সভাপতি কামরুল হাসান, চলচ্চিত্র শিক্ষার্থী আহসান স্মরণ, নির্মাতা পার্থিব রাশেদ, প্রযোজক অন্তু আজাদ, নির্মাতা টনি মাইকেল ও শিক্ষক রাজিবুল হোসাইন। এই আলোচনার মাধ্যমে দেশের চলচ্চিত্র শিল্পে অর্থায়নের স্বচ্ছতা, পেশাদারিত্ব ও আধুনিকতার নতুন দিক উন্মোচিত হতে যাচ্ছে।