রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ‘কোল্ড অ্যান্ড হট’ টেস্টে সফলতা

সফল পরীক্ষার পর টার্বাইনে বাষ্প সরবরাহের জন্য পাইপ লাইনগুলো কার্যকরী বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।

ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতা
Printed Edition
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র |সংগৃহীত

ঈশ্বরদীর রূপপুরে নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের টার্বাইনে বাষ্প সরবরাহকারী পাইপলাইনের ‘হট এবং কোল্ড’ পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এর অধীনে পাইপলাইনে বাষ্পের সাহায্যে ব্লো-ডাউন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। সফল পরীক্ষার পর টার্বাইনে বাষ্প সরবরাহের জন্য পাইপ লাইনগুলো কার্যকরী বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। গতকাল বুধবার এনপিসিবিএল এবং রাশিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এতমস্ত্রয়এক্সপোর্ট ‘কোল্ড এন্ড হট’ টেস্ট সফলভাবে সম্পন্নের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানির (এনপিসিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. জাহেদুল হাসান জানান, রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হওয়ার আগে এ জাতীয় পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। যার মাধ্যমে টার্বাইন যন্ত্রপাতির নির্ভরযোগ্য এবং নিরাপদ কার্যক্রম নিশ্চিত করা হয়ে থাকে। দুই মেগাপ্যাস্কেল চাপ এবং ২০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট তাপমাত্রায় বাষ্পের সাহায্যে ব্লো-ডাউন প্রক্রিয়াটি পরিচালনা করা হয়। নকশার চাহিদা অনুযায়ী এই প্যারামিটারগুলো নির্বাচন করা হয় যাতে পাইপলাইনে কোনো ধরনের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ময়লা ও আবর্জনার কণা এবং আর্দ্রতা অবশিষ্ট থাকলে তা সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার করা সম্ভব হয়।

তিনি আরো জানান, এই পরীক্ষা চলাকালে পাশের বায়ুমণ্ডলে সবেগে বাষ্প নির্গত হওয়ার ফলে অনাকাক্সিক্ষত শব্দের সৃষ্টি হয় যা পূর্ব অনুমেয় ছিল এবং এ সম্পর্কে স্থানীয় জনগণকে আগেভাগেই অবহিত করা হয় যাতে তারা কোনো ভাবেই ভীত না হন। বাষ্প সরবরাহকারী পাইপলাইনকে সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার করতে পরবর্তী ধাপে অধিক পরিমাণ বাষ্প ব্যবহার করে এই ব্লো-ডাউন প্রক্রিয়াটি পুনরাবৃত্তি করা হবে। এর ফলে কার্যক্রম চলাকালীন যে লোড পড়বে তার প্রায় কাছাকাছি লোডে যন্ত্রপাতির কার্যক্ষমতা নির্ধারণ করা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ প্রকল্পে কর্মরত রাশিয়ার এতমস্ত্রয়এক্সপোর্টের ভাইস-প্রেসিডেন্ট আলেক্সি ডেইরি জানান, “কমিশনিং কার্যক্রমের এই গুরুত্বপূর্ণ ধাপটি সম্পন্ন হওয়ায় প্রথম বিদ্যুৎ ইউনিট চালু এবং গ্রিডে যুক্ত হওয়ার পথে আরো এক ধাপ অগ্রগতি অর্জিত হলো। সর্বাধুনিক রুশ ভিভিইআর-১২০০ রিয়্যাক্টর-ভিত্তিক রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ ইউনিটটি আগামী কয়েক দশক ধরে পরিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে যা বর্তমান চাহিদার মোটামুটি প্রায় ১০ শতাংশ”।

উল্লেখ্য, রুশ আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে মোট দু’টি ইউনিট স্থাপিত হচ্ছে, যার প্রতিটির উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট। রুশ রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশন রসাটমের প্রকৌশল শাখা জেনারেল কন্ট্রাকটর হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।