গত ২৩ জুলাই প্যারিসে একটি প্রেস ক্লাবের ব্যানারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিতর্কিত অতিথি ও অংশগ্রহণকারীদের উপস্থিতিকে ঘিরে বাংলাদেশী কমিউনিটিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। পতিত ফ্যাসিবাদী চক্রকে সমাজে পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফ্রান্স-বাংলাদেশ জার্নালিস্ট অ্যসোসিয়েশন (এফবিজেএ) এক বিবৃতিতে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
অনুষ্ঠানে এক ব্যক্তিকে ‘প্রধান অতিথি’ এবং ‘মিডিয়া ব্যক্তিত্ব’ হিসেবে উপস্থাপন করা হলেও তার পেশাগত পরিচিতি ও সামাজিক সম্পৃক্ততা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। ফরাসি প্রবাসী সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী ও নাগরিক সমাজের সদস্যদের মতে, গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টতার কোনো গ্রহণযোগ্য প্রমাণ ছাড়াই এভাবে উপস্থাপন অনৈতিক এবং বিভ্রান্তিকর।
বিশেষ করে ২০২৪ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানে নিহত শিক্ষার্থীদের মৃত্যু ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট নানা বিতর্কের প্রেক্ষাপটে ওই অতিথির উপস্থিতি অনেকের কাছে বেদনাদায়ক স্মৃতি পুনরুজ্জীবিত করেছে। অনুষ্ঠানে আরো কয়েকজন বিতর্কিত অবস্থানধারী ব্যক্তির উপস্থিতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অনেকেই, যারা অতীতে বিভাজনমূলক রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় ছিলেন।
এফবিজেএ জানায়, অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা দু’জন সাংবাদিক পরে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন এবং কোনো ভুল বোঝাবুঝি থাকলে তা দূর করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। অ্যাসোসিয়েশন তাদের এই অবস্থানকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে।
বিবৃতিতে এফবিজেএ মনে করিয়ে দিয়েছে, ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে নিহত সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীদের পরিবার এখনো বিচারের অপেক্ষায় রয়েছে। এক বছরের মাথায় এমন সংবেদনশীল সময়ে গণ-আন্দোলনের প্রেক্ষাপট উপেক্ষা করে কোনো অনুষ্ঠানে বিতর্কিত ব্যক্তিদের উপস্থিতি সামাজিকভাবে অগ্রহণযোগ্য। এফবিজেএ আরো জানায়, সংগঠনটি সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার রক্ষায় সচেষ্ট এবং ফরাসি ও ইউরোপীয় গণমাধ্যমের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে।
সাংবাদিকদের এই সংগঠনটি সব রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনকে মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের পক্ষে সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছে। একই সাথে কমিউনিটির সব সদস্যকে অনুরোধ জানানো হয়েছে, যেন তারা এমন আয়োজন সম্পর্কে সচেতন থেকে সত্যভিত্তিক মূল্যায়নের মাধ্যমে অবস্থান গ্রহণ করেন।