মিস ইউনিভার্স : ‘ডাম্বহেড’ ফাতিমার বিশ্বজয়!

Printed Edition
মিস ইউনিভার্স : ‘ডাম্বহেড’ ফাতিমার বিশ্বজয়!
মিস ইউনিভার্স : ‘ডাম্বহেড’ ফাতিমার বিশ্বজয়!

বিনোদন প্রতিবেদক

গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়ে ৭৪তম মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় শিরোপা অর্জন করেছেন মেক্সিকোর ফাতিমা বোশ ফেরান্দেজ। দেশটির জন্যও এমন অর্জন এবারই প্রথম। গত ২১ নভেম্বর বাংলাদেশের সকালে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে এবারের আসরের চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এবার রানারআপ হন থাইল্যান্ডের প্রাভিনার সিং এবং ভেনিজুয়েলার স্টেফনি আদ্রিয়ানা আবাসালি নাসের। অনুষ্ঠানটি ছিল শুধু সৌন্দর্য-মঞ্চ নয়; ফাতিমার প্রতি সঞ্চালকের আপত্তিকর আচরণ, প্রতিদ্বন্দ্বীদের একত্রে প্রতিবাদ, বিচারকের পদত্যাগ সব মিলিয়ে এক বড় রাজনৈতিক ও সামাজিক বিতর্কে পরিণত হয় এবারের চূড়ান্ত আসর। এর সবটুকু সামলেই মিস ইউনিভার্সের শিরোপা জিতে নেন ফাতিমা। ঘোষণার পরেও সবাই ফাতিমাকে বিজয়ী হিসেবে মেনে নিতে প্রস্তুত ছিলেন না। অনেকেই ধারণা করেছিলেন, ‘মিস জালিস্কো’ ইয়োয়ানা গুতিয়েরেস মুকুট জিতবেন; কিন্তু যখন ফাতিমার নাম ঘোষণা করা হয়, দর্শকদের একটি বড় অংশ তীব্র প্রতিবাদ জানান। মঞ্চে বিজয়ী ঘোষণার পর মাত্র চার জন প্রতিযোগী লোরেনা লোপেজ, ফের্নান্দা পুমা, এমিরে আরেয়ানো ও এলেনা রোলদান ফাতিমাকে অভিনন্দন জানান। মঞ্চ ও গ্যালারির এসব প্রতিকূলতার মাঝেও নিজের আত্মমর্যাদা টিকিয়ে রাখেন ফাতিমা। প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘যারা সত্যিই আমাকে ভালোবাসেন, তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। লোরেনা, ফের্নান্দা পুমা, এমিরে আর এলেনা তারা প্রত্যেকেই প্রকৃত অর্থে এই শিরোপার যোগ্য।’ ফাতিমা আরো বলেন, ‘কেউই আমাকে এই মুকুট উপভোগ করা থেকে বিরত রাখতে পারবে না। কারণ যদি তুমি মুকুট অর্জন করে থাকো, তার মানে তুমি তার জন্য পরিশ্রম করেছ। এটাই আমি শিখেছি।’ এদিকে চূড়ান্ত রায় ঘোষণার আগেই এবারের আসরে ঘটে অবিশ্বাস্য এক অপ্রীতিকর ঘটনা। যার কেন্দ্রে ছিলেন ফাতিমা। আয়োজকদের এক কর্মকর্তা প্রশ্ন তোলেন, ফাতিমা থাইল্যান্ডকে সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমে যথেষ্ট প্রচার করেননি। তিনি ফাতিমাকে ‘ডাম্বহেড’ (বোকা) বলেও কটূক্তি করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে কয়েকজন প্রতিযোগী অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শেষ পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীকে ডাকতে হয়। পরে সাংবাদিকদের ফাতিমা বলেন, তিনি আমাকে ‘ডাম্ব’ বলেছেন। কারণ তার সমস্যা আছে, আর সেটি অন্যায়। এসব বলে কেউ আমাদের চুপ করাতে পারবে না। এ ঘটনার পর দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানায় ‘মিস ইউনিভার্স অর্গানাইজেশন’। সংস্থার সভাপতি রাউল রোচা নাওয়াত এই আচরণকে তীব্র ভাষায় নিন্দা করেন। সব বিতর্কের মাঝেও নিজের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হননি ফাতিমা। ভক্তদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি নিজের কথা বলতে ভয় পাই না। আমার কণ্ঠ এখন আগের চেয়েও শক্তিশালী। আমার বলার মতো অনেক কিছু আছে। আমি সাজানো পুতুল নই, যার জামা বদলানো হবে, সাজানো হবে অন্যের পছন্দে। আমি এখানে এসেছি সেসব নারী ও মেয়েদের কণ্ঠস্বর হতে, যারা তাদের অধিকার ও স্বপ্নের জন্য লড়াই করছে।’ ফাতিমার পরিচয় জানা যাক। তিনি মেক্সিকোর পোর্ট গ্যালের সন্তান, বয়স ২৫ বছর। তিনি টেকসই ফ্যাশন ও কমিউনিটি সেবা-প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত যাতে সামাজিক সচেতনতাও রয়েছে। ফাতিমার সামনে রয়েছে এক বছরের শিরোপা মেয়াদ, যেখানে তিনি নিজ দেশের ও আন্তর্জাতিক মঞ্চে মডেল, ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর, সামাজিক উদ্যোগ চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।