কূটনৈতিক প্রতিবেদক
- হাদি হত্যা চেষ্টাকারীদেও পালানো রোধে সহায়তা চেয়েছে ঢাকা
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার উসকানি দিয়ে পলাতক শেখ হাসিনাকে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ অব্যাহত রাখায় ভারতের কাছে গুরুতর উদ্বেগ জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সরকার একই সাথে বাংলাদেশী রাজনৈতিক নেতা শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার চেষ্টায় জড়িত সন্দেহভাজনদের ভারতে পালানো রোধ করতে এবং যদি তারা ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়, তাহলে তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার এবং বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ নিশ্চিত করার জন্য ভারতের সহযোগিতা চেয়েছে।
গতকাল ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে এসব কথা বলা হয়েছে। মন্ত্রণালয় ভারতে অবস্থানরত পলাতক আওয়ামী লীগ সদস্যদের বাংলাদেশবিরোধী কার্যকলাপের প্রতি হাইকমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, যার মধ্যে আসন্ন নির্বাচন বানচাল করার জন্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা, সংগঠিতকরণ এবং সহায়তা করা অন্তর্ভুক্ত। এই ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসীদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করার জন্য এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ করার জন্য ভারত সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জোর দিয়ে বলেছে, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত ন্যায়বিচার সমুন্নত রাখা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া রক্ষায় বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়াবে, সরকার এটাই প্রত্যাশা করে। তলবে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ কর্তৃক প্রদত্ত সাজা ভোগ করতে পতিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে দ্রুত প্রত্যর্পণের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ।
প্রণয় ভার্মা বলেন, ভারত বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে ভারত প্রস্তুত রয়েছে।
অভিযোগ প্রত্যাখ্যান ভারতের : ভারতে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগ সদস্যরা বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে বলে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনারকে ডেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে অভিযোগ করেছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছে দিল্লি। গতকাল দেয়া এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার রোববার এক প্রেসনোটে যে বক্তব্য দিয়েছে, ভারত তা দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের সপক্ষে ভারত তার অবস্থান অব্যাহতভাবে পুনর্ব্যক্ত করেছে। বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম জনগণের স্বার্থের প্রতি বিরূপ হয় এমন কোনো কর্মকাণ্ডে নিজের ভূখণ্ড ব্যবহারের সুযোগ ভারত কখনো দেয় না। আমরা আশা করি, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার শান্তিপূর্ণ উপায়ে নির্বাচন আয়োজনের উদ্দেশ্যে অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে।



