আইনি লড়াইয়ের পর পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের বাতিল করা দলের প্রতীক দাঁড়িপাল্লাসহ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন ফিরে পাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ঈদের দীর্ঘ ছুটির পরই প্রথম কার্যদিবসে নিবন্ধনের গেজেট প্রকাশ করা হতে পারে বলে ইসি সূত্রে জানা গেছে।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১৩ সালে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল, ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্টে এক প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীক হারানোর পর থেকে দলটি একটানা আইনি লড়াই চালিয়ে যায়। পটপরিবর্তনের পর সর্বোচ্চ আদালতের রায় আসায় দলটি আবারো রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পথে। এর ফলে আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীক ব্যবহার করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে দলটি।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, গত ৪ জুন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও প্রতীক প্রদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। ঈদের ছুটির আগে শেষ কর্মদিবস ছিল ওই দিন। এ জন্য নিবন্ধন গেজেট ওই দিন প্রকাশ করতে পারেনি। ছুটির পর যে দিন প্রথম অফিস খুলবে ওই দিনই নিবন্ধন গেজেট প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। তবে প্রতীক দিতে কিছুটা সময় লাগতে পারে।
জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আদালতের আদেশের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) আবুল ফজল মো: সানাউল্লাহ বলেছেন, প্রতীকের বিষয়টি আমরা বিবেচনায় নিয়েছি। একই প্রজ্ঞাপনে ২০০৮ সালে দলটিকে প্রতীকসহ নিবন্ধন দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রতীক কোনো দলকে দিলে আরপিও অনুযায়ী সেটি সেই দলের জন্য সংরক্ষিত থাকে। দলটি প্রতীকসহ নিবন্ধন পাবে।
আইনি ব্যাখ্যা দিয়ে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, গত ১ জুন আপিল বিভাগ ২০১৩ সালের হাইকোর্টের একটি রায়ের মাধ্যমে দলটির নিবন্ধন যে বাতিল করেছিল, সেটিকে পূর্বাপর অবস্থায় ফিরিয়ে দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। আদেশের কপি নির্বাচন কমিশনে পাঠাতে বলেছেন এবং ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। যে কারণে আমরা আলোচনা করেছি। অতিসত্বর জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধন ফিরে পাবে। পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামী তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে আমাদের কাছে একটি আবেদন করেছে। তারা চান তাদের দাঁড়িপাল্লা যে দলীয় প্রতীকটি ছিল সেটিও যেন ফেরত পান। আমরা এটা নিয়েও বিশদ আলোচনা করেছি। উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সাল থেকে নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আসছিল জামায়াত। ২০০৭ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের বিধান চালু করে। ২০০৮ সালে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকসহ নিবন্ধন পায় জামায়াতে ইসলামী।
নিবন্ধন ও দাঁড়িপাল্লা প্রতীক ফিরে পাবো বলে মন্তব্য করে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আযাদ বলেছেন, আমরা আশাবাদী যে, নিবন্ধন ও দাঁড়িপাল্লা প্রতীকই আমরা ফিরে পাবো।