লালমোহন (ভোলা) সংবাদদাতা
ভোলার লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়ন থেকে সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে ১৩ জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। যাত্রার ছয় দিনের মাথায় ফিরে আসার কথা থাকলেও ১৫ দিন পেরিয়ে গেছে। কিন্তু তাদের কোনো সন্ধান মেলেনি। তীরে ফেরার অপেক্ষায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন গুনছেন স্বজনরা।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১০ নভেম্বর দুপুরে ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের দলিল মাস্টার বাজার ও বাতিরখাল মৎস্যঘাট এলাকা থেকে ফারুক মাঝির ‘মা-বাবার দোয়া’ নামের একটি ট্রলারে করে ১৩ জন জেলে সাগরে রওনা দেন। পরদিন ১১ নভেম্বর তারা চরফ্যাসনের সামরাজ মৎস্যঘাটে পৌঁছে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ করে গভীর সাগরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। সাধারণত ছয় দিনের মধ্যেই তাদের ফেরার কথা। কিন্তু ১২ দিন পেরিয়ে গেলেও কোনোভাবেই যোগাযোগ করা যাচ্ছে না তাদের সাথে।
নিখোঁজ জেলেরা হলেন- মো: মাকসুদুর রহমান, মো: খোকন, মো: হেলাল, মো: শামিম, মো: সাব্বির, মো: সজিব, মো: জাহাঙ্গীর, মো: নাছির মাঝি, আব্দুল মালেক, মো: ফারুক, মো: মাকসুদ, মো: আলম মাঝি ও মো: ফারুক। খোকনের স্ত্রী রিপা বেগম বলেন, ‘স্বামী নদী-সাগরে মাছ ধরে সংসার চালান। দুই সন্তান ও শ্বশুর-শাশুড়িসহ আমাদের পুরো পরিবার তার আয়ের ওপরই নির্ভরশীল। এখন কোনো খবর না পাওয়ায় আমরা দিশেহারা। শুধু প্রার্থনা করি তিনি যেন নিরাপদে ফিরে আসেন।’ নিখোঁজ আরেক জেলে হেলালের স্ত্রী মিতু বেগম বলেন, ‘স্বামী বাড়ি ছাড়ার আগে বলেছিলেন নিজের ও সন্তানের খেয়াল রাখতে। বলেছিলেন সাগর থেকে ফিরে আমাকে নিয়ে বাবার বাড়ি যাবেন। এখন তার কোনো খোঁজ নেই। শিশু সন্তান, বয়স্ক শ্বশুর-শাশুড়ি- সবার ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। তাকে ফেরত পেতে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা চাই।’
লালমোহন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলী আহমদ আখন্দ বলেন, জেলেদের নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ পেয়েছি। তবে কতজন নিখোঁজ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক তথ্য পাওয়া যায়নি। জেলে পরিবারগুলোর অভিযোগ, সাগরে জেলেদের নিরাপত্তা বাড়াতে নিয়মিত নজরদারি, ট্রলারে ট্র্যাকিং ডিভাইস সংযোজন ও দ্রুত অনুসন্ধান ব্যবস্থা চালু করার জন্য বহুবার দাবি জানানো হলেও বাস্তবে তেমন উদ্যোগ নেয়া হয় না। ফলে ঝুঁকি নিয়েই সাগরে যেতে হয় জেলেদের।



