জুবায়েরপন্থীদের ঘোষণা

বিশ্ব ইজতেমায় সুযোগ পাবেন না সাদপন্থীরা

Printed Edition

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিশ্ব ইজতেমার সময় পেছানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রতি বছর জানুয়ারিতে আয়োজন করা হলেও আগামী বছর বিশ্ব ইজতেমা শুরু হবে মার্চে।

মাওলানা মুহাম্মাদ জুবায়েরের অনুসারী জুবায়েরপন্থী বা শূরায়ি নেজাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়েছে, বিগত বছরগুলোতে দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হলেও আগামী বছর সেটি এক পর্বে হবে। যেখানে মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারী বা সাদপন্থীদের ইজতেমা আয়োজনের সুযোগ থাকবে না।

গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ইজতেমা আয়োজন বিষয়ে কথা বলেন তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ বা শূরায়ী নেজামের শীর্ষ নেতা হেফাজতে ইসলামের প্রচার সম্পাদক মুফতি কেফায়েতুল্লাহ আজহারি।

সাদপন্থীরা ইজতেমা আয়োজন করতে পারবেন কি না- এমন প্রশ্নে কেফায়েতুল্লাহ আজহারি বলেন, সরকারের কাছে লিখিত দিয়ে গতবার তারা শেষবারের মতো ইজতেমার আয়োজন করেছিল। সে ক্ষেত্রে তাদের আর ইজতেমা করার সুযোগ নেই। তা ছাড়া উল্লিখিত তিন দফা বাস্তবায়ন হলে আমরা বিশ্বাস করি, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।

যদিও গত রোববার (২ নভেম্বর) তাবলিগের বিবদমান দু’পক্ষের সাথে বৈঠক শেষে ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন জানিয়েছেন, আগামী বছর তাবলিগ জামাতের দু’পক্ষের আয়োজনে আলাদা আলাদা বিশ্ব ইজতেমা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর অনুষ্ঠিত হবে। ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা দুই গ্রুপকে নিয়ে আসন্ন ইজতেমার বিষয়ে আলোচনা করেছি। খুবই পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা হয়েছে। যেহেতু সামনে নির্বাচন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন নিয়ে এখন ব্যস্ত, নির্বাচনের আমেজ শুরু হয়েছে। ইজতেমা করতে গেলে অনেক মানুষের সমাগম, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জড়িত থাকার বিষয় আছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ইজতেমা হবে ইলেকশনের পর।

এ দিকে সংবাদ সম্মেলনে মুফতি কেফায়েতুল্লাহ বলেছেন, তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ তাবলিগি এ মেহনতকে দ্বীনি মেহনত হিসেবে বিশ্বাস করে। দ্বীনি কাজের অংশ হিসেবে বর্তমান সরকারের অনুরোধ শ্রদ্ধার সাথে গ্রহণ করে আমরা আগামী বিশ্ব ইজতেমা মার্চে আয়োজনের বিষয়ে একমত হয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি, এ সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে সরকারের প্রতি সহযোগিতার শামিল।

বিশ্ব ইজতেমা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তিনটি অনুরোধ তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো- ১. আগামী ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের আগেই ইজতেমার দিন-তারিখ ঘোষণা এবং সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম শুরুর জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোকে অবহিত করা। ২. ইজতেমা যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা ময়দানকে অস্থায়ীভাবে কেপিআই (কি পয়েন্ট ইন্সটলেশন) হিসেবে ঘোষণা। ৩. ইজতেমায় সারা বিশ্ব থেকে আসা বিদেশী অতিথিদের সময়মতো উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ভিসা সহজীকরণ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মুফতি আমানুল হক, মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ, অ্যাডভোকেট মতিন উদ্দিন আনোয়ার, রুহুল আমিন ও তাবলীগ জামাত বাংলাদেশ শূরায়ী নেজামের মিডিয়া সমন্বয় হাবিবুল্লাহ রায়হান।