রুহুল আমিন সৌরভ কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ)
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে শাপলা ফুল কেবল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য কিংবা খাদ্যের উৎসই নয়, এটি হয়ে উঠেছে শিশুদের মেলবন্ধন ও আনন্দের এক সুন্দর মাধ্যম। বর্ষা ও শরতে ভরপুর জলাভূমিতে ফুটে থাকা সাদা শাপলা সংগ্রহ করতে গিয়ে একদল শিশুর মধ্যে তৈরি হয়েছে বিশেষ বন্ধুত্ব, যা এলাকার মানুষের দৃষ্টি কেড়েছে।
উপজেলার কাশিপুর এলাকার শিক তরিকুল ইসলামের মেয়ে মনিরার দিনটি শুরুই হয় অন্য শিশুদের সাথে শাপলা তুলতে যাওয়ার মধ্য দিয়ে। যদিও তার পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো, তবু শাপলা তোলা তার নিত্যদিনের আনন্দ ও শখ। প্রতিদিন সকালে সে স্থানীয় দরিদ্র পরিবারের শিশুদের সাথে মিলে জলাভূমিতে নেমে পড়ে শাপলা তুলতে। শাপলা সংগ্রহ শেষে মনিরা শাপলাগুলো সেই দরিদ্র শিশুদের হাতে তুলে দেয়। দরিদ্র শিশুরা সেগুলো স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে নিজেদের পরিবারের আয়ের সংস্থান করে।
মনিরা বলে, শাপলা ফুল আমার অতি প্রিয়। প্রতিদিন সকালে বন্ধুদের সাথে শাপলা তুলতে যাওয়া আমার আনন্দ। আমি শাপলা তুলে দিলে আমার বন্ধুরা বাজারে বিক্রি করতে পারে, এতে তাদেরও উপকার হয়।
স্থানীয়রা জানায়, ডুবে যাওয়া ধানের তে ও বিভিন্ন জলাভূমিতে এবার ব্যাপকহারে শাপলা ফুটেছে। এই দৃশ্য যেমন চোখ জুড়ানো, তেমনি শিশুরা মিলেমিশে শাপলা তুলছে- এটা দেখতেও ভালো লাগে। তবে মনিরার এই শাপলা তোলার কাজটি আরো প্রশংসনীয়। সে শুধু শাপলা তোলেই না, সেগুলো দরিদ্র শিশুদের দিয়ে তাদের সাহায্যও করছে।
শাপলা ফুল বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। জ্যৈষ্ঠ থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত এ ফুল খালে বিলে ঝিলে ও পুকুরে ফুটে। এটি দেখতে যেমন সুন্দর, এর তরকারি খেতেও তেমনি স্বাদের। কালীগঞ্জের জলাভূমিতে ফুটে থাকা শাপলা ফুল শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্যকেই বৃদ্ধি করে না, স্থানীয় শিশুদের জীবনে আনন্দের জোয়ার বইয়ে দেয়।
মনিরার বাবা শিক তরিকুল ইসলাম বলেন, মনিরা ছোটবেলা থেকেই প্রকৃতিপ্রেমী। সে অন্য শিশুদের সাহায্য করতে পছন্দ করে। তার এই কাজ দেখে আমি গর্ব বোধ করি।
স্থানীয়রা জানায়, শাপলা ফুল শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রতীকই নয়, এটি শিশুদের মধ্যে সম্প্রীতি ও সহযোগিতার বন্ধনও গড়ে তুলতে পারে।



